সারা বিশ্বে নারী ক্ষমতায়নের অংশ হিসেবে কর্মক্ষেত্রে বাড়ছে নারীর অংশগ্রহণ। তবে চ্যালেঞ্জিং পেশাগুলোতে নারীর অংশগ্রহণ এখনো অতি সামান্য। আর যেকোনো প্রতিষ্ঠানের বড় পদগুলোতে বা নীতি নির্ধারকদের জায়গায় নারীরা বিরল।
সারা বিশ্বের নারী অবস্থানের চিত্র যখন এই, তখন আফগানিস্তানের পুরো একটি টেলিভিশন চ্যানেল পরিচালিত হচ্ছে নারীদের হাতেই। চ্যানেলটির নাম ‘জেন’, যার অর্থ নারী। টেলিভিশনটির প্রতিষ্ঠাতা, প্রযোজক, সম্পাদকসহ সবাই নারী। নেই কোনো পুরুষ।
এটিই পৃথিবীর প্রথম এবং একমাত্র নারী পরিচালিত গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান। আর নারীভিত্তিক এই প্রতিষ্ঠানটি কাজও করে থাকে নারীদের জন্য। নারীদের নানা সমস্যার ওপর, তাদের উন্নয়নই জেন টিভির প্রধান বিষয়। টেলিভিশন ক্যামেরায় শুধু চেহারা প্রদর্শনের জন্যই নয়, নারীরা তদন্ত, প্রতিবেদন ও পরিচালনার মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো করার জন্যও পুরোপুরি উপযুক্ত। নারীর প্রতি দৃষ্টিভঙ্গির এমনই পরিবর্তন আশা করে জেন টেলিভিশন।
চ্যানেলটির প্রধান প্রতিবেদক সেগোফা সিদ্দিকী বলেন, ‘আমার জীবনের সবচাইতে আনন্দের মুহূর্ত ছিল, যখন আমি টিভি ক্যামেরার সামনে রিপোর্ট করেছিলাম। কথা বলেছিলাম, নারীদের বিভিন্ন সমস্যার কথা, সমাজে যেগুলোর সম্মুখীন নারীরা প্রতিনিয়ত হন।’
সেগোফা সিদ্দিকী জানান, সাংবাদিকতার মতো পেশায় নারীরা প্রতিনিয়ত টিকে আছে অনিরাপত্তা ও সহিংসতার হুমকির সঙ্গে যুদ্ধ করে। তবুও তিনি আশা করেন জেন টেলিভিশন তরুণীদের নিজের স্বপ্ন পূরণে অনুপ্রেরণা জোগাবে।সেগোফা সিদ্দিকী বলেন, ‘তাদের নিজেদেরই সাহস ও সামর্থ্য প্রমাণ করতে হবে। যাতে ভবিষ্যতের নারীদের জন্য তাঁরা দৃষ্টান্ত হয়ে উঠতে পারে।’
১৯৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত কাবুল যখন তালেবানের দখলে ছিল, সাংবাদিকতায় তো দূরে থাক, নারীদের লেখাপড়াও নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। কিন্তু তালেবানের পতনের পর পরবর্তী ১৬ বছরে উঠে আসতে থাকে আফগানিস্তানের নারীরা। অংশ নিতে থাকে বিভিন্ন সামাজিক ও পেশাগত ক্ষেত্রে।
সিএনএনের করা আফগানিস্তানের নারী সাংবাদিকদের ওপর প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, দেশটির গণমাধ্যমগুলোতে বর্তমানে মাত্র এক হাজার ৩৭ জন নারী কর্মরত।