যকৃৎ বা লিভার আমাদের শরীরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ। আমাদের শরীরের যত ক্ষতিকারক টক্সিন জমে, তা শরীর থেকে ছেঁকে বের করে দেয় এই লিভার। লিভারের স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা নষ্ট হলে শরীরে জমে যাওয়া টক্সিন শরীরেই থেকে যাবে। এর ফলে শরীরের একের পর এক অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিকল হতে শুরু করবে। তাই শরীর সুস্থ রাখতে লিভার সুস্থ রাখা অত্যন্ত জরুরী। কিন্তু অজান্তেই বেশ কয়েকটি অভ্যাস আমাদের লিভারের মারাত্মক ক্ষতি করে চলেছে। সময় মতো সতর্ক না হলে, অকালেই লিভার তার স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলবে। আসুন জেনে নেওয়া যাক এমন সেই অভ্যাসের কথা, যেগুলি আমাদের অজান্তেই লিভারের মারাত্মক ক্ষতি করে চলেছে-
♦ সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর দীর্ঘক্ষণ খাবার না খেয়ে থাকার অভ্যাসও লিভারের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকর! দীর্ঘদিন ধরে এই অনিয়ম চলতে থাকলে লিভার তার স্বাভাবিক কর্মক্ষমতাও হারিয়ে ফেলে।
♦ অনেকেই সকালে ঘুম থেকে উঠে যাওয়ার পরও আলস্য করে পায়খানা-প্রস্রাবের চেপে রেখেই শুয়ে থাকেন। এই অভ্যাসও লিভারের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকর! দীর্ঘদিন ধরে এই অনিয়ম চলতে থাকলে লিভার তার স্বাভাবিক কর্মক্ষমতাও হারায়।
♦ অতিরিক্ত পরিমাণে কাঁচা খাবার-দাবার খাওয়ার অভ্যাস আমাদের লিভারের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর! যদি অতিরিক্ত পরিমাণে ফলমূল বা কাঁচা সবজি খাওয়া হয়, সে ক্ষেত্রে সেগুলি হজম করাতে পরিপাকতন্ত্রের উপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে। এর প্রভাব পড়ে আমাদের লিভারের উপরেও।
♦ দেরি করে ঘুমোতে যাওয়া এবং দেরি করে ঘুম থেকে ওঠা— দু’টোই লিভারের পক্ষে ক্ষতিকর। এই অভ্যাসের ফলে হজমের নানা সমস্যা-সহ শরীরের একাধিক সমস্যা সৃষ্টি হয়। এর মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে লিভারের উপরে।
♦ মাত্রাতিরিক্ত পরিমাণে ওষুধ খেলে লিভার নষ্ট হয়ে যেতে পারে৷ বিশেষ করে অতিরিক্ত পরিমাণে ব্যথা কমানোর ওষুধ খেলে লিভারের কর্মক্ষমতা ক্রমশ হ্রাস পায়। এ ছাড়াও ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
♦ অতিরিক্ত পরিমাণে মদ্যপানের অভ্যাস অকালে লিভার নষ্ট হয়ে যাওয়ার অন্যতম একটি কারণ। অ্যালকোহলের ক্ষতিকর উপাদান আমাদের লিভারের মারাত্মক ক্ষতি করে।
♦ খারাপ তেলে ভাজা কোনও খাবার বা অতিরিক্ত তৈলাক্ত খাবার লিভারের জন্য খুবই ক্ষতিকর। দীর্ঘদিন ধরে এই ধরনের খাবার খাওয়ার অভ্যাস থাকলে লিভার তার স্বাভাবিক কর্মক্ষমতাও হারিয়ে ফেলতে পারে।
♦ মাত্রাতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়াদাওয়ার অভ্যাসও লিভারের পক্ষে ক্ষতিকর। কোনও পদ খুব পছন্দ হয়েছে বলে অনেকেই দৈনন্দিনের তুলনায় অনেকটাই বেশি পরিমাণে খেয়ে ফেলেন। এর ফলে হঠাৎ করে লিভারের উপরে বেশি চাপ পড়ে এবং লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হয় তার স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা।
♦ ক্ষতিকর রাসায়নিক রং যুক্ত যে কোনও খাবারই আমাদের লিভারের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর! কিন্তু কৃত্রিম রং বা স্বাদ-যুক্ত খাবারদাবার আমরা অনেকেই আমাদের অজান্তে খেয়ে থাকি। কৃত্রিম রং বা স্বাদ-যুক্ত খাবারদাবার নিয়মিত খাওয়ার ফলে এগুলির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হয়।