ডিএমপি নিউজ: রাজধানীর সিদ্দিকবাজারের কুইন্স স্যানিটারি মার্কেট ভবনে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় ৩ জনকে আটক করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা-লালবাগ বিভাগ।
গ্রেফতারকৃতরা হলো- ওয়াহিদুর রহমান, মতিউর রহমান ও আ: মোতালেব মিন্টু। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে ওয়াহিদুর রহমান ও মতিউর রহমান ভবন মালিক এবং আব্দুল মোতালেব মিন্টু একটি দোকানের মালিক।
বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ ২০২৩) দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বিপিএম (বার), পিপিএম (বার)।
তিনি বলেন, রাজধানীর সিদ্দিকবাজারের যে ভবনটিতে বিস্ফোরণ ঘটে তার নাম কুইন্স স্যানিটারি মার্কেট। এক সময় এটির নাম ছিল কুইন্স ক্যাফে। ১৯৯২ সালে রাজউক থেকে ভবনটির প্ল্যান পাশ করানো হয়। প্রথমে ভবনটির বেইজমেন্টে ছিল রান্নাঘর আর একতলায় ছিল খাবারের হোটেল। এই রান্নাঘরে কমার্শিয়াল গ্যাসের বড় লাইন ছিল যা পরে লিখিতভাবে তিতাসের কাছে সমর্পণ করা হয়। ২০০৪ সালে ভবনটির সাত তলা পর্যন্ত সম্পূর্ণ করা হয়। বর্তমানে একটি আন্ডারগ্রাউন্ড বেইসমেন্টসহ সাত তলা পর্যন্ত ভবনটি সম্পূর্ণ আছে।
তিনি বলেন, ভবনটির বেইজমেন্টে পার্কিংয়ের কথা থাকলেও সেখানে এক সময় রান্না ঘর ছিল। সর্বশেষ সেখানে ‘বাংলাদেশ স্যানিটারি’ নামে একটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের মালামাল বিক্রি করা হয়। প্রায় ১৮০০ বর্গফুটের আন্ডারগ্রাউন্ড সম্পূর্ণটাই গ্লাসে ঘেরা। বড় বড় ২টি এসি ব্যবহার করা হয় এখানে। আন্ডারগ্রাউন্ডে আরো আছে একটি বড় পানির ট্যাংক। সাত তলা ভবনের কোথায় সেপটিক ট্যাংক সে বিষয়ে ভবনের মালিকগণও নিশ্চিত নন। ধারণা করা হয়, উত্তর পাশের ভবনের সাথে এ ভবনের যে আড়াই-তিন ফুট গলি আছে সেখানেই দুই ভবনের সেপটিক ট্যাংক অবস্থিত।
তিনি আরো বলেন, বিল্ডিং কোড অনুযায়ী সেই বেইজমেন্টে কার পার্কিং থাকবে, সেপটিক ট্যাংক থাকবে, পানির রিজার্ভার থাকবে। আমরা লক্ষ্য করেছি, সেই বেইজমেন্টের পুরোটা কাঁচ দিয়ে দুইটি এসি লাগিয়ে প্রথমে ভাড়া দিয়েছিল গোডাউন হিসেবে, পরে ভাড়া দেওয়া হয় স্যানিটারি মার্কেট হিসেবে। একজন স্যানিটারি ব্যবসায়ী সেটা ভাড়া নেন এবং সেখানে আরো অনেকগুলো দোকান রয়েছে। সেখানে যে বাতাস আসা-যাওয়া করার কথা, ভেন্টিলেশনের ব্যবস্থা থাকার কথা সেখানে তা নেই।
তিনি বলেন, মার্কেটের বেইজমেন্টের স্পেসটি রাজউকের নীতিমালা অনুসারে খোলামেলা থাকলে, সেখানে কোন ত্রুটি দেখা দিলে তাৎক্ষণিকভাবে নিরসন করা যেত। গ্যাসসহ অন্যান্য সমস্যারও সমাধান করা যেত। বাড়ির মালিকগণ আন্ডারগ্রাউন্ডকে এক সময় রান্না ঘর হিসেবে ব্যবহার করতো। সেই রান্না ঘরের গ্যাসের লাইন যথাযথভাবে অপসারণ না করে তার উপরেই এসি বসিয়ে নির্মাণ সামগ্রীর মার্কেট বানিয়ে দিয়েছেন। দোকানের মালিক বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোডের বিধান না মেনে ভাড়া দিয়েছেন, এমনকি বেইজমেন্টের এক ইঞ্চি জায়গাও ফাঁকা রাখেনি। দোকান বানিয়ে সেখানে তাদের কর্মচারী ও ক্রেতা সাধারণের জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছেন। এতগুলো প্রাণহানি ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতির দায় কোনভাবেই ভবনের মালিক এবং দোকানের মালিক এড়াতে পারেন না।
আটককৃতদের বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।