ভারতের রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ সম্মান ভারতরত্ন প্রত্যাখ্যান করেছেন প্রয়াত সঙ্গীতশিল্পী ভূপেন হাজারিকার ছেলে তেজ হাজারিকা। বিতর্কিত নাগরিকত্ব (সংশোধনী) বিল ২০১৬-র প্রতিবাদে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে ভারতীয় গণমাধ্যমকে জানান তিনি।
গেল ২৬ জানুয়ারি ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসের আগে ভারতের রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে এই সম্মান প্রদানের ঘোষণা দেওয়া হয়। তবে গতকাল সোমবার ভূপেন হাজারিকার একমাত্র ছেলে তেজ ভূপেন হাজারিকা ভারতের গণমাধ্যমকে জানান, ‘আমি আসামের বর্তমান পরিস্থিতি জানি। ভূপেন হাজারিকা সব সময় আসামের মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। আসামের হয়ে লড়াই ও আন্দোলন করেছেন। তাই আমরা এই সম্মান গ্রহণ করতে অস্বীকার করছি। ছেলে হিসেবে আমি জানাচ্ছি, ভারত সরকার বাবাকে যে মরণোত্তর সম্মান প্রদর্শন করছে, তা আমরা গ্রহণ করছি না।’
আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের ছয় সংখ্যালঘু গোষ্ঠীকে নাগরিকত্ব প্রদানের লক্ষ্যে নাগরিকত্ব (সংশোধনী) বিল ২০১৬, ভারতের রাজ্যসভার বর্তমান অধিবেশনে আজ উপস্থাপিত হতে পারে। ভারতে ছয় বছরের অধিক সময় ধরে বসবাস করছেন এমন অভিবাসীদের দেশের নাগরিকত্ব প্রদানের ব্যবস্থা নিয়েছে ভারত সরকার। মূলত এরই প্রতিবাদ করছেন হাজারিকার ছেলে।
ভূপেন হাজারিকার জন্ম আসামে ১৯২৬ সালে। ৮৫ বছর বয়সে ২০১১ সালে তিনি মারা যান। জীবনের বিভিন্ন সময়ে অসমিয়া, বাংলা, হিন্দিসহ বিভিন্ন ভাষায় গান গেয়েছেন। সিনেমায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে গান গেয়ে অবদান রেখেছেন। তার গান শুনে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন মুক্তিযোদ্ধারা। বাংলাদেশ সরকার তাকে ২০১১ সালে ‘মুক্তিযুদ্ধ পদক’ প্রদান করে।
ভূপেন হাজারিকা একাধারে সংগীতশিল্পী, সুরকার, গীতিকার, চলচ্চিত্রকার ও কবি। তিনি পেয়েছেন সংস্কৃতি অঙ্গনের ভারতের সর্বোচ্চ সম্মান দাদাসাহেব ফালকে পদক, আসামরত্ন পদক, পদ্মশ্রী, পদ্মভূষণ, পদ্মবিভূষণ সম্মাননা।