লিবিয়ার এক সময়ের প্রভাবশালী নেতা ছিলেন মুয়াম্মার গাদ্দাফি। ১৯৬৯ সালে এক সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা গ্রহণের পর চার দশকেরও বেশি সময় দেশটির কর্তৃত্ব ছিল তার হাতে। দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়ন হয়েছে তার সময়ে। তবে একইভাবে দীর্ঘ সময় একনায়কতান্ত্রিক ও কর্তৃত্ববাদী শাসনের কারণে নিন্দিতও ছিলেন তিনি। যে কারণে আরব বসন্তের হাওয়া যখন লেগেছিল তখন গাদ্দাফি সরকারের বিরুদ্ধেও শুরু হয় বিদ্রোহ। ন্যাটো বাহিনীর সহায়তায় বিদ্রোহীরা শেষ পর্যন্ত গাদ্দাফির পতন ঘটাতে সক্ষম হয়। পরে তিনি বিদ্রোহীদের হামলায় নিহত হন।
মুয়াম্মার গাদ্দাফির উত্তরসূরি হিসেবে একসময় তার ছেলে সাইফ আল-ইসলামকে চিন্তা করা হতো। কিন্তু গাদ্দাফি নিহত হওয়ার পর তাকে জেলে যেতে হয়েছিল। কারাগারে থাকা অবস্থায় মৃত্যুদণ্ডও হয়েছিল গাদ্দাফি পুত্রের। তবে গত বছরের জুনে সাধারণ ক্ষমার আওতায় তিনি কারাগার থেকে মুক্তি পান। বর্তমানে লিবিয়াতেই তিনি আছেন বলে সংশ্লিষ্টদের দাবি। কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর চলতি বছর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতার ঘোষণা দিয়েছেন গাদ্দাফিপুত্র সাইফ। গত সপ্তাহে তিনউনিসিয়ায় এক সংবাদ সম্মেলনে এমনটিই জানিয়েছেন তার মুখপাত্র আয়মান।
গাদ্দাফিপুত্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়াইয়ের ঘোষণায় দেশটিতে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অনেকে রাজনীতিতে তার প্রত্যাবর্তনের ঘোষণাকে বিপ্লব পরিপন্থি হিসেবে ঘোষণা করছেন। তবে দেশটির একটি অংশ যে সাইফের রাজনীতিতে ফেরাটাকে স্বাগত জানাবেন সেকথাও স্বীকার করছেন রাজনীতি বিশ্লেষকরা। কারণ ২০১১ সালে গাদ্দাফি নিহত হওয়ার পরও উপজাতি অধ্যুষিত দেশটিতে এখন অনেক গোত্র গাদ্দাফির সময়কে সমর্থন করেন।
ত্রিপলি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফৌজদারী আইনের শিক্ষক মোহাম্মদ বারা অবশ্য মনে করেন, ২০১৫ সালে যুদ্ধাপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত গাদ্দাফিপুত্রকে নির্বাচনে অংশ নিতে হলে আগে আদালতে আত্মসমর্পণ করতে হবে। এরপর আদালতই সিদ্ধান্ত দেবেন সাধারণ ক্ষমার আওতায় তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন কি না।