ব্যতিক্রমী এক ভিখারিনীর নাম নন্দিনী শর্মা। ভারতের আজমীরের অম্বে মাতার মন্দিরের সিঁড়িতে তিনি ভিক্ষা করেছেন দীর্ঘদিন।নিজে খেয়ে না খেয়ে সেই ভিক্ষার টাকা একটু একটু করে জমা করেছেন। উদ্দেশ্য, মৃত্যুর পর তার টাকা সমাজের ভাল কোনও কাজে ব্যয় করা। এজন্য দুইজন নমিনীও করেছিলেন। তাদেরকেও বলে গিয়েছিলেন নিজের শেষ ইচ্ছার কথা।
জানা গেছে, আজমীরের অম্বে মাতার মন্দিরের সিঁড়িতে ভোরবেলায় বসতেন নন্দিনী। শীত,গ্রীষ্ম কিংবা বর্ষাকাল –কোন অবস্থাতেই নন্দিনীর বসার জায়গা বদলাত না। রোজ মন্দিরে পুজা পাঠের পর অনেকের কাছেই প্রাসাদ পেতেন নন্দিনী। তা দিয়েই দিনের খাওয়া সারতেন তিনি।কাপড় ছিঁড়ে গেলে মন্দিরের ভক্তরাই তার কাপড় দিত।
মন্দিরে যাতায়তরত ভক্তরা নন্দিনীকে যে টাকা ভিক্ষা দিতেন তা প্রতিদিনই তিনি জমা রাখতেন একটা ব্যাংকে নিজের অ্যাকাউন্টে। সেখানে নমিনি হিসেবে দুইজনের নামও দিয়ে রেখেছিলেন তিনি। নন্দিনী তাদের বলেছিলেন তার মৃত্যুর পর টাকাটা যেন রাষ্ট্রের কল্যাণে ব্যবহার করা হয়।
২০১৮ সালের আগষ্ট মাসে নন্দিনী মারা যান। তার দুই নমিনি ব্যাংকে গিয়ে দেখেন তার নামে ৬ লক্ষ ৬১ হাজার রুপি জমা হয়েছে।
নন্দিনীর মৃত্যুর পর পরই টাকাটা ঠিক কি কাজে ব্যয় করা যায় তা ঠিক করতে পারছিলেন না ওই দুইজন নমিনি। তবে সম্প্রতি পুলওয়ামা হামলার পর তারা মনে করেন নন্দিনীর ওই জমানো টাকা শহীদদের পরিবারের সাহায্যার্থে কাজে লাগানো যেতে পারে। এটা ভেবেই ওই দুইজত গত বৃহস্পতিবার নন্দিনীর অর্থ সাহায্য নিয়ে পৌঁছান আজমীরের প্রশাসনের কাছে।
খবরটা জানাজানি হতেই হৈ চৈ পড়ে যায় মন্দির চত্বরে। অম্বে মাতা মন্দিরের পুরোহিত জানিয়েছেন, নন্দিনী লুকিয়ে বা গোপনে টাকা জমাতেন না। তিনি যে ব্যাংকে টাকা জমান তা মন্দিরে নিয়মিত আসা ভক্তদের অনেকেই জানতেন। নন্দিনীর ওই টাকা পুলওয়ামার শহীদ পরিবারদের সাহায্যার্থে ব্যবহার হয়েছে শুনে খুশী হয়েছেন মন্দিরের ভক্তরা।
সূত্র : ইন্ডিয়া টাইমস