ডিএমপি নিউজঃ পৃথিবীর প্রত্যেক প্রাণীকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। মৃত্যুর মধ্যে এমন কিছু মৃত্যু আছে যা তাঁকে বীরের মর্যাদা দেয়। সেই সাথে তাঁর অবদান সকলের অন্তরে অনন্তকাল টিকে থাকে। তেমনি একজন পুলিশ পরিদর্শক চৌধুরী মোঃ আবু কয়ছর বিপিএম।
তিনি (২৫ মার্চ, ২০১৭) সন্ধ্যা অনুমান ১৯.০০ ঘটিকায় সিলেট মহানগরীর মোগলা বাজার থানাধীন শিববাড়ীস্থ পাঠানপাড়ার আতিয়া ভিলার অদূরে সিলেট ফেঞ্চুগঞ্জ রোডের ওপর বোমা বিস্ফোরণের বিকট শব্দ হয়।উক্ত বিস্ফোরণের শব্দ শুনে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে বোম্ব ডিসপোজাল টিমের ইনচার্জ হিসেবে মরহুম চৌধুরী মোঃ আবু কয়ছর সঙ্গীয় অন্য সদস্যদের নিয়ে ঘটনাস্থলে গমন করেন। তাঁর জীবনের ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও ঘটনাস্থলের আশপাশে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করেন। রাস্তার পাশে জঙ্গিদের ফেলে যাওয়া হলুদ রঙের শপিং ব্যাগে কোনো বিস্ফোরক দ্রব্য আছে কি না তা পরীক্ষা করার মুহুর্তে বোমা বিস্ফোরিত হলে চৌধুরী মোঃ আবু কয়ছর সঙ্গীয় অন্য দুজন পুলিশ সদস্যসহ বোমার আঘাতে মারাত্মকভাবে আহত হন। তাঁদেরকে তাৎক্ষণিকভাবে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক চৌধুরী মোঃ আবু কয়ছরকে মৃত ঘোষণা করেন।
জীবনের মায়া ত্যাগ করে সাধারণ মানুষের জীবন নিরাপদ করার লক্ষ্যে চৌধুরী মোঃ আবু কয়ছর জঙ্গিদের ফেলে যাওয়া বোমা অপসারণের জন্য ঘটনাস্থলে গিয়ে সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব প্রদর্শন করে আত্মত্যাগ করেছেন। তাঁর এ মহান আত্মত্যাগ বাংলাদেশ পুলিশ কখনো ভুলবে না। তাঁর এরূপ সাহসিকতাপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তাঁকে ‘বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম)-মরণোত্তর’ ২০১৭ পদকে ভূষিত করা হয়।
তিনি ১৯৯১ সালে উপ-পুলিশ পরিদর্শক হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশে যোগদান করেন।
পুলিশের এই কর্মকর্তা ১৯৬৬ সালে সুনামগঞ্জ জেলার সদরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম মৃত মোঃ আসাদুর আলী চৌধুরী ও মাতা মোছাঃ হাসনা চৌধুরী।