পর্যটন জেলা কক্সবাজারের মহেশখালীসহ বিভিন্ন উপজেলায় চলতি মৌসুমে মিষ্টিপানের বাম্পার ফলন হয়েছে। তার মধ্যে মহেশখালী উপজেলায় মিষ্টি পানের ফলন উল্লেখযোগ্য। পাশাপাশি চড়া দামও রয়েছে। সব মিলে পান চাষীদের মধ্যে ব্যাপক খুশির আমেজ বিরাজ করছে। সংশ্লিষ্টদের মতে, এবারে দ্বীপ উপজেলা মহেশখালী থেকে প্রায় ৩শ’ কোটি টাকার মিষ্টি পান উৎপাদন হবে এমন মত প্রকাশ করেছেন পানচাষী ও ব্যবসায়ী।
বড় মহেশখালীর বাসিন্দা পানচাষীদের মতে, চলতি মৌসুমে যেমন ফলন হয়েছে। তেমন পানের দরও রয়েছে। সুতারাং পান চাষ নিয়ে এ বছর চাষীদের মুখে হাসি ফুটেছে।
পান চাষীরা জানান, আগামী কয়েক সপ্তাহে পানের মূল্য আরো বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কারন মহেশখালীর মিষ্টি পানের চাহিদা পুরো দেশে রয়েছে। আমরা বর্তমানে মৌসুমের শুরুইে প্রতি (বিড়া) পান পাইকারী বাজারে বিক্রি করছি ২৫০ টাকা থেকে শুরু করে তিনশ’ টাকা পর্যন্ত।
এদিকে খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায়, জেলার সবচেয়ে বেশী মিষ্টি পান উৎপাদন হয় মহেশখালী উপজেলায়। পাশাপাশি কুতুবদিয়া উপজেলা ছাড়া জেলার অন্য ৭ উপজেলায় উৎপাদন হয় মিষ্টি পান।
কক্সবাজার জেলা কৃষি অফিস সূত্রমতে, জেলায় অন্তত ৩ হাজার হেক্টর জমিতে পান চাষ হচ্ছে। তৎমধ্যে মহেশখালীতে ১৬০০ হেক্টর ও চকরিয়া, পেকুয়া, রামু, সদর, উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলায় ১৪০০ হেক্টর জমিতে চাষ হয়। পাহাড়ী জমিতে যে পান চাষ হয় তা হিসাবে কৃষি বিভাগে নেই। তবে একটি সুত্রে জানা যায় পাহাড়ে অন্তত ২ হাজার হেক্টরেরও অধিক জমিতে বর্তমানে পান চাষ হয়।
মহেশখালী উপজেলার কৃষি কর্মকর্তারা স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেন, চলতি বছরে মহেশখালীতে ১৬শ’ হেক্টর জমিতে মিষ্টি পানের ফলন হয়েছে। যা অন্যান্য বছরের তুলনায় খুবই প্রশংসনীয়। তবে এর মধ্যে অর্ধেক মৌসুমী পানের চাষ। পানের বাম্পার ফল হয়েছে জানিয়ে কৃষি কর্মকর্তা বলেন, কৃষি বিভাগ পান চাষীদের প্রয়োজনীয় সহযোগীতা করেছে। কোন মড়ক দেখা দিলে তাৎক্ষণিক সহযোগীতা পরার্মশে এগিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া প্রতিনিয়ত মড়কের ব্যাপারে চাষীদের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি করা হয়েছে।
মিষ্টি পানের সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের ফরিদ জানান, যেভাবে পানের ফলন হয়েছে সেভাবে যদি দাম স্থিতিশীল থাকে তাহলে কক্সবাজারেই ৩০০ কোটি টাকার পান উৎপাদন সম্ভব হবে। এদিকে বর্তমানে যে সমস্ত জেলায় পান সরবরাহ হচ্ছে তৎমধ্যে যার কক্সবাজার জেলা ছাড়াও চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী ও কুমিল্লা ও ঢাকায়। এ সব এলাকায় মিষ্টি পানের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।
এদিকে দেশের বাইরে মিষ্টি পানের চাহিদা রয়েছে সৌদি আরব ছাড়াও মধ্য প্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ। তাই রপ্তানী বাড়লে পানের চাষ বাড়বে, আর পানের চাষ বাড়লে উৎপাদনও বাড়বে বলে জানান একাধিক পানচাষী।