শেষ রক্ষা হল না। বিরাট ব্যবধানে ভোটে হেরে শেষমেশ ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীর ‘স্বপ্নের’ ব্রেক্সিট চুক্তি খারিজ হয়ে গেল হাউস অব পার্লামেন্টে। ফল দেখে মে বলেন, “হাউস যা বলেছে, সরকার তাই শুনল।”
হাউস কী বলল? মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ব্রেক্সিট নিয়ে দীর্ঘ আলোচনার পর ভোটাভুটিতে যায় শাসক-বিরোধী দু’পক্ষের এমপি-রা। দেখা গিয়েছে, ২৩০ ভোটের বিশাল ব্যবধানে হার হয় টেরেসা মে-র। কার্যত পার্লামেন্টে কোণঠাসা হয়ে পড়েন তিনি। তাঁর দল কনজ়ারভেটিভ পার্টির কমপক্ষে শ’খানেক এমপি টেরেসা মে-র বিরোধিতা করে ব্রেক্সিটের বিপক্ষে ভোট দেন। ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময়সীমা আর মাত্র ৭৩ দিন বাকি। আগামী ২৯ মার্চের মধ্যে চূড়ান্ত ফয়সলা করতে হবে ব্রিটেনকে। কিন্তু এ দিনের ঐতিহাসিক ঘটনায় আরও জটিলতার মুখে পড়ল ব্রিটেনের রাজনৈতিক পরিস্থিতি। যার জেরে সন্দিহান সে দেশের নাগরিকরাও।
এর পর কী হতে চলছে ব্রিটেনে? এখন সে দিকেই তাকিয়ে গোটা বিশ্ব। বিশেষজ্ঞদের মতে, চুক্তিহীন ব্রেক্সিটের পথে গেলে আর্থিক ক্ষতি বিপুল পরিমাণে হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে ব্রিটেনের। ইউরোপীয় ইউনিয়ন দেশগুলিতে থাকা ব্রিটেনের কোম্পানিগুলি কী নীতিনির্ধারণ হওয়া উচিত, তা নিয়ে এখনও পর্যন্ত স্পষ্ট নয়। সে সব দেশের ব্রিটেনের অভিবাসীরা কর্মরত, তাঁদের ভাগ্য অনিশ্চিয়তার মধ্যে পড়তে পারে। এ সব সমস্যার মোকাবিলা করে ব্রেক্সিট থেকে বেরিয়ে আসার জন্য টেরেসা মে-রা এখনও প্রস্তুত নয় বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
ব্রেক্সিট চুক্তি নাকচ হয়ে যাওয়ার পর টেরেসা মে-র সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনেন লেবার পার্টির নেতা জেরমি কেবিন। ভোটে জিততে না পারলে ১৪ দিনের মধ্য ফের নতুন করে সরকার গঠনের সময় পাবে কনজ়ারভেটিভ সরকার। তা ব্যর্থ হলে সাধারণ নির্বাচনের পথে যেতে হবে ব্রিটেনকে। তবে, ব্রিটেনের পরবর্তী নির্বাচন ২০২২ সালে। নিজের দলের অনেক এমপি টেরেসা মে-র পাশে না থাকলেও এই মুহূর্তে সমর্থন পেয়েছে নর্দান আয়ারল্যান্ডের ডেমোক্র্যাটিক ইউনিয়নিস্ট পার্টির এমপি-দের। ব্রেকিস্ট ব্যর্থ হলে টেরেসা মে-র পদত্যাগ কিংবা ফের গণভোটের সাক্ষী হতে পারেন সে দেশের নাগরিকরা এমনটাই আশঙ্কা রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।