দ্বীপ জেলা ভোলা। এখানে রয়েছে শতাধিক বিচ্ছিন্ন চর। নদীর মাঝখানে এসব চরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল এলাকা জুড়ে সবুজ ঘাসের সমারহ। আর এসব চরে লালন করা হয় হাজার হাজার মহিষ। সবুজ ঘাস খেয়ে প্রতিপালিত হয় এসব মহিষ।
যুগ যুগ ধরে বংশপরাক্রমায় বহু পরিবার এখানে মহিষ ও দধি বিক্রির পেশায় নিয়জিত রয়েছেন। অনেকে আবার নিজস্ব মহিষের মাধ্যমে দুধ উৎপাদন করে দধি তৈরি করেন। দধির ব্যবসাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন চরে গড়ে উঠেছে শত শত মাহিষ নিয়ে বাথান। বেলা বাড়ার সাথে সাথে এসব বাথান থেকে মণে মণে দুধ আসতে শুরু করে শহরের বাজারগুলোতে।
আর এ দুধ দিয়েই বানানো হয় মজাদার দধি। এ দধি তৈরিতে কোন প্রকার বীজ বা অন্য উপাদানের প্রয়োজন হয়না। শুধু কাঁচা দুধটা টালি(মাটির বিশেষ পাত্র) তে বসিয়ে দিলেই ১৮-২০ ঘন্টার মধ্যে দধি হয়ে যায়। জমাটবাধা দধি দেখতে অনেকটা পনিরের মতো মনে হবে। তাই স্বাদে গুণে অনন্য এ খাবারটি বিভিন্ন উৎসব যেমন ঈদ-পূজা, বিয়ে, জন্মদিন, আকিকাসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ব্যাপক কদর রয়েছে।
দধির কারিগর সূনীল চক্রবর্তী। প্রায় ৪৫ বছর দধি বানানোর কাজ করছেন। তিনি বলেন, মহিষের দুধের দধি তৈরিতে তেমন কোন বাড়তি ঝামেলা নেই। দুধ জ্বাল বা শোধন করতে হয়না। শুধু কাঁচা দুধটা ছেঁকে মাটির পাত্রটি (টালি) পরিস্কার করে তাতে দুধ ঢেলে বসিয়ে দিলেই দধি হয়ে যায়। পরে সম্পূর্ণ নিজস্ব পদ্ধতিতে তা বেঁধে দেওয়া হয়। যাতে সহজেই পরিবহন করা যায় দূর-দূরান্তে। এখনকার দধি ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মানুষের কাছে পাঠানো হয় প্রতিদিনই।