মিয়ানমারের নিপীড়িত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মানুষকে আশ্রয় দেওয়ায় বাংলাদেশের মানবিকতাবোধ ও উদারতার ব্যাপক প্রশংসা করেছে জাতিসংঘ। বুধবার (৪ অক্টোবর) পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলীর সঙ্গে তার কার্যালয়ে সাক্ষাতের পর জাতিসংঘের মানবিক সহায়তাবিষয়ক সমন্বয়কারীর কার্যালয় ওসিএইচএ’র উপ মহাসচিব মার্ক লৌকক এবং ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক অ্যান্থনি লেক যৌথভাবে এ প্রশংসা করেন। মানবিক সহায়তার ক্রমবর্ধমাণ চাহিদা মেটাতে জাতিসংঘ তহবিল সংগ্রহের উদ্যোগ নিয়েছে বলেও জানিয়েছে তারা।
ওসিএইচএ এবং ইউনিসেফ এর প্রধান দুইজনই সম্প্রতি কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবিরগুলো পরিদর্শন করে ফিরেছেন। বুধবার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন তারা। নিপীড়িত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ায় বাংলাদেশের সরকার ও জনগণকে ধন্যবাদ জানান জাতিসংঘের এ দুই শীর্ষ কর্মকর্তা। পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাদেরকে বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত জানান।
২৫ আগস্ট নিরাপত্তা বাহিনীর চেকপোস্টে বিদ্রোহীদের হামলার পর ক্লিয়ারেন্স অপারেশন জোরদার করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। তখন থেকেই মিলতে থাকে বেসামরিক নিধনযজ্ঞের আলামত। সহিংসতা থেকে বাঁচতে তখন থেকে পাঁচ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আসে। বাংলাদেশের তরফ থেকে তাদের আশ্রয় নিশ্চিত করা হয়। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, মাত্র এক মাসে ৫ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসেছে। বর্তমানে অবস্থানরত ৯ লাখ রোহিঙ্গার গুরুতর মানবিক বিপর্যয় রোধে বাংলাদেশ চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে বলেও উল্লেখ করে তিনি।
মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টার দফতর মন্ত্রী টিন্ট সোয়ের সাম্প্রতিক বাংলাদেশ সফরের প্রসঙ্গ টেনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী তাদের বলেন, বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের নিরাপদে মিয়ানমারে ফেরা নিশ্চিত করার ওপর জোর দিয়েছে। তিনি আরও জানান মিয়ানমারের মন্ত্রী বাংলাদেশে আশ্রয়রত সেদেশের নাগরিকদের ফিরিয়ে নেওয়ার আগ্রহের কথা জানিয়েছে। রোহিঙ্গাদের নিরাপদে দেশে ফেরা নিশ্চিত করতে জাতিসংঘেরও সহায়তা চেয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। গঠনমূলক আলোচনার জন্য ইউনিসেফ প্রধান ও চার উপ মহাসচিবকে ধন্যবাদ জানান তিনি।