মানব সম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পে প্রায় ৫৭ কোটি টাকা অনুদান দিচ্ছে জাপান। অনুদানের অর্থ বাংলাদেশের ৩০ জন সরকারী তরুণ কর্মকর্তাদের জাপানে উচ্চশিক্ষার জন্য ব্যয় হবে। এসব কর্মকর্তা জাপানের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে জন প্রশাসন, অর্থনীতি, বিচার ব্যবস্থা, নগর পরিকল্পনা, পাবলিক ফিন্যান্স, ইনভেস্টমেন্ট পলিসি ইত্যাদি বিষয়ে মাস্টার্স/ পিএইচডি করার সুযোগ পাবেন।
মঙ্গলবার রাজধানীর শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে এ বিষয়ে বাংলাদেশ ও জাপানের সরকারের মধ্যে ‘বিনিময় নোট’ এবং ‘অনুদান চুক্তি’ সই হয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব কাজী শফিকুল আযম এসব চুক্তিতে সই করেন। জাপানের রাষ্ট্রদূত মাসাতো ওয়াতানাবে ‘বিনিময় নোটে’ এবং ঢাকায় নিযুক্ত জাইকার চিফ রিপ্রেজেনটিটিভ তাকাতোশি নিশিকাতা ‘অনুদান চুক্তিতে’ সই করেন। জানা গেছে, ‘দ্য প্রজেক্ট ফর হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট স্কলারশিপ’ শীর্ষক প্রকল্পের তিন ও চার বছরমেয়াদী চক্র আলাদাভাবে ৩৪৫ ও ৪৪৫ মিলিয়ন জাপানী ইয়েন অনুদান সহায়তা প্রদান করবে। দেশীয় মুদ্রায় এর পরিমাণ যথাক্রমে ২৫ ও ৩২ কোটি টাকা।
অনুষ্ঠানে কাজী শফিকুল আযম বলেন, সরকারী কর্মকর্তাদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে প্রকল্পটি ভূমিকা রাখছে। গত জুন মাসে ৩৮ তম ওডিএ ঋণ প্যাকেজ বিষয়ে জাপানের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এখন আমরা ৩৯তম প্যাকেজের প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে নতুন ঋণ প্যাকেজে আরো মেগা প্রকল্পে ঋণ নেওয়া এবং অর্থ ছাড় কিভাবে বাড়ানো যায় সে বিষয়ে উদ্যোগ নেয়া। জাপানের রাষ্ট্রদূত বলেন, প্রকল্পের আওতায় ২০১০ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর ১৫ জন সরকারী কর্মকর্তা জাপানে উচ্চশিক্ষার সুযোগ পেয়েছেন। আরও বেশি কর্মকর্তাদের সুযোগ দিতে এখন এই সংখ্যা দ্বিগুণ করে ৩০ জনে উন্নীত করা হয়েছে। কর্মকর্তাদের জন্য চলতি বছর থেকে পিএইচডি প্রোগ্রাম চালুর সিদ্ধান্তও হয়েছে।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে জানানো হয়, প্রকল্পটি ২০০১ সাল হতে চলমান রয়েছে এবং ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত চলবে। জাপান সরকার প্রতি বছর এ প্রকল্পে অনুদান সহায়তা দেয় এবং সে অনুযায়ী প্রতি বছর জাপান সরকারের সাঙ্গে বিনিময় নোট ও অনুদান চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়ে থাকে। প্রকল্পটির আওতায় ২০১৬ সাল পর্যন্ত মোট ৪ হাজার ৩৩০ মিলিয়ন জাপানী ইয়েন অনুদান সহায়তা পাওয়া গেছে। এ প্রকল্পের আওতায় বিসিএস ক্যাডার কর্মকর্তা এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তাদের জাপানের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ২ বছর মেয়াদী মাস্টার্স কোর্সে অধ্যয়নের জন্য বৃত্তি প্রদান করা হয়। প্রকল্পের অধীনে জাপানে অধ্যয়নের সুযোগপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের প্রদত্ত বৃত্তির শতভাগ অর্থ জাইকার মাধ্যমে জাপানে প্রদান করা হয়।
এ পর্যন্ত ২৪০ জন কর্মকর্তা এ প্রকল্পের আওতায় জাপান হতে মাস্টার্স ডিগ্রী অর্জন করেছেন। বর্তমানে ৫৪ জন কর্মকর্তা জাপানে অধ্যয়নরত আছেন এবং ৩০ জন কর্মকর্তা সর্বশেষ ব্যাচে জাপানের অধ্যয়নের জন্য নির্বাচিত হয়েছেন।