সৌদি আরবের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে আরও বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার সকালে রিয়াদে কিং সৌদ প্যালেসে সৌদি ব্যবসায়ীদের সাথে এক বৈঠকে এ আহ্বান জানান তিনি। অনুষ্ঠানে কাউন্সিল অব সৌদি চেম্বারের (সিএসসি) নেতৃবৃন্দ, রিয়াদ চেম্বার অব কমার্সের নেতৃবৃন্দ ও বাংলাদেশের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলের সদস্যরা ছিলেন।
বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে ‘অসাধারণ’ বর্ণনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা সাধারণ বিশ্বাস, সংস্কৃতি, মান এবং আকাঙ্ক্ষার উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছে।
২০১৭-১৮ অর্থবছরে দুদেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ এক বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সুযোগগুলোকে পুরোপুরি কাজে লাগানোর ক্ষেত্রে অনেক পিছিয়ে আছি।’
বাংলাদেশে ২৫টি প্রকল্পে পাঁচ বিলিয়ন ডলার সৌদি বিনিয়োগের কথা মনে করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মূলত কৃষিভিত্তিক শিল্প, খাদ্য ও প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, বস্ত্র ও পোশাক, চামড়া, পেট্রো-রাসায়নিক, প্রকৌশল ও সেবা খাতে সৌদি বিনিয়োগ আসছে।
২০১৮ সালের মার্চে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে পদার্পন করার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০২১ সালের মধ্যে আমরা উন্নয়নশীল দেশ হবো এবং ২০৪১ সালের মধ্যে আমরা উন্নত দেশ হবো।’
আগামী বছরে প্রবৃদ্ধি ৮ দশমিক ২৫ শতাংশ হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।
২০০৮-০৯ সাল থেকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নয় গুণ বেড়ে ২০১৮ সালে ৩৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে।
তথ্য-প্রযুক্তি খাতে উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক রূপান্তরকে দ্রুততর করছে। বর্তমানে বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তর তৈরি পোশাক রফতানিকারক দেশ। গত অর্থবছরে ৩০ দশমিক ৬৫১ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রফতানি করেছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ এখন সবজি উৎপাদনে তৃতীয় বৃহত্তম এবং ধান উৎপাদনে চতুর্থ বৃহত্তম এবং মৎস্য উৎপাদনকারী বিশ্বে তৃতীয় উৎপাদনকারী দেশ। এছাড়া ওষুধ শিল্প বাংলাদেশের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলোর মধ্যে একটি। এই খাত থেকে স্থানীয় চাহিদার ৯৮ শতাংশ চাহিদা পূরণ হচ্ছে এবং প্রায় ১২৫টি দেশে রফতানি হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন বাস্তবতা। ইন্টারনেটভিত্তিক পাবলিক সার্ভিস ডেলিভারি ব্যাপক অবদানের জন্য তৃণমূল পর্যায়ে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে। সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় দ্রুত ও সহজে সেবা দেওয়ার জন্য আমরা তথ্য-প্রযুক্তি অবকাঠামো তৈরি করেছি।
দেশে ১৫ কোটিরও বেশি সিম ব্যবহার এবং ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের সংখ্যা নয় কোটি ছাড়িয়ে গেছে বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের কথাও বলেন তিনি।
বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২০ হাজার মেগাওয়াটে বৃদ্ধি পাওয়ার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাজ শুরু করার পর আমরা পরমাণু শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহারে এক ধাপ এগিয়ে চলেছি।”