বাংলাদেশের ৭৮ শতাংশেরও বেশি নারী প্রযুক্তিভিত্তিক সহিংসতার শিকার বলে নেটজ (NETZ) বাংলাদেশের একটি নতুন গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে। সমীক্ষায় দেখা গেছে সহিংসতার এই ঘটনাগুলোর ৭৮.৪ শতাংশ ফেসবুকে ঘটেছে এবং ২৮ শতাংশ হোয়াটসঅ্যাপ ও ইমোর মতো মেসেজিং পরিষেবার মাধ্যমে ঘটেছে।
গতকাল ডেইলি স্টার সেন্টারে ‘টুওয়ার্ডস সেফার ডিজিটাল স্পেস’ শীর্ষক এক গোলটেবিল আলোচনায় এই বিষয়গুলি উপস্থাপন করা হয়। দ্য ডেইলি স্টার এবং নেটজ যৌথভাবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
গোলটেবিল আলোচনায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের যুগ্ম পুলিশ কমিশনার তাহেরুল হক চৌহান ইন্টারনেটের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহারের ঝুঁকির কথা তুলে ধরে বলেন, বর্তমান প্রজন্ম প্রায়শই সম্ভাব্য পরিণতির কথা পুরোপুরি চিন্তা না করে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে সস্তা জনপ্রিয়তা পাওয়ার জন্য নিজেদের ব্যক্তিগত কার্যকলাপ শেয়ার করে থাকে। কোন কোন ক্ষেত্রে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে তারা অন্তরঙ্গ বা অনুপযুক্ত কনটেন্ট আপলোড করে থাকে। যা পরবর্তীতে তাদের জন্য মারাত্মক বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যার জন্য তাদের আরও বেশি সচেতনতা প্রয়োজন।
যুগ্ম পুলিশ কমিশনার তাহেরুল হক চৌহান আরো বলেন, সাইবার বুলিংয়ের জন্য অনেকসময় ব্ল্যাকমেইলের শিকার হতে হয়। অপরাধীরা প্রায়শই আর্থিক লাভের জন্য নারীদেরকে লক্ষ্যবস্তু করে। সাইবার প্রতারণার শিকার কিশোর-কিশোরীদের মাঝে আত্মহত্যার ঝুঁকি বাড়ছে। প্রত্যেকের জন্য একটি নিরাপদ সাইবারস্পেস তৈরি করতে হবে। এজন্য বিদ্যমান আইন ও নীতিগুলোর সংস্কার করা অপরিহার্য।
আইসিটি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব এবং জাতীয় সাইবার সিকিউরিটি এজেন্সির মহাপরিচালক আবু সাঈদ মো. কামরুজ্জমান তরুণ প্রজন্মের মধ্যে সামাজিক মূল্যবোধ, আদর্শ ও নৈতিক শিক্ষা জোরদার করার উপর গুরুত্ব দেন।
তিনি বলেন, অভিভাবকদের আরও সতর্ক হতে হবে। শিক্ষার কথা বলে শিশুদের হাতে স্মার্টফোন দেওয়া হচ্ছে, তবে সন্তানরা যে অ্যাপগুলো ব্যবহার করে তা পর্যবেক্ষণ করা পিতামাতার দায়িত্ব।
এমওডব্লিউসিএ-র মহিলা বিষয়ক বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক (উপ-সচিব) মো. মনির হোসেন; উই ক্যান-এর প্রধান নির্বাহী জিনাত আরা; ব্র্যাকের জেন্ডার, জাস্টিস অ্যান্ড ডাইভারসিটি প্রোগ্রামের প্রধান মাসুমা বিল্লাহ; প্ল্যান ইন্টারন্যাশনালের ডাইরেক্টর অব ইনফ্লুয়েন্সিং, ক্যাম্পিং অ্যান্ড কমিউনিকেশন নিশাত সুলতানা এবং এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড জেন্ডার এক্সপার্ট হাসনে আরা বেগম অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।