‘২০৪১ সালে আমরা উন্নত দেশে উন্নীত হবো’ জানিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, চলতি বছরই বিশ্ব অর্থনীতির ৪০তম দেশ হবে বাংলাদেশ। বর্তমানে আমরা ৪৩তম অবস্থানে আছি। বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছে। পাশাপাশি উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ায় আমাদের এখন ঋণ সংগ্রহ অনেকটা সহজ হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
বুধবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন মন্ত্রী। স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি পাওয়া উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়।
পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, গরিব দেশ হওয়ার যন্ত্রণা থেকে আমরা মুক্ত হয়েছি। স্বাধীনতার তিন বছরের মধ্যে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকায় উঠেছিল বাংলাদেশ। সেখানে ৪৩ বছর পর আমরা উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি পেলাম। হয়তো আমাদের এখানে আসতে অন্য দেশের তুলনায় সময় বেশি লেগেছে। কিন্তু এখন আমরা খুব দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়ন করব। কারণ আমাদের কর্মক্ষম জনসংখ্যা বেশি। ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ডে আমরা সব দেশ থেকে এগিয়ে। আমাদের মতো কর্মক্ষম জনবল কোনো দেশে নেই। যেটা আমরা ধরে রাখতে পারব ২০৬১ সাল পর্যন্ত।
মন্ত্রী বলেন, উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় স্থান করে নিতে মাথাপিছু আয়, মানবসম্পদ সূচক এবং অর্থনৈতিক ভঙুরতা সূচক-এ তিনটির যে কোনো দুটি অর্জন করতে পারলেই স্বীকৃতি মেলে। জাতিসংঘের অর্থনৈতিক এবং সামাজিক কাউন্সিলের মানদন্ডে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হতে একটি দেশের মাথাপিছু আয় হতে হবে কমপক্ষে ১২৩০ ডলার। সেখানে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ১২৭১। মানবসম্পদ সূচকে প্রয়োজন ৬৬ বা এর বেশি। বাংলাদেশ সেখানে অর্জন করেছে ৭২ দশমিক নয়। এছাড়া অর্থনৈতিক ভঙুরতা সূচকে হতে হবে ৩২ বা এর কম। সেখানে বাংলাদেশের আছে ২৪ দশমিক আট শতাংশ। এটা জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসির (সিপিডি) হিসাব।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, আমরা ২০১০ সালে বিশ্ব অর্থনৈতিক দেশ হিসেবে ৫৮তম ছিলাম। সেখান থেকে এখন আমরা ৪৩তম অবস্থানে। ২০২০ সালে আমরা উন্নত দেশ হব। সেখানে আমরা ২০তম অর্থনৈতিক দেশ হিসেবে অবস্থান করব। এ ক্ষেত্রে আমাদের অবকাঠামো উন্নয়নসহ কিছু চ্যালেঞ্জ আছে। সেগুলোর জন্য আমরা প্রস্তুত আছি। আমরা অবকাঠামো উন্নয়নে হাত দিয়েছি। আমরা গভীর সমুদ্র বন্দর করছি। গ্যাস, বিদ্যুতের উন্নয়ন করছি। ২০৩০ সালে ৩৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করব। আমাদের প্রাইভেট পাবলিক পার্টনারশিপের মাধ্যমে কাজ করা দরকার। হয়তো আমাদের প্রাইভেট সেক্টরে বিনিয়োগ কম। তবে আমরা তাদের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছি, তাদের বিনিয়োগ বাড়বে।
‘ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলংকার মতো উন্নয়নশীল দেশের কাতারে এখন বাংলাদেশ। হয়তো মালয়েশিয়ার মতো অত উন্নত নয়, তবে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।