ইউরোপীয় সেবা গ্রহীতাদের ব্যক্তিগত তথ্য পাচারের দায়ে বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের মূলপ্রতিষ্ঠান মেটাকে প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকা জরিমানা করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) ডেটা সুরক্ষা বিষয়ক নিয়ন্ত্রক সংস্থা ইউরোপিয়ান ডেটা প্রটেকশন বোর্ড।
ইউরোপীয় সেবা গ্রহীতাদের ব্যক্তিগত তথ্য পাচারের দায়ে এই জরিমানা করা হয়েছে। তথ্য পাচারের অভিযোগে এ পর্যন্ত ইউরোপীয় ডেটা প্রটেকশন বোর্ড যত জরিমানা জারি করেছে, আর্থিক অঙ্কের হিসেবে সেসবের মধ্যে এটি সর্বোচ্চ জরিমানা।
সেই সঙ্গে আগামী ছয় মাস ফেসবুকের ইউরোপীয় সেবা গ্রহীতাদের ব্যক্তিগত তথ্য প্রক্রিয়াজাত করতে নিষেধাজ্ঞাও দেয়া হয়েছে। আয়ারল্যান্ডের ‘ডেটা প্রটেকশন কমিশন (ডিপিসি)’র মাধ্যমে এই শাস্তি দেয়া হয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ‘জেনারেল ডেটা প্রটেকশন রেগুলেশন (জিডিপিআর)’ নামে পরিচিত প্রাইভেসি আইনের অধীনে।
ইউরোপিয়ান ডেটা প্রটেকশন বোর্ডের চেয়ারম্যান আন্দ্রেয়া জেলিনেক জানিয়েছে, ইউরোপের বিভিন্ন দেশে লাখ লাখ মানুষ ফেসবুক ব্যবহার করেন। তাই ব্যক্তিগত তথ্যের পাচারের পরিমাণও বিশাল এবং বেশ ধারাবাহিক ও পদ্ধতিগতভাবে এসব তথ্য পাচার হয়েছে বলে আমাদের অনুসন্ধানে এসেছে।
তিনি আরো বলেন, কারো ব্যক্তিগত গোপনীয়তার লঙ্ঘন করার অর্থ তার ব্যক্তিস্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের শামিল। এই অনাকাঙিক্ষত জরিমানার মাধ্যমে আমরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোকে এই সতর্কবার্তা দিতে চাইছি যে, ইউরোপে যে কেউ যদি অন্যের ব্যক্তিগত গোপনীয়তার লঙ্ঘন ঘটলে সুদূরপ্রসারী পরিণতি ভোগ করতে হবে তাকে।
এদিকে মেটা জানিয়েছে, তারা এই রায়ের বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হবে। তাদের মতে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের এই জরিমানা মেটার দুরভিসন্ধি বা গাফিলতির জন্য নয় বরং এটি একটি ‘আইনি জটিলতা’।
মেটা সদর দফতরের গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স বিভাগের শীর্ষ নির্বাহ নিক ক্লেগ এবং মেটার প্রধান লিগ্যাল অফিসার জেনিফার নিউস্টেড এক বিবৃতিতে বলেন, মেটা যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক কোম্পানি। ফলে আমরা মার্কিন আইন অনুযায়ী কোম্পানি পরিচালনা করতে বাধ্য। ব্যক্তিগত ডেটা ও গোপনীয়তা রক্ষা সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের প্রচলিত আইন ইউরোপের আইন থেকে ভিন্ন।
কোম্পানির বিবৃতিতে আরো বলা হয়, সমস্যাটি সমাধানের জন্য ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের নীতিনির্ধারকরা বৈঠক শুরু করেছেন। সমাধানে আসার পরিস্থিতিও তৈরি হচ্ছিল। তার মধ্যেই এই জরিমানা জারি করা হয়েছে।তথ্যসূত্র:বনিকবার্তা