ডিএমপি নিউজঃ বাসা ভাড়া নিয়ে বাসার মালিকদের অজ্ঞান করে স্বর্ণালংকার, টাকা-পয়সা ও মূল্যবান জিনিসপত্র লুটে নেয়া অজ্ঞান পার্টি চক্রের মহিলাসহ ৮ জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
উল্লেখ্য, গত ২৫ আগস্ট, ২০১৮ ডেমরা থানাধীন পূর্ব বক্সনগর, ইসমাইল ভিলার পশ্চিমে একটি বাসায় কয়েকজন নারী বাসা ভাড়া নিতে যায় এবং বাসার মালিকের সাথে কথাবার্তা বলে আসে। পরের দিন তারা বাসা ভাড়া চূড়ান্ত করার জন্য সকাল ৯টা থেকে ১০.৩০টার মধ্যে উল্লেখিত বাসায় পূনরায় যায়। এরপর তারা পূর্বপরিকল্পনা মোতাবেক বাসার মালিক হাজী আব্দুস ছাত্তার (৭০) ও তার স্ত্রী সাহেরা খাতুনকে (৬০) চেতনানাশক ঘুমের ঔষুধ খাইয়ে অজ্ঞান করে স্বর্ণের কানের রিং, টেবিলে থাকা ছোট দুইটা চার্জার লাইট ও দুইটা পুরাতন ম্যাক্সি নিয়ে পালিয়ে যায়। বিকাল ৫ টার দিকে বাসার অন্যান্য ভাড়াটিয়ারা অচেতন অবস্থায় তাদেরকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদেরকে মৃত ঘোষণা করে।
উক্ত ঘটনায় গত ২৭ আগস্ট, ২০১৮ ডেমরা থানায় একটি মামলা রুজু হয়। প্রাথমিক পর্যায়ে থানা পুলিশ মামলাটি তদন্ত শুরু করে। পরবর্তীতে মামলাটির তদন্তভার যায় ডিবি’র ডেমরা জোনাল টিমের কাছে। মামলাটি তদন্তকালে তথ্য প্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের সনাক্ত ও অবস্থান নির্ণয় করে ডিবি পুলিশ।
এরপর ১২ এপ্রিল,২০১৯ বিকাল ৫.১৫ টায় নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ঈদগাহ মাঠ এলাকায় অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত সীমা (৩০), লিপি (৫০), বেবী আক্তার ওরফে বকুল (৪৮), আমিরন ওরফে আমিরুন্নেছা (৪৮), মুক্তা (৩৬), কুলছুম ওরফে সাথী (২৬) ও মোঃ মনির হোসেন ওরফে বাবু (১৯) দের গ্রেফতার করা হয়। তাদের দেয় তথ্যমতে ঐ দিন রাত ৯:৩০ টায় কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি থানা এলাকা হতে অপর অভিযুক্ত মোছাঃ তাসলিমা আক্তার মনা ওরফে ময়নাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ঘটনার দিন তারা কয়েকজন বাসা ভাড়া নেয়ার কথা বলে ঐ বাসায় যায়। এরপর পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী বাসার মালিক হাজী আব্দুস ছাত্তার ও তার স্ত্রী-সাহেরা খাতুনের সাথে খাতির জমিয়ে ঘুমের ঔষুধ মিশানো শরবত খাইয়ে দেয়। বাসার মালিক এবং তার স্ত্রী যাতে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ে সেই জন্য বাসার মালিকের মাথায় ও দাড়িতে এবং তার স্ত্রীর মাথায় মেহেদি লাগিয়ে দেয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই তারা অচেতন হয়ে পড়লে তারা উল্লেখিত মালামাল নিয়ে পালিয়ে যায়।
তারা আরো জানায়, তারা সংঘবদ্ধ অজ্ঞান পার্টির সক্রিয় সদস্য। তারা বাসা ভাড়ার কথা বলে টার্গেটকৃত বাসার মালিককে চেতনানাশক ঘুমের ট্যাবলেট দই ও শরবত ইত্যাদির সঙ্গে মিশিয়ে খাইয়ে অজ্ঞান করে স্বর্ণালংকার, টাকা ও অন্যান্য মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে যায়। যানা যায়, তারা ইতোপূর্বে ঢাকার বাড্ডা, বরিশাল, কুমিল্লা, ফেনী, নোয়াখালি, খুলনা, চট্টগ্রামসহ নারায়নগঞ্জের বিভিন্ন জায়গায় অনুরূপ কৌশল অবলম্ব করে অপরাধ সংঘটন করেছে।
গ্রেফতারকৃতদেরকে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।