বেশ কয়েক বছর আগে থেকেই সৌরশক্তি ব্যবহার করে ট্রেন চালানোর প্রযুক্তি আবিষ্কার করেছেন বিজ্ঞানীরা। এর জন্য তাদের তৈরি করতে হয়েছে সোলার টানেল। এতে একদিকে জ্বালানির ওপর চাপ কমেছে অন্যদিকে তা পরিবেশের আশীর্বাদ হিসেবে দেখা দিয়েছে। সর্বপ্রথম বেলজিয়াম রেল ব্যবস্থায় সৌরশক্তি ব্যবহার করলেও এখন ভারতসহ অনেক দেশই এই প্রযুক্তির দিকে এগুচ্ছে। আশার কথা হলো, সৌরশক্তির পর বিজ্ঞানীরা এবার বাতাস দিয়েও ট্রেন চালানোর প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। বিশ্বের অনেক দেশেই গণপরিবহনের খরচ মেটাতে যেখানে সরকারকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অর্থ ব্যয় করতে হয় সেখানে জ্বালানির উত্স হিসেবে বাতাসকে কাজে লাগাতে পারলে তা হবে দারুণ এক ঘটনা। বাতাস দিয়ে ট্রেন চালানোর এই মিশনে ইতিমধ্যে সাফল্য অর্জন করেছে নেদারল্যান্ডস। জানুয়ারি থেকে বাতাস থেকে উত্পাদিত বিদ্যুত্ দিয়ে ট্রেন চালানোর কার্যক্রম শুরু হয়েছে দেশটিতে। ২০১৮ সালের মধ্যে দেশটির পুরো রেল ব্যবস্থায় নবায়নযোগ্য বাতাসের শক্তি ব্যবহারের আশাবাদ ব্যক্ত করেছে নেদারল্যান্ডস।
দেশটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দেশটিতে সব মিলিয়ে বিদ্যুত্ উত্পাদনের জন্য ২২০০টি টার্বাইন রয়েছে। প্রায় সাড়ে চব্বিশ লাখ বাড়িতে বিদ্যুত্ সরবরাহের সক্ষমতা রয়েছে এই উইন্ডমিলগুলোর। দেশের পুরো রেল ব্যবস্থার জন্য বছরে ১ দশমিক ২ বিলিয়ন কিলোওয়াট ঘণ্টা বিদ্যুতের প্রয়োজন। আর প্রয়োজনীয় বিদ্যুতের পুরোটাই তারা উত্পাদন করতে চাইছে এই উইন্ডমিলগুলো থেকে। নেদারল্যান্ডসের টেকসই জ্বালানি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান এনোকোর সাথে ইতিমধ্যে এ সংক্রান্ত চুক্তি করেছে দেশটির রেল বিভাগ। এটি করা সম্ভব হলে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ অনেকটা কমিয়ে আনা সম্ভব হবে।
নেদারল্যান্ডসের মতো সবুজ জ্বালানির জন্য কাজ করছে স্কটল্যান্ডও। স্কটল্যান্ডের পক্ষ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে ২০২০ সালের মধ্যে শতভাগ ‘জিরো কার্বন’ লক্ষ্যে এগুচ্ছে স্কটল্যান্ড। পিছিয়ে নেই আমেরিকাও। আমেরিকান উইন্ড এনার্জি অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দেশটিতে অর্ধলক্ষাধিক টার্বাইন স্থাপনের লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
গণপরিবহন সেবায় অনেক দেশ নবায়নযোগ্য সবুজ জ্বালানির ঘোষণা দিয়ে আসলেও এদিক দিয়ে সবাইকে ছাড়িয়ে গেছে নেদারল্যান্ডস। তাদের জন্য এটি এখন আর কোনো কল্প কাহিনী নয়। ২০১৮ সাল থেকে পুরো রেল ব্যবস্থা পরিচালনা করতে বাতাস থেকে বিদ্যুত্ উত্পাদন করতে পারলে তা হবে যুগান্তকারী এক মাইলফলক।