মসনদের একেবারে দোরগোড়ায় ঋষি সুনাক। কারণ, যাঁর সঙ্গে তাঁর লড়াই হতে পারত তীব্র, সেই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন মনোনয়ন জমা দিচ্ছেন না। আনুষ্ঠানিক ভাবে আচমকাই তিনি বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছেন, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড় থেকে তিনি সরে দাঁড়ালেন। বরিসের এই ভোলবদলের জেরে ক্ষমতাসীন দল কনজারভেটিভ পার্টিরই আর এক নেতা, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনাকের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা আরও বেড়ে গেল। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের ধারণা, বড়সড় কোনও অঘটন না-ঘটলে ভারতীয় বংশোদ্ভূত এই অর্থনীতির ছাত্রের ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী হওয়া প্রায় নিশ্চিত। দৌড়ে যে ক’জনের নাম সর্বাগ্রে উচ্চারিত হচ্ছিল তাঁদের মধ্যে বরিস জনসন ছিলেন এগিয়ে। তবে রোববার রাতে আচমকাই বিবৃতিতে তিনি জানিয়ে দেন, প্রয়োজনীয় সংসদীয় সমর্থন থাকা সত্ত্বেও তিনি সরে দাঁড়ালেন।
কারণ হিসেবে বরিস জনসনের অভিমত, আপাতত প্রধানমন্ত্রীর হওয়ার দৌড়ে থাকা ঠিক হবে না। তবে তিনি আশাপ্রকাশ করেছেন যে, পার্লামেন্টে কনজারভেটিভ পার্টির সদস্যরা যদি ঐক্যবদ্ধ না-হন তবে, দক্ষতা এবং দৃঢ়তার সঙ্গে কোনও সরকার পরিচালনা করাই সম্ভব নয়। বরিস জানিয়েছেন, পার্লামেন্টের ১০২ জন আইনপ্রণেতা তাঁকে সমর্থন করছিলেন। তবে বিবিসি-র দাবি, বরিসকে প্রকাশ্যে সমর্থন করেছেন… এমন আইনপ্রণেতার সংখ্যা আসলে ৫৭ জন। এবার নির্বাচন না-লড়লেও অবশ্য ২০২৪ সালের সাধারণ নির্বাচনের দিকে নজর রাখছেন বরিস জনসন। সেই ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। জানিয়েছেন, আগামী ২০২৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে কনজারভেটিভ পার্টিকে তিনিই বড় জয় উপহার দিতে পারবেন।
কেন প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে রয়েছেন ঋষি সুনাক? কারণ, তথ্যানুযায়ী ১৩৬ জন আইনপ্রণেতা তাঁকে সমর্থন করছেন। এ ছাড়া যাঁরা বরিসকে সমর্থন করছিলেন তাঁদের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকজনও এখন ঋষির পাশেই থাকার কথা জানিয়ে দিয়েছেন। যদিও ঋষি ছাড়াও এই লড়াইয়ে রয়েছেন প্রাক্তন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পেনি মরডান্ট। তাঁর ভাগ্যে শিকে ছেঁড়ার আশা দেখছেন না প্রায় কেউই। কারণ, তাঁর ঝুলিতে রয়েছে মাত্র ২৩ সাংসদের সমর্থন।
কনজারভেটিভ পার্টির পক্ষ থেকে জানানো এসেছে, ২৮ অক্টোবরের মধ্যে দলের নতুন নেতা নির্বাচিত করা হবে। প্রথাগত ভাবে পার্টির এই নেতাই প্রধানমন্ত্রী হবেন। বর্তমান পার্লামেন্টে কনজারভেটিভদের সদস্যসংখ্যা ৩৫৭ জন। তাঁরাই নতুন দলনেতা নির্বাচিত করবেন। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার লড়াইয়ে নাম লেখানোর জন্য একজন প্রার্থীকে অন্তত ১০০ সদস্যের সমর্থন জোগাড় করতে হয়। সেই নিরিখেই অনেকটা স্বস্তিতে ঋষি। প্রধানমন্ত্রীর দৌড় থেকে সড়ে দাঁড়ানোর পর বরিস জনসনের প্রশংসাও করেছেন ঋষি তিনি। ঋষির ট্যুইট, ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে ব্রিটেনের বিচ্ছেদ (ব্রেক্সিট) এবং কোভিড টিকা কর্মসূচির বাস্তবায়নে দুর্দান্ত কাজ করেছেন বরিস।–জি নিউজ