ডিএমপি নিউজ : উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তার নামে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলে নিজেকে এসএস স্টিল লিমিটেড কোম্পানীর জেনারেল ম্যানেজার পরিচয় দিয়ে ৮০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মনিরুজ্জামান মনি(২৯) নামের এক প্রতারককে গ্রেফতার করেছে ডিএমপির ডিবি-সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (উত্তর) বিভাগ।
এ সময় তার হেফাজত থেকে প্রতারণার ৭ লাখ ৬৯ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।
উক্ত ঘটনায় গত ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে আকাঙ্খা গ্রুপের মাহাবুব ব্রাদার্স প্রাঃ লিমিটেডের এজিএম (মার্কেটিং) সানোয়ার রহমান বাদী হয়ে গুলশান থানায় একটি মামলা দায়ের করে।
জানা যায়, গত ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে গ্রেফতারকৃত মনিরুজ্জামান মনি নিজেকে এসএস স্টিল লিমিটেড কোম্পানীর জেনারেল ম্যানেজার মিঃ জোহা হিসেবে পরিচয় দিয়ে আকাঙ্খা গ্রুপের মাহাবুব ব্রাদার্স প্রাঃ লিঃ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে। মোবাইল ফোনে তাদের মাঝে ব্যবসায়িক আলোচনা হয়। গত ২৫ সেপ্টেম্বর মনিরুজ্জামান বাদীকে এসএস স্টিলের রড সরবরাহের কথা বলে এসএস স্টিল কোম্পানীর নামে খোলা একটি অ্যাকাউন্টে ৮০ লাখ টাকা প্রেরণ করতে বলে। দীর্ঘদিন যাবৎ এসএস স্টিল লিমিটেডের সাথে লেনদেন থাকায় ও অ্যাকাউন্টটি এসএস স্টিলের নামে হওয়ায় বাদীর এ ব্যাপারে কোন সন্দেহ না হওয়ায় মনিরুজ্জামানের দেয়া অ্যাকাউন্টে তিনি রডের মূল্য বাবদ ৮০ লক্ষ টাকা জমা করেন। যথাসময়ে রড সরবরাহ না পেয়ে তিনি মনিরুজ্জামানের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে মোবাইল ফোনটি বন্ধ পান।তাৎক্ষণিকভাবে বাদী এসএস স্টিল লিঃ এর সাথে যোগাযোগ করে জানতে পারেন এসএস স্টিল লিঃ এর প্রকৃত মিঃ জোহার সাথে বাদীর কোন যোগাযোগই হয়নি। বাদী বুঝতে পারেন তিনি প্রতারণার খপ্পরে পড়েছেন।
ডিবির সোশ্যাল মিডিয়া ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিম মামলাটি তদন্তকালে গোয়েন্দা তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় প্রতারকের অবস্থান শনাক্ত করে ১৫ অক্টোবর ২০২৪ দিবাগত রাতে রাজশাহী মহানগরীর চন্দ্রিমা থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে।
অনুসন্ধানে জানা যায় মনিরুজ্জামান মনি চট্টগ্রামের একজন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সুকান্ত রক্ষিতের জাতীয় পরিচয়পত্র, ছবি, টিন সার্টিফিকেট ও ট্রেড লাইসেন্স কৌশলে সংগ্রহ করে এসএস স্টিল এর নামে এনসিসি ব্যাংকের মতিঝিল শাখায় একটি ব্যবসায়িক অ্যাকাউন্ট খুলে। উক্ত ব্যাংক অ্যাকাউন্টে বাদীর নিকট হতে প্রতারণা করে নিয়ে আসা রড বিক্রির ৮০ লক্ষ টাকা জমা হলে ছদ্মবেশে তা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নেয়। ব্যাংক কর্মকর্তার নিকট তার প্রকৃত চেহারা আড়াল করার জন্য চুল, দাড়ি বড় করে নিজেকে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে মুখে, হাতে ও চোখে মারাত্মক জখমের ব্যান্ডেজ লাগিয়ে ব্যাংকে প্রবেশ করে। চোখে-মুখে ব্যান্ডেজ ও চুল-দাড়ি বড় থাকায় ব্যাংক কর্মকর্তা তার প্রকৃত চেহারা শনাক্ত না করেই টাকা দিয়ে দেয়। পরবর্তীতে মনিরুজ্জামান নিজেকে ঘটনা থেকে আড়াল করার জন্য কৃষি কর্মকর্তার জাতীয় পরিচয়পত্রে উল্লেখিত ঠিকানায় চট্টগ্রাম যায়। সেখানে গিয়ে তিনি প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত মোবাইল ফোন থেকে কৃষি কর্মকর্তাকে কল করে এবং ম্যাসেজ দেয় যাতে তদন্তে কৃষি কর্মকর্তার নাম আসে।
গ্রেফতারকৃত মনিরুজ্জামানের বিরুদ্ধে আরো পাঁচটি প্রতারণার মামলা ও এসব মামলায় তিনটি গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে বলে জানা যায়।