মানুষের মরদেহ থেকে কম্পোস্ট বা জৈব সার তৈরির অনুমতি দিয়ে আইনের অনুমোদন করেছে ওয়াশিংটন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম কোনো রাজ্য এই আইন পাস করলো। এই আইন অনুযায়ী মৃত্যুর পর নিজের শরীরকে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে জৈব সার তৈরির নির্দেশনা দিয়ে যেতে পারবেন যে কেউ।
ওয়াশিংটন ডিসি’র গভর্নর মঙ্গলবার (২২ মে) বিলটিতে স্বাক্ষর করায় এই বিলটি এখন আইনে পরিণত হয়েছে।
এই পদ্ধতিকে প্রচলিত রীতির কবর দেয়া বা দাহ করার বিকল্প হিসেবে দেখা হচ্ছে। বিশেষ করে যেসব শহরে কবরস্থানের বা নতুন করে কবর দেয়ার সংকট তৈরি হয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে এটি একটি বিকল্প সমাধান হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এই প্রক্রিয়ায় মাটির সঙ্গে মিশে মৃতদেহ সারে পরিণত হওয়ার পর সেই মাটি তার প্রিয়জনদের দেয়া হবে। প্রিয়জনরা চাইলে এই মাটি ফুলগাছ, সবজির চারা বা বৃক্ষ রোপণে ব্যবহার করতে পারবেন।
বিলটি পাসের পক্ষে কাজ করা ক্যাটরিনা স্পেড এএফপিকে বলেন, সাধারণভাবে কবর দেয়ার বদলে এই পদ্ধতিতে মরদেহ সমাহিত করা হবে প্রাকৃতিক, নিরাপদ, স্থায়ী এবং তা পৃথিবীর ভূমির ব্যবহার ও কার্বন নিঃসরণ কমাতে ভূমিকা রাখবে। ক্যাটরিনা স্পেড এজন্য একটি কোম্পানি গঠন করেছেন, যেখান থেকে প্রথম এ ধরনের সেবা দেয়া হবে।
মরদেহ যে প্রক্রিয়ায় জৈব সারে পরিণত হবে:
ক্যাটরিনা স্পেড বলেন, তার কোম্পানির প্রক্রিয়া হচ্ছে ছয়টি কোণ বিশিষ্ট একটি ইস্পাতের বাক্সের ভেতর কাঠের টুকরো, খড়কুটো আর প্রাণী দেহ কেন্দ্র করে বেড়ে ওঠে এক ধরণের উদ্ভিদ (আলফালফা) দিয়ে মৃতদেহ রাখা হবে। এরপর সেই বাক্সটি বন্ধ করে দেয়া হবে। পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে প্রাকৃতিকভাবেই মৃতদেহ পঁচে মাটিতে পরিণত হবে।
পরিবেশ-বান্ধব এ ধরনের বিকল্প সমাধি দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। জানা গেছে, এ মাসের প্রথমদিকে প্রয়াত অভিনেতা লুক পেরিকে ক্যালিফোর্নিয়ার একটি ‘মাশরুম স্যুইটে’ সমাহিত করা হয়েছে।
লুক পেরির স্যুইট প্রস্তুতকারক জায়ে রাইম লি বলেন, যখন কোন মৃতদেহ মাটিতে সমাহিত করা হয় বা পুড়িয়ে ফেলা হয় তখন বিষাক্ত গ্যাস পরিবেশে মিশে যায়। কিন্তু এই প্রক্রিয়ার ফলে পরিবেশ দূষণ কমে যাবে।
এই প্রক্রিয়া ইতোমধ্যে সুইডেনে আইনগত বৈধতা পেয়েছে। আবার যুক্তরাজ্যে কোনো বাক্স ছাড়া বা পঁচনশীল কফিনে মরদেহ সমাহিত করার আইনি বৈধতা রয়েছে।