বয়স চল্লিশ পার হতেই ওজন বেড়ে যাওয়ার প্রবণতা থাকে। খাদ্যাভ্যাসে অনিয়ম, ব্যায়ামের প্রতি অনীহা এবং নিজের প্রতি যত্নের অভাব— নানা কারণেই শরীরের চারপাশে জমতে থাকে মেদের আস্তরণ। একদম ছিপছিপে চেহারা অনেকেরই পছন্দ। কিন্তু সামান্য মেদসঞ্চয় এবং শরীর ফুলেফেঁপে ওঠার মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। এতে যেমন কাজকর্মে সমস্যা হয়, শরীরে নানা রকম রোগ বাসা বাঁধে, তেমনই আত্মবিশ্বাসও চিড় খায়।
হৃদ্রোগ, ডায়াবিটিস এবং অস্থিসন্ধির সমস্যা সবচেয়ে বেশি দেখা যায় মোটা হলে। এমনকি, একাধিক গবেষণায় হদিস মিলেছে, ক্যানসারের সঙ্গেও সম্পর্ক রয়েছে স্থূলতার।
জিনঘটিত কারণে এবং গঠনগত কারণে অনেকে মোটা হয়। সেটা অধিকাংশ ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণের বাইরে। বাকি সব কারণ কিন্তু আমাদের সৃষ্টি করা। যেমন, খাদ্যাভ্যাস, কায়িকশ্রম না করা, থাইরয়েড, মানসিক চাপ, হরমোন এবং জীবনধারণ। এমন কিছু খাবার আমরা নিয়মিত খাচ্ছি যা দেহের মধ্যে প্রচুর ফ্যাটের জন্ম দিচ্ছে। তা ছাড়া, জীবনের নানা ক্ষেত্রে আমরা এখন অতিরিক্ত যন্ত্রনির্ভর হয়ে পড়ছি। জামাকাপড় কাচা, ঘর পরিষ্কার করা, উবু হয়ে বসে তরকারি কাটা, মশলা বাটার মতো কাজ এখন অধিকাংশ বাড়িতে যন্ত্রের মাধ্যমেই করা হয়। দীর্ঘ ক্ষণ অফিসের ডেস্কে বসে কাজ, শরীরচর্চার অভাব— এই সবেরই ফল হল স্থূলতা।
মানসিক চাপ বাড়লে অনেকের মধ্যেই বেশি খাওয়ার প্রবণতা দেখা যায়। যা থেকে ওজন বাড়ে। আবার থাইরয়েড থেকেও মোটা হয় অনেকে। আবার চল্লিশের পর ঋতুঃবন্ধের সময় এগিয়ে আসতে থাকে, শরীরে হরমোনজনিত নানা পরিবর্তন ঘটে। তাতেও কিন্তু অনেকের ওজন বাড়ে।
খাবার ব্যাপারে লোভ সম্বরণ করতেই হবে। পরিমিত খাওয়া, বার বার খাওয়া ভাল। মিষ্টি, ঘি, মাখন খাদ্যতালিকায় যত কম রাখবেন, ততই ভাল। রোজ অল্প হলেও ব্যায়াম করুন। সময়ের অভাব থাকলে মাঝেমাঝে হাঁটাহাঁটি করুন।
সারা দিনে বার বার অল্প করে খাওয়াই বিধেয়। এক বার ভারী খাওয়ার পরিবর্তে চার ঘণ্টা পর পরের খাবার খাওয়া উচিত। আমাদের সাধারণ ভাবে দৈনিক ১৬০০-১৮০০ ক্যালোরির দরকার হয়, সেই বুঝেই খাদ্যতালিকা বানিয়ে নিন। প্রয়োজনে পুষ্টিবিদদের সাহায্য নিন। ভুলেও রোগা হওয়ার ওষুধ খাবেন না। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। শাকসব্জি, ফল, প্রোটিনজাত দ্রব্য ডিম-দুধ বেশি করে খান। চায়ে চিনি বর্জন করতে পারলে ভাল। ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম কিন্তু খুব জরুরি। সন্ধে ৮টার পর যতটা সম্ভব কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার বর্জন করুন। তথ্য সূত্র -আনন্দবাজার।