বিদ্যুৎ সংকটের কারণে উদ্ভূত বিক্ষোভের মুখে ইরাকের বিদ্যুৎমন্ত্রীকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী হায়দার আল আবাদি। প্রধানমন্ত্রীর দফতরের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এ সংক্রান্ত তদন্ত সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত বিদ্যুৎমন্ত্রী বরখাস্ত অবস্থায় থাকবেন। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম রয়টার্স।
২০১৪ সালে ইরাকের বিদ্যুৎমন্ত্রীর দায়িত্ব পান আনবার প্রদেশের সাবেক গভর্নর আল ফাহদাওয়ি। কিন্তু তার মেয়াদকালে সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানে তীব্র বিদ্যুৎ সংকট দেখা দেয়। প্রতিবাদে রাস্তায় নামেন বিক্ষোভকারীরা। বিদ্যুৎ সংকট এবং উচ্চমাত্রার বেকারত্বের বিরুদ্ধে স্লোগান তোলেন তারা। দক্ষিণাঞ্চলীয় বাসরা শহর থেকে শুরু হওয়া এ বিক্ষোভ রাজধানী বাগদাদসহ দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। বিদ্যুৎমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি জানান বিক্ষোভকারীরা।
এক পর্যায়ে বিক্ষোভরতদের ওপর চড়াও হয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। বাসরা প্রদেশে আন্দোলনের সময় একটি তেলখনিতে হামলার চেষ্টা করায় বিক্ষোভকারীদের জোরপূর্বক ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়।
বিক্ষোভকারীরা বাসরার পশ্চিম কুরনা-২ তেলখনিতে হামলার চেষ্টা চালায়। রাশিয়ার জ্বালানি কোম্পানি লুকোইল পরিচালিত পশ্চিম কুরনা-২ তেলখনিটি ইরাকের অন্যতম বড় তেলখনি। বর্তমানে প্রতিদিন খনিটি থেকে চার লাখ ব্যারেল তেল উত্তোলন করা হয়ে থাকে।
উচ্চমাত্রার বেকারত্ব ও ঘন ঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাটের প্রতিবাদে দেশজুড়ে বিক্ষোভের সময় অন্তত ১৪ বিক্ষোভকারীর মৃত্যুর পর সারাদেশে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
বাসরা প্রদেশে থেকে ইরাকের প্রায় ৮০ শতাংশ অপরিশোধিত উত্তোলন করা হয়। স্থানীয়দের অভিযোগ, এসব তেলখনিতে স্থানীয় লোকজনের পরিবর্তে বিদেশিদের বেশি চাকরি দেওয়া হয়। এছাড়া গ্রীষ্মকালের প্রচণ্ড গরমের মধ্যে সেখানে ঘন ঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে লোকজনকে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। এ বছর গ্রীষ্মকালে সেখানে তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত উঠেছে।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে বিদ্যুৎমন্ত্রীকে বরখাস্তের এ ঘোষণা দেওয়া হয়।