বিরিয়ানি দক্ষিণ এশিয়ার অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি খাবার এবং এটি বাংলাদেশের ঐতিহ্যের সাথেও ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছে। ধারণা করা হয়ে থাকে, ঠিক যে সময় থেকে ভারতবর্ষে মুসলিম শাসন চালু হয়েছে সেই সময় থেকে বিরিয়ানি প্রচলন চালু হয়েছে। তো চলুন জেনে নেই বিরিয়ানি রান্নার সকল প্রয়োজনীয় তথ্য।
আম্বুর বিরিয়ানিঃ
উপকরণঃ চিকেন ৫০০ গ্রাম, দুটি মাঝারি আকারের পেঁয়াজকুচি, টমেটো দুটি, আদা-রসুন বাটা দেড় টেবিল চামচ, টক দই ১/৪ কাপ, ধনে পাতা ও পুদিনা পাতা অল্প, লবঙ্গ চারটি, দারচিনি ২ ইঞ্চি, তেজপাতা একটি, এলাচ তিনটি, সাদা তেল ১/৪ কাপ, লবণ অল্প, পাতিলেবুর রস অল্প, শুকনো মরিচ ৪-৫টি।
প্রস্তুত প্রণালিঃ চাল ভালো করে ধুয়ে আধঘণ্টা ভিজিয়ে রাখুন। এবার লবঙ্গ, এলাচ ও দারচিনি দিয়ে ভাত ফুটিয়ে নিন। তেল গরম করে তার মধ্যে এক টেবিল চামচ টক দই দিন। এর মধ্যেই লবঙ্গ, এলাচ, দারচিনি ও আদা-রসুন বাটা দিয়ে কষতে থাকুন। একে একে মরিচ বাটা, চিকেন, পুদিনা পাতা, ধনে পাতা, পেঁয়াজ কুচি, টমেটো, লবণ, বাকি টক দই ও পাতিলেবুর রস দিয়ে কষতে থাকুন। এবার এক কাপ পানি দিয়ে পনেরো মিনিট ঢেকে দিয়ে ভালো করে রান্না করুন। মাংস অধাসিদ্ধ হয়ে এলে নামিয়ে নিন। এবার অন্য একটি পাত্রের নিচে সাদা তেল লাগিয়ে প্রথমে ভাতের স্তর তৈরি করুন। এর ওপরে মাংসের স্তর তৈরি করে নিন। এবার ১৫-২০ মিনিট দম দিন। রান্না হয়ে গেলে ঢাকনা খুলে বিরিয়ানির ওপরে ধনেপাতা ছড়িয়ে রায়তার সঙ্গে পরিবেশন করুন।
গোয়ান প্রন বিরিয়ানিঃ
উপকরণঃ বড় চিংড়ি ছয়টি, তেল এক টেবিল চামচ, এলাচ দুটি, লবঙ্গ দুটি, তেজপাতা একটি, দারুচিনি একটি, আদা-রসুন ও মরিচ বাটা দুই টেবিল চামচ, বেরেস্তা আধা কাপ, টমেটো দুটি, লবণ অল্প, লাল মরিচের গুঁড়া স্বাদ মতো, পুদিনা পাতা একমুঠো, নারকেল দুধ ২ কাপ, বাসমতি চাল এক কাপ।
প্রস্তুত প্রণালিঃ চাল ভালো করে ধুয়ে আধঘণ্টা ভিজিয়ে রাখুন। এবার লবঙ্গ, এলাচ ও দারুচিনি দিয়ে ভাত অধাসিদ্ধ করে নিতে হবে। তারপর চিংড়ির খোসা ছাড়িয়ে ভাল করে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিন। কম আঁচে তেল গরম করে লবঙ্গ, তেজপাতা, দারুচিনি ও এলাচ দিন। এর মধ্যে পেঁয়াজকুচি ও কাঁচামরিচ দিয়ে পাঁচ মিনিট রান্না করুন। পেঁয়াজে সোনালি রং ধরলে চিংড়ি, আদা-রসুন বাটা, টমেটো ও নারকেলের দুধ দিয়ে ঢাকা দিন। পাঁচ-সাত মিনিট পরে ঢাকনা খুলে নাড়িয়ে নিন। অন্য একটি পাত্রের নিচে ঘি লাগিয়ে প্রথমে ভাতের স্তর ও তার ওপরে চিংড়ির স্তর, তারপরে আবার ভাতের স্তর সাজিয়ে মিনিট দশেক দমে বসান। রান্না হয়ে গেলে ওপর থেকে পুদিনা পাতা ছড়িয়ে পরিবেশন করুন।
সিন্ধি বিরিয়ানিঃ
উপকরণঃ মাটন দেড় কিলোগ্রাম, বাসমতি চাল পাঁচ কাপ, সাদা তেল দেড় কাপ, পেঁয়াজ তিনটি, রসুন বাটা দুই চা-চামচ, আদা বাটা দুই চা-চামচ, মরিচের গুঁড়ো চার চা-চামচ, লবঙ্গ ১০টি, এলাচ ১০টি, গোলমরিচ ১০টি, জিরা দুই টেবিল চামচ, দারুচিনি পাঁচটি, বড় এলাচ চারটি, তেজপাতা পাঁচটি, দই ২৫০ গ্রাম, কাঁচামরিচ ছয়টি, ধনেপাতা দুই টেবিল চামচ, পুদিনা পাতা ২ টেবিল চামচ, লবণ স্বাদমতো।
প্রস্তুত প্রণালীঃ টক দই, আদা-রসুন বাটা, গোলমরিচ গুঁড়ো, গরম মসলা, কাঁচামরিচ বাটা ও লবণ দিয়ে মাটনটা প্রথমে ম্যারিনেট করে রাখতে হবে। এরপরে চালটা আধঘণ্টা ভিজিয়ে রাখতে হবে। তারপর লবণ, গরম মশলা, শাহী জিরা ও গোটা গোল মরিচ দিয়ে ভাতটা অর্ধেক রান্না করে নিন। এবার ম্যারিনেটেড মাটনের ওপরে ধনে গুঁড়া, অল্প জিরার গুঁড়া, আস্ত কাঁচা মরিচ (মাঝখান থেকে চিরে), গোটা গরম মসলা দিয়ে মেখে নিতে হবে। এরমধ্যে পরিমাণ মতো পানি দিয়ে দিন। এবার মাটনের মধ্যে আধাসিদ্ধ চালটা দিয়ে দিন। ওপর থেকে ঘি, সাদা তেল, ধনে পাতা কুচি, পুদিনা পাতা কুচি, বেরেস্তা দিয়ে ঢাকনা চাপা দিতে হবে। এবার ঢাকনাটার মুখ আটার মণ্ড দিয়ে আটকে সিল করে দম দিতে হবে। অন্ততপক্ষে ৪০ মিনিট দম দিন। নামিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন রায়তার সঙ্গে।