প্রশ্নপত্র ফাঁসের কোন ধরণের অভিযোগ ছাড়াই অষ্টম শ্রেণির জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষা শুরু হয়েছে। এ পরীক্ষায় প্রথম দিনে বাংলা পরীক্ষায় ৮ শিক্ষা বোর্ডে ৪৩ হাজার ৬৪২ পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিল। এদিন বহিষ্কার হয়েছে ১৭ পরীক্ষার্থী।
এদিকে প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ না ওঠায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। তিনি প্রশ্ন ফাঁসের ভুয়া খবর প্রচার না করতে গণমাধ্যমকর্মীদের অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আমরা যা যা ব্যবস্থা নেওয়ার নিয়েছি। গত এইচএসসি পরীক্ষায় কেউ সন্দেহের কথাও শোনেননি, এবারও সেই রকম প্রশ্ন কেউ তোলেননি, কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’
শিক্ষামন্ত্রী এই পরীক্ষার প্রথমদিন ঢাকার মতিঝিল সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় এবং মতিঝিল সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে জেএসসির কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে এ বিষয়ে কথা বলেন।
মন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মিলে প্রশ্ন ফাঁস ঠেকাতে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে। আগ বাড়িয়ে আপনারা (গণমাধ্যমকর্মী) দয়া করে প্রমাণ ছাড়া কেউ বলবেন না, ছেলেমেয়ে আপনাদের সকলের, বিভ্রান্ত করবেন না। অনুরোধ করি ভুয়া বিষয়গুলো যেন প্রচার না হয়, তাহলে একটা সুযোগ পেয়ে যায়, তখন পাঁচজনে বলে।’
পরীক্ষায় শিক্ষার্থী বাড়ছে আর ঝরে পড়ার হার কমছে উল্লেখ করে নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, ‘সব বাচ্চাদের স্কুলে নিয়ে আসার জন্য ১০ বছর আগে এই পরীক্ষার উদ্যোগ নিয়েছি। প্রথম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত সব ধরনের শিক্ষায় বই দেওয়া এবং ৪০ শতাংশ ছেলেমেয়ের বৃত্তি দেওয়ার পাশাপাশি মানুষের সচেতনতাও বাড়ছে। ফলে শিক্ষার্থী বাড়ছে আর ঝরে পড়া কমছে।’
শিক্ষার্থীর পরিসংখ্যান তুলে ধরে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘এবছর মোট ২৬ লাখ ৭০ হাজার ৩৩৩ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। গত বছর পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিলো ২৪ লাখ ৬৮ হাজার ৮২০ জন। তার মানে, এক বছরে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে দুই লাখ এক হাজার ৫১৩ জন। অর্থাৎ ঝরে পড়া কমছে, শিক্ষার্থীরা এগিয়ে আসছে।’
বহিস্কার ও অনুপস্থিত:
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ কক্ষের তথ্য অনুযায়ী, ঢাকা বোর্ডে অনুপস্থিত ছিল ১৪ হাজার ১৩১ জন, চট্টগ্রামে তিন হাজার ১৯৬, রাজশাহীতে পাঁচ হাজার ২৯৩, বরিশালে তিন হাজার ২৫৬ , সিলেটে দুই হাজার ৯৮৬, দিনাজপুরে পাঁচ হাজার ৫৬৬, কুমিল্লায় চার হাজার ৩৫৪ এবং যশোরে চার হাজার ৮৬০ পরীক্ষার্থী।
আর এই পরীক্ষার প্রথম দিনে ঢাকা বোর্ডে বহিষ্কার হয়েছে ৬ জন, বরিশালে ৮, কুমিল্লায় ২ এবং দিনাজপুর বোর্ডে একজন পরীক্ষার্থী।
দেশের দুই হাজার ৯০৩টি কেন্দ্রে একযোগে শুরু হয়েছে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষা। দেশের ২৯ হাজার ৬৭৭টি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী এই পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। পরীক্ষা চলবে আগামী ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত।