পেটের মেদ নিয়ে অনেকেই অস্বস্তিতে ভোগেন। অস্বাস্থ্যকর জীবনধারা এবং ভ্রান্ত খাদ্যাভ্যাসই মূলত পেটের মেদের জন্য দায়ী। আমাদের দৈনন্দিন জীবনের কিছু বদ অভ্যাস রয়েছে, যেগুলো পেটের মেদ বাড়িয়ে দেয়।
সকালের নাস্তা না খাওয়াঃ সারারাত ঘুমের পর সকালের পুষ্টিকর নাস্তা সারাদিনের শক্তি যোগায়। অনেকেই তাড়াহুড়া করে সকালের নাস্তা না খেয়েই কাজে বেরিয়ে যান, এটি খুবই অনুচিত। কারণ নাস্তা না খেলে শরীরের বিপাক ক্রিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে মেদ জমতে শুরু করে।
ডেস্কের কাজঃ সারাদিন ডেস্কে বসে কাজ করলে পেটের মেদ বেশি বাড়ে। নারী পুরুষ সবাই এ সমস্যায় ভোগেন। তাই ডেস্কে কাজ করতে হলে একটানা বসে কাজ করবেন না। মাঝে মাঝে উঠে হাটা হাটি করবেন।
পরিমান মত না খাওয়াঃ পরিমান মত না খাওয়া পেটের মেদ বাড়ানোর আরেকটি বড় কারণ। শরীরকে সুন্দর গঠনে এবং সুস্থ রাখতে পরিমান মত পুষ্টিকর খাবার খাওয়া জরুরি। অনেকেই রয়েছেন না ভেবেই যখন তখন অস্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে ফেলেন। এই অভ্যাস মেদ বাড়ানোর জন্য দায়ী।
শারীরিক ব্যায়াম না করাঃ সুস্থ থাকার জন্য শারীরিক ব্যায়াম করার কোন বিকল্প নেই। শারীরিক ব্যায়াম শরীরের অপ্রয়োজনীয় বাড়তি ক্যালরি পুড়িয়ে ফেলে। তাই যখন নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম বা হাটা হাটি করা শুরু করবেন তখন আস্তে আস্তে পেটের মেদও কমতে শুরু করবে।
রাতে দেরি করে খাওয়াঃ আমরা জানি খাওয়ার পর তা হজম হওয়ার জন্য যথেষ্ট সময়ের প্রয়োজন। রাতে ভরপেট খাবার খেয়ে সাথে সাথেই ঘুমাতে গেলে সেই খাবার সঠিকভাবে হজম হওয়ার সময় পায়না এর ফলে তা পেটের মেদ হিসেবেই জমা হয়।
অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসঃ প্রক্রিয়াজাত খাবার, কার্বনেটেড ড্রিঙ্কস, এলকোহল, ফাস্ট ফুড ইত্যাদি জাতীয় খাবারগুলো দেহে খুব দ্রুত ক্যালোরির পরিমাণ বাড়ায়। কারণ এসব খাবারগুলোতে চিনি ও ক্যালরির পরিমান খুব বেশি থাকে যা পেটের মেদ বৃদ্ধির জন্য দায়ী।
রাত জাগা বা ঘুমের অপর্যাপ্ততাঃ সুস্বাস্থ্যের জন্য রাতে ৭ – ৮ ঘণ্টা ঘুম জরুরি। রাতে ঘুম না হওয়াও মেদ বাড়ার জন্য দায়ী। অনেকে রাত জেগে কাজ করেন এতে ঘুম কম হয় ফলে মেদ বাড়তে থাকে অনিয়ন্ত্রিতভাবে। আর রাতে ঘুমানোর অন্তত ৩ ঘণ্টা আগে রাতের খাবার শেষ করুন। রাতে ক্ষুধা লাগলে স্ন্যাকস জাতীয় খাবার খাবেন না। ফল অথবা পুষ্টিকর খাবার খান।
ক্ষুধা না লাগলেও খাওয়াঃ পেটের ক্ষুধা মিটলেও অনেক সময় মনের ক্ষুধা মেটানোর জন্য এটা-সেটা খাওয়া হয়ে যায়। এই অভ্যাস খুবই ক্ষতিকর শরীরের জন্য। এতে দ্রুত মেদ বাড়ে।
সময়মত খাবার না খাওয়াঃ অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর। অনেকক্ষণ আগেই ক্ষুধা লেগেছে, কিন্তু খাওয়ার সময় পাচ্ছেন না। আবার যখন সময় পেলেন, তখন অনেক বেশি খেয়ে ফেললেন। এ ধরনের অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনের কারণে পেটে মেদ জমে। তাই এই অবস্থা এড়ানোর জন্য সঠিক সময় এবং সঠিক বিরতিতে খাবার গ্রহণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একবারে বেশি না খেয়ে বারবার অল্প করে খাওয়া স্বাস্থ্যসম্মত।
প্রোটিনযুক্ত খাবার কম খাওয়াঃ প্রোটিন জাতীয় খাবার আমাদের দেহের রক্তের শর্করার ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য খুবই জরুরি। এটি দেহের বিপাক ক্রিয়াকে বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে দেহে চর্বি পরিমাণ কমায়। তাই যদি কম প্রোটিনযুক্ত খাবার খাওয়া হয় তাহলে দেহে চর্বির পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
ভুল গুলো জেনে সঠিক খাবার গ্রহণ এবং নিয়ম কানুন মেনে চললেই খুব অল্প সময়েই ভাল ফল পাওয়া সম্ভব। এজন্য দরকার একটু সচেতনতা, ইচ্ছা শক্তি আর শারীরিক পরিশ্রম বা ব্যায়াম।