বিনম্র শ্রদ্ধায় অবনত
জয়িতা শিল্পী
একটি বক্তৃতামঞ্চ। একটি শোকসভা।
একজন উচ্চারণ করলেন পনেরই আগস্ট,
তিনি একটু থামলেন
তার কন্ঠস্বর আটকে যাচ্ছিল
তৎক্ষনাৎ দর্শক সারি থেকে সমস্বরে উচ্চারিত হলো
সাল উনিশশ’ পঁচাত্তর।
সেদিন থমকে গিয়েছিল বাংলাদেশ
বাকরুদ্ধ জনতা, বিচলিত মানচিত্র
বিচলিত পদ্মা মেঘনা গৌরী যমুনা
বিচলিত টুঙ্গীপাড়া, ধানমন্ডি ৩২, রাজধানী ঢাকা।
দর্শক সারি থেকে আবার ধ্বনিত হলো
না-না-না এ অসম্ভব আমরা মানিনা
তুমি কাপুরুষ, তুমি মিথ্যেবাদী-
জাতির জনক নেই এ হতে পারেনা।
কি কলঙ্ক তুমি এঁকেদিলে হতভাগ্য বাঙালি
পিতার বুকে চালালে গুলি নৃশংস
বঙ্গসন্তানকে করলে মাতৃহারা
মুছে দিলে শিশু রাসেলের মায়াবি হাসি
দর্শক সারিতে আবার গুঞ্জন, ক্রোধের আগুন
আহ্ এত রক্তের বন্যা!
হার মানে বঙ্গোপসাগর
আকাশে বাতাসে অশ্রু বৃষ্টি
শুধু অশ্রু নয় ঝরে রক্ত। লাল টকটকে রক্ত-
পিতার বুক থেকে।
কি পাষন্ড তুমি, তোমার চোখে অশ্রু নেই
তুমি উন্মাদ, কঠিন পাথর
কাঁদো বাঙ্গালি কাঁদো। বইয়ে দাও রক্তগঙ্গা
তোমার পিতার ঋণ-পারবে কি শুধিতে কোনদিন ?
দর্শক সারি এবার নিস্তব্ধ, নিশ্চুপ, বিনম্র শ্রদ্ধায় অবনত।