নিরাপদ মাছের উৎপাদন নিশ্চিত করতে মৎস্য খামারিদের নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করে একটি আইনের খসড়ায় সায় দিয়েছে সরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সোমবার তার কার্যালয়ে মন্ত্রিসভা বৈঠকে ‘মৎস্য ও মৎস্যপণ্য (পরিদর্শন ও মাননিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০১৯’ এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়।
সভা শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, নিরাপদ মৎস্য উৎপাদন নিশ্চিত করতে মৎস্য খামার স্থানীয় উপযুক্ত পদ্ধতিতে নিবন্ধন করতে হবে। অর্থাৎ মৎস্য খামার চালাতে গেলে রেজিস্ট্রেশন লাগবে। ১৯৮৩ সালের একটি অধ্যাদেশ দিয়ে মৎস্য খাত চলছিল। মাছ রপ্তানিতে নানা রকম সমস্য হয়, এজন্য সময়ের প্রেক্ষাপটে ওই অধ্যাদেশকে হালনাগাদ করা হচ্ছে।
মৎস্যের সংজ্ঞায় বলা হয়েছে- ‘সকল প্রকার কোমল ও কঠিন অস্থি বিশিষ্ট মৎস্য, সাদু ও লবণাক্ত পানির চিংড়ি, উভচর জলজপ্রাণী, কাকড়া জাতীয় প্রাণী, শামুক, ঝিনুক, ব্যাঙ এবং এসব জলজপ্রাণীর জীবন্ত কোষকে মৎস্য হিসেবে গণ্য করা হবে’। প্রস্তাবিত আইনে মৎস্য ও মৎস্যপণ্যে ভেজাল, অপদ্রব্যের মিশ্রণ ও অনুপ্রবেশ করানো এবং ক্ষতিকারক রাসায়নিক নিষিদ্ধ করা হয়েছে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
আইনটি পাস হলে খামার পর্যায়ে ব্যবহার নিষিদ্ধ ওষুধ ও রাসায়নিক ব্যবহার করা যাবে না জানিয়ে শফিউল বলেন, মৎস্য ও মৎস্যপণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানায় ফ্রেশ মাছ প্রক্রিয়া করতে হবে। পচা, দূষিত, ভেজাল ও অপদ্রব্য মিশ্রিত মৎস্য ও মৎস্যপণ্য বাজারজাত করা যাবে না। “এসব পণ্য বাজারজাত করলে দুই বছর কারাদণ্ড বা পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা করা হবে। আগে এই অপরাধের জন্য তিন মাস জেল, পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড দেওয়া হত।”
আইন অমান্য করলে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, পরিদর্শক বা পরিদর্শনকারী কর্মকর্তা কোনো ব্যক্তিকে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত প্রশাসনিক জরিমানা করতে পারবেন বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব। দ্বিতীয় দফায় একই অপরাধ করলে সাজা দ্বিগুণ হয়ে যাবে। উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে নির্ধারিত পদ্ধতিতে লাইসেন্স না নিয়ে মানুষের খাদ্য হিসেবে মৎস্য ও মৎস্যপণ্য আমদানি করতে পারবে না বলেও প্রস্তাবিত আইনে বিধান রাখা হয়েছে। তবে সরকার প্রয়োজনে গেজেট প্রজ্ঞাপন দিয়ে নির্ধারিত মৎস্য ও মৎস্যপণ্য আমদানি করার এক বা একাধিক শর্ত থেকে অব্যাহতি দিতে পারবে বলেও জানান শফিউল।