আসন্ন পবিত্র রমজান ও ঈদ-উল-ফিতরকে কেন্দ্র করে সব ধরনের চাঁদাবাজি বন্ধে তৎপর থাকার জন্য পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন বাংলাদেশ পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল এ কে এম শহীদুল হক বিপিএম, পিপিএম। তিনি বলেন, কোন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আইজিপি ২৩ মে, ২০১৭ মঙ্গলবার বিকেলে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের সম্মেলন কক্ষে পবিত্র রমজান ও ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে আইন-শৃঙ্খলা এবং ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত সভায় সভাপতিত্বকালে এ নির্দেশ দেন।
আইজিপি বলেন, মহাসড়ক যানজট মুক্ত রাখা এবং সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে মহাসড়কে নছিমন, করিমন, ভটভটি, থ্রি হুইলার এবং ইজিবাইক ইত্যাদি যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখতে হবে। সুষ্ঠুভাবে যানবাহন চলাচলের সুবিধার্থে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া পুলিশ কোন যানবাহন তল্লাশি করবে না। মহাসড়কে ডাকাতি প্রতিরোধ এবং যানজট নিরসনে হাইওয়ে এবং জেলা পুলিশ বিশেষ তৎপর থেকে দায়িত্ব পালন করবে।
আইজিপি ফরমালিন ও রাসায়নিক উপাদান মিশ্রিত ফল, ভেজাল ইফতার ও অন্যান্য খাদ্যদ্রব্য বিরোধী মোবাইল কোর্ট পরিচালনার নির্দেশ দেন। তিনি নিষ্ঠা ও পেশাদারিত্বের সাথে দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে পবিত্র রমজান ও ঈদ উদ্যাপন নির্বিঘœ করার জন্য সকল স্তরের পুলিশ সদস্যদের নির্দেশ দেন।
সভায় পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি (প্রশাসন) মোঃ মোখলেসুর রহমান, রেলওয়ের অতিরিক্ত আইজিপি আবুল কাশেম, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের মহাপরিচালক মোঃ নওশের আলী, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মোঃ আছাদুজ্জামান মিয়া, সকল পুলিশ কমিশনার, রেঞ্জ ও হাইওয়ে পুলিশসহ অন্যান্য ইউনিটের ডিআইজিবৃন্দ, ঢাকা, গাজীপুর, টাঙ্গাইল, মুন্সিগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, নারায়নগঞ্জের পুলিশ সুপারসহ এনএসআই, ডিজিএফআই, আনসার ও ভিডিপি, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এবং ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এবং বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সভায় পবিত্র রমজান মাসের সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা, ট্রেন, বাস ও লঞ্চের নিরাপদ চলাচল ও যাত্রীদের নিরাপত্তা, ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ও ব্যবস্থাপনা, ঈদ জামায়াতের নিরাপত্তা এবং জাল টাকার অপব্যবহার রোধ ইত্যাদি সম্পর্কে বিশদ আলোচনা করা হয়। ঢাকা মহানগরসহ সারাদেশে চাঁদাবাজি, ছিনতাই ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপ রোধে বিশেষ নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
রেলওয়ে স্টেশন, বাস ও লঞ্চ টার্মিনালে পকেটমার ও অজ্ঞানপার্টির তৎপরতা প্রতিরোধে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের নিয়োজিত করা হবে। ঢাকা মহানগরীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের বড় বড় শহরে বিপণী বিতান ও শপিংমল যথাসম্ভব সিসিটিভির আওতায় এনে কমিউনিটি পুলিশের সমন্বয়ে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। জনসাধারণের সার্বিক কেনা-কাটার সুবিধার্থে এবং তারাবির নামাজের সময় অপরাধমূলক তৎপরতা প্রতিরোধে গভীর রাত পর্যন্ত পর্যাপ্ত নৈশ টহলের ব্যবস্থা করা হবে। ব্যাংক ও অর্থলগ্নী প্রতিষ্ঠানে বড় অংকের আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে পুলিশ জনসাধারণকে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করবে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যেমন-ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউব ইত্যাদি এবং মোবাইল ফোনে বিভ্রান্তিমূলক পোস্ট, মন্তব্য এবং ছবি আপলোড করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট অথবা গুজব ছড়ানোকারীদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
প্রিয়জনের সাথে ঈদ উদ্যাপনের জন্য ঘরমুখো মানুষের নিরাপদ যাতায়াতের জন্য রেলওয়ে স্টেশন, বাস ও লঞ্চ টার্মিনালে টিকেট কালোবাজারী প্রতিরোধে পুলিশ, মালিক ও শ্রমিক নেতৃবৃন্দ এবং কমিউনিটি পুলিশের সমন্বয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। জাতীয় ঈদগাহ ময়দানসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের ঈদ জামাতস্থলে পর্যাপ্ত নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।