ডিএমপি নিউজঃ আজ ১ লা জুলাই। ২০১৬ সালের এই দিনে রাজধানীর গুলশানের হলি আর্টিসান বেকারিতে সন্ত্রাসী হামলা করে চালানো হয় নৃশংস হত্যাযজ্ঞ। এতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের দুই জন অফিসার ও দেশি-বিদেশী ২০ জন নাগরিক নিহত হন।
হলি আর্টিসান বেকারিতে জঙ্গি হামলা প্রতিরোধে জীবন উৎসর্গকারী পুলিশ সদস্যদের স্মরণে বিনম্র শ্রদ্ধায় উদ্বোধন হল ‘দীপ্ত শপথ’ ভাস্কর্য। আজ সকাল সাড়ে ১০টায় ডিএমপি কমিশনার মোঃ আছাদুজ্জামান মিয়া বিপিএম (বার), পিপিএম গুলশান পুরাতন থানার সামনে ‘দীপ্ত শপথ’ ভাস্কর্যটি উদ্বোধন করেন।
হলি আর্টিসান বেকারিতে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত ডিএমপি’র ডিবি’র সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার মোঃ রবিউল ইসলাম ও তৎকালীন বনানী থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ সালাহউদ্দিন খান এর মুখাবয়বে এই ভাস্কর্যটি নির্মাণ করা হয়েছে। ভাস্কর্যটি নির্মাণ করেছেন বিশিষ্ট ভাস্কর মৃণাল হক।
‘দীপ্ত শপথ’ ভাস্কর্যটি উদ্বোধন শেষে কমিশনার বলেন, ‘২০১৬ সালের এই দিনে হলি আর্টিসান বেকারিতে চালানো সন্ত্রাসী হামলা জীবন দিয়ে প্রতিরোধ করেছিল এসি রবিউল ও ওসি সালাহউদ্দিন। তাদের স্মরণে ‘দীপ্ত শপথ’ ভাস্কর্যটি উদ্বোধন করা হল। তাদের মারা যাওয়ার শোককে আমরা শক্তিতে রুপান্তর করেছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আমরা জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে নাগরিক ঐক্যবদ্ধ গড়ে তুলেছিলাম। আমাদের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট সারাদেশে সফলভাবে ছোট-বড় ৭০টি জঙ্গি বিরোধী অভিযান করেছে। জঙ্গিবাদ একটি বৈশ্বিক সমস্যা। আমরা পেশাদারিত্বের সাথে জীবন বাজি রেখে জঙ্গিবাদ মোকাবেলা করেছি।’
হলি আর্টিসান মামলার তদন্ত সম্পর্কে কমিশনার বলেন, হলি আর্টিসান বেকারিতে সন্ত্রাসী হামলা বাংলাদেশে একটি বড় ঘটনা। আমরা এই মামলার রহস্য উন্মোচন করেছি। মামলার অধিকাংশ আসামী জঙ্গি বিরোধী অভিযানে নিহত হয়েছে। আর এই ঘটনার পেছনে যারা রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে চলতি সপ্তাহে চার্জশীট দেয়া হবে।
ঘটনাস্থল রেখে গুলশান থানার পুরাতন জায়গায় স্মৃতিস্তম্ভ করার কারণ জানতে চাইলে কমিশনার বলেন, হলি আর্টিসান বেকারিটি ব্যক্তি মালিকানাধীন জায়গা হওয়ায় স্মৃতিস্তম্ভটি গুলশান থানার পুরাতন জায়গায় করা হয়েছে। যাতে করে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম হলি আর্টিসান বেকারিতে সন্ত্রাসী হামলা প্রতিরোধ করতে গিয়ে জীবন উৎসর্গকারী পুলিশ সদস্যদের সম্পর্কে জানতে পারে।
উদ্বোধন শেষে স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান ডিএমপি কমিশনার। এ সময় এক মিনিট নিরবতা পালন ও বিউগলের সুরে সশস্ত্র সালামের মধ্য দিয়ে নিহতদের স্মরণ করা হয়।
এরপর একে একে বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ পুলিশ এসোসিয়েশন, নিহতদের পরিবার, গুলশান বিভাগের পুলিশ, ডিপ্লোমেটিক সিকিউরিটি বিভাগ, ডিবি, গুলশান-বনানী-বারিধারা সোসাইটি, থানা কমিউনিটি পুলিশ, রাজনৈতিক-সামাজিক- ব্যবসায়িক ব্যক্তিবর্গসহ বিভিন্ন স্তরের সাধারণ জনগণ ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
এর আগে সকালে হলি আর্টিসান বেকারিতে নিহতদের স্মরণে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন ডিএমপি কমিশনার ও বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস এসোসিয়েশনের সদস্যবৃন্দ। এছাড়াও ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান জাপান, ইটালি ও অস্ট্রেলিয়ার রাষ্ট্রদূতগণ।