রাষ্ট্রদ্রোহের অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করে মঙ্গলবার পেশোয়ার হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি ওয়াকার আহমাদ শেঠ নেতৃত্বাধীন তিন বিচারকের বেঞ্চ পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। ২০০৭ সালের ৩ নভেম্বর অবৈধভাবে সংবিধান স্থগিত করে জরুরি অবস্থা জারি করার অভিযোগে এই রায় দেয়া হয়। মোশাররফ বর্তমানে সংযুক্ত আরব আমিরাতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
রায়ে আরো বলা হয় আইনশৃ্ঙ্খলা বাহিনীর হাতে ধরা পড়ার আগে সাবেক স্বৈরশাসক জেনারেল পারভেজ মোশাররফ মারা গেলে তার লাশ এনে পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে পার্লামেন্টের বাইরে চৌরাস্তায় তিনদিন দড়িতে ঝুলিয়ে রাখতে হবে। বৃহস্পতিবার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর এ তথ্য জানা গেছে। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
খবরে বলা হয়, মোশাররফের মৃত্যুর রায়ে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী ও বিচার বিভাগের মধ্যে দ্বন্দ্ব তীব্র সৃষ্টি হয়েছে। দেশটির ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কোনো সেনাপ্রধানকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে।
মোশাররফ বর্তমানে শারীরিক চিকিৎসার জন্য দুবাইয়ে অবস্থান করছেন। তার শাস্তি নিশ্চিত করতে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। কিন্তু যদি এর আগেই তার মৃত্যু হয় তাহলে, তার লাশ ইসলামাবাদের মূল সড়কে পার্লামেন্টের ঠিক বাইরে নিয়ে তিন দিন ধরে ঝুলিয়ে রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
আইনি বিশেষজ্ঞরা আদালতের এ রায়ের তীব্র সমালোচনা করেছেন। বলেছেন, প্রতীকী হলেও এই রায় অসাংবিধানিক। এর আগে এ ঘরানার প্রতীকী রায়ের ঘটনা একবারই ঘটেছে দেশটিতে। এক সিরিয়াল খুনীকে জনসম্মুখে ঝুলিয়ে ফাঁসি দেয়ার রায় দেয়া হয়েছিল। ফাঁসির পর খুনীর দেহ তার শিকারদের পরিবারের সামনে ১০০ খণ্ড করার নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। তবে ওই নির্দেশ কার্যকর হয়নি।
পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী ফেরদৌস আশিক আওয়ান বুধবার জানান, সরকারের আইনজীবীদের দল, রায়ে ভুল ও ফাঁক-ফোকর পেয়েছে। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সঙ্গে আলোচনা করেছে আইনজীবীরা।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৯ সালের ১২ অক্টোবর এক অভ্যুত্থানে নওয়াজ শরিফের সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে ক্ষমতায় এসেছিলেন মোশাররফ। ২০০৭ সালের ৩ নভেম্বর জরুরি অবস্থা জারির জন্য মোশাররফকে ২০১৪ সালে অভিযুক্ত করা হয়। মামলার শুনানিতে বারবার তলব করা সত্ত্বেও মোশাররফ আদালতে হাজির হননি। ২০১৬ সাল থেকে তিনি দেশের বাইরে রয়েছেন। আদালত তাকে পলাতক ঘোষণা করেন।