ডিএমপি নিউজঃ মংলা বন্দর থেকে আমদানিকৃত কাপড় চুরির ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগ। সেই সাথে রাজধানীর ইসলামপুর থেকে চোরাইকৃত কাপড়ের একাংশ উদ্ধার করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতরা হলো-শামসুল আরেফিন, মোঃ মনির হোসেন, আবুল কাশেম, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অরুণ ও লেবার সরদার সাগর।
গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মোঃ রাজীব আল মাসুদ, বিপিএম বলেন, গত ১০ সেপ্টেম্বর ২০২০ একজন ভিকটিমের অভিযোগের মাধ্যমে জানা যায়, তিনি চায়না থেকে কিছু কাপড় আমদানি করেছেন। সেই মালামালগুলো (কাপড়) পোর্ট থেকে বের হওয়ার আগেই বাজারে বিক্রি হচ্ছে। সে নিজেও তার মালামালের স্যাম্পলের সাথে মিলিয়ে বাজার থেকে কিছু মাল ক্রয় করেছেন। তিনি আরো জানান, মংলা পোর্টের মাধ্যমে তিনি ৩ লাখ ৩০ হাজার গজ কাপড় আমদানি করেছিলেন। এমন ঘটনার প্রেক্ষিতে রাজধানীর কোতোয়ালী থানায় একটি মামলা রুজু হয়।
এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে রুজুকৃত মামলার সূত্র ধরে গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগের কোতোয়ালী জোনাল টিম ১০ সেপ্টেম্বর ২০২০ রাজধানীর ইসলামপুরের একটি গোডাউনে অভিযান চালিয়ে প্রায় ৯৫ হাজার গজ চোরাই থান কাপড় উদ্ধারসহ শামসুল আরেফিন ও মোঃ মনির হোসেনকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের পর তাদের জিজ্ঞাসাবাদে পুরো সিন্ডেকেটকে সনাক্ত করতে সক্ষম হয় গোয়েন্দা পুলিশ। তদন্তে এই সিন্ডিকেটের সাথে জড়িত মংলা পোর্টের কিছু অসাধু কর্মচারি ও কর্মকর্তা, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট, অসাধু কাপড় ব্যবসায়ী এবং খুচরা বিক্রেতাদের নাম প্রকাশ পায়। গ্রেফতারের পরের দিন তাদেরকে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়।
মালামাল চুরির প্রক্রিয়া সম্পর্কে উপ-পুলিশ কমিশনার রাজীব আল মাসুদ বলেন, আমদানিকৃত কন্টেইনারের ভেতরে কি কি মাল থাকে সেটা জানে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টরা। তারা তাদের সিন্ডিকেটের অন্যান্য সহযোগীদের সাথে একত্রে মিলে মাল খালাসের জন্য দুটি পরিবহনের পরিবর্তে চারটি পরিবহন পোর্টের ভেতরে প্রবেশ করায়। যে মালামালগুলো কাস্টমস থেকে ক্লিয়ারেন্স পেয়েছে সেগুলো দুইটি গাড়িতে উঠায়। একই মালের অন্য কন্টেইনার যেগুলো কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স পায় নাই এমন কনটেইনারের ভেতর থেকে তালা খুলে মাল বাকী দুই গাড়িতে করে সরিয়ে নেয়। এরপর এই চোরাই মালামাল সিন্ডিকেটের মাধ্যমে চলে যেত বিভিন্ন জেলার চোরাই বাজারে। এভাবেই চক্রটি মালামাল পাচার করতো।
তদন্ত সূত্রে জানা যায়, গ্রেফতারকৃতদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ১৮ নভেম্বর ২০২০ চট্টগ্রামের টেরিবাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে এই ঘটনার সাথে জড়িত আবুল কাশেমকে গ্রেফতার করা হয়। পরের দিন (১৯ নভেম্বর ২০২০) রিমান্ডের আবেদন করে তাকে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হলে আদালত দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে।
এরপর রিমান্ডে তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে রোববার (২২ নভেম্বর) মংলা থানা এলাকা থেকে এই সিন্ডিকেটের আরো দুই সদস্য সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অরুণ ও লেবার সরদার সাগরকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত দুজনকে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
মামালাটির তদন্ত অব্যাহত আছে।