রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে প্রথম বৈঠকে অংশ নিতে রাশিয়ায় পৌঁছেছেন উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন। বুধবার (২৪ এপ্রিল) উপকূলীয় শহর ভালদিভোস্তকে ট্রেনযোগে পৌঁছান তিনি। কালই স্থানীয় একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈঠকে বসবেন তারা। আলোচনায় কোরীয় পরমাণু সংকট অগ্রাধিকার পাবে বলে জানিয়েছে মস্কো। বৈঠক সফল হওয়ার বিষয়ে আশাবাদী উত্তর কোরিয়া।
এদিকে বিশ্লেষকরা বলছেন, বৈঠকের মাধ্যমে কোরীয় ইস্যুতে রাশিয়ার গুরুত্ব বিশ্ব দরবারে তুলে ধরতে চাইছে রাশিয়া। বৃহস্পতিবার রাশিয়ার ভালদিভোস্তক শহরে প্রথমবার বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন। বৈঠক ঘিরে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে মস্কো। পুতিন-কিম শীর্ষ সম্মেলনকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন রুশ নাগরিকরা।
এক নাগরিক বলেন, উত্তর কোরিয়াকে আমি অত্যন্ত শ্রদ্ধা করি। বিশেষ করে দেশটির নেতাকে। কারণ তিনি তার পূর্বপুরুষের প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে পরিবর্তন করেননি। আমি তাদের সমর্থন করি। এছাড়া, তাদের পরমাণু অস্ত্র আছে। পশ্চিমা ও পুঁজিবাদের চাপের মধ্যেও উত্তর কোরিয়ার টিকে থাকার এটাই একমাত্র কারণ।
আরেকজন বলেন, প্রেসিডেন্ট পুতিন ও কিম জং উনের বৈঠককে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছি। কারণ তারা আমাদের প্রতিবেশী। তাদের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রাখা আমাদের দায়িত্ব।
বৈঠকে অংশ নিতে ইতোমধ্যে ভালদিভোস্তকে পৌঁছেছেন কিম জং উন। সেখানে পৌঁছালে তাকে অভ্যর্থনা জানান রুশ সামরিক বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা। নিরাপত্তার কারণে ব্যক্তিগত ট্রেনে চড়েই ৬শ’ ৭৫ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেন তিনি। পথে রাশিয়ার প্রিমোরি অঞ্চলে যাত্রাবিরতি করেন কিমের সফরসঙ্গীরা। সেখানে স্থানীয় রুশ কর্মকর্তারা তাদের স্বাগত জানান। এসময় গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন কিম।
তিনি বলেন, রাশিয়ার জন্য উত্তর কোরিয়ার জনগণের পক্ষ থেকে উষ্ণ ভালোবাসা নিয়ে এসেছি। আমি আশা করি সফর স্বার্থক এবং ফলপ্রসু হবে। প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে কোরীয় প্রস্তাবনা, কোরীয় উপদ্বীপ এবং দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কোন্নয়নের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট আলোচনা করবো।
দ্বিপক্ষীয় এই বৈঠকে কোরীয় উপদ্বীপের পরামণু সংকট সর্বাধিক গুরুত্ব পাবে বলে জানান পুতিনের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক সহযোগী উরি উশাকোভ। তিনি বলেন, গেলো কয়েক মাস যাবত কোরীয় উপদ্বীপের পরিস্থিতি কিছুটা স্থিতিশীল। উত্তর কোরিয়ার পরমাণু পরীক্ষা কেন্দ্র এবং রকেট উৎক্ষেপণ বন্ধ রাখা এতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। আমরা তাদের সাধুবাদ জানাই। এ অঞ্চলে স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য রাশিয়া সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে।
ট্রাম্প-কিম ভিয়েতনাম সম্মেলন ভেস্তে যাওয়ার দু’মাস পরই রাশিয়া গেলেন কিম। বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের ওপর পুতিনের যে প্রভাব রয়েছে তাকে কাজে লাগিয়ে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা শিথিল করতে চাইছে উত্তর কোরিয়া। আর কোরীয় উপদ্বীপ ইস্যুতে মস্কোর গুরুত্ব তুলে ধরতে চাইছে রাশিয়া।