ডিএমপি নিউজঃ খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় উৎসব ‘বড়দিন’ ইংরেজি নববর্ষ ও থার্টি ফাস্ট নাইটকে ঘিরে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। রাষ্ট্রের ও শহরের নিরাপত্তায় পুলিশের কোন নমনীয়তা নেই বলে জানিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার মোঃ আছাদুজ্জামান মিয়া বিপিএম-বার, পিপিএম ।
বড়দিন ও ইংরেজি নববর্ষ উপলক্ষে নিরাপত্তা ও ট্রাফিক সংক্রান্ত সমন্বয় সভায় একথা বলেন তিনি। আজ ১৯ ডিসেম্বর ডিএমপি হেডকোয়ার্টার্সের সম্মেলন কক্ষে উক্ত সমন্বয় সভার আয়োজন করে ডিএমপি’র অপারেশনস বিভাগ। সভায় উপস্থিত ছিলেন ডিএমপি’র উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধি, খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিসহ সরকারের বিভিন্ন সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিগণ।
সভাপতির বক্তব্যে কমিশনার বলেন- সরকারী নীতি অনুযায়ী সবধরনের ধর্মাবলম্বীদের নিরাপত্তা দেয়া দায়িত্ব আমাদের। বড়দিনের নিরাপত্তায় আমাদের পক্ষ থেকে সবধরনের ব্যবস্থা নেয়া হবে। বড়দিনকে ঘিরে আইনশৃংখলা নিয়ন্ত্রণ, সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ দমনে আমাদের কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। ডিএমপি জুড়ে ব্লক রেইড, চেকপোস্ট, আবাসিক হোটেলসহ বড় বড় স্থাপনায় নিয়মিত নজরদারি রাখা হচ্ছে। নির্বিঘ্নে সব ধর্ম উৎসব পালনে আমরা নিরাপত্তা দিয়ে যাবো।
গৃহীত নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে তিনি বলেন- প্রতিটি চার্চে আর্চওয়ে থাকতে হবে। আর্চওয়ে দিয়ে প্রতিটি দর্শনার্থীকে চার্চে ঢুকতে দেয়া হবে। তল্লাশীর ক্ষেত্রে মেটাল ডিটেক্টর ও ম্যানুয়ালী হাত দিয়ে তল্লাশী করা হবে। সকলের প্রতি আমাদের ব্যবহার হবে বিনয়ী পেশায় থাকবে কঠোরতা। অনুষ্ঠানস্থল ডগ স্কোয়াড দিয়ে সুইপিং করা হবে। নিরাপত্তা থাকবে ফায়ার টেন্ডার ও এ্যাম্বুলেন্স ব্যবস্থা। থাকতে হবে চার্চ এলাকায় নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ব্যবস্থা। চার্চ এলাকায় কোন ভাসমান দোকান বা হকার থাকতে দেয়া হবে না। কোন প্রকার ব্যাগ, ট্রলিব্যাগ, ব্যাগপ্যাক নিয়ে চার্চে আসা যাবে না।
কমিশনার আরো বলেন- প্রতিটি চার্চে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি, জনপ্রতিনিধি, সামাজিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করতে হবে। সেই কমিটি নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করবে। রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আপনাদের পাশে আমরা আছি। আপনাদের নিরাপত্তায় আমরা অহরনিশি পরিশ্রম করে যাচ্ছি।
একই সমন্বয় সভায় থার্টি ফাস্ট নাইট সম্পর্কে কমিশনার বলেন- ইংরেজী নববর্ষ উপলক্ষে কোন উন্মুক্ত স্থানে বা বাড়ির ছাদে কোন সমাবেশ, গান-বাজনা করা, আতশবাড়ি ফোটানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। ৩১ ডিসেম্বর রাত ৮ টার মধ্যে গুলশান এলাকা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় অবস্থানরত বাহিরের লোক এলাকা ছেড়ে চলে যাবে। আর স্থানীয়রা রাত ৮ টার মধ্যে নিজ নিজ এলাকায় প্রবেশ করবেন। গুলশান এলাকায় প্রবেশের জন্য কাকলী ও আমতলী ক্রসিং দিয়ে যেতে হবে। বাহির হতে যেকোন পথ ব্যবহার করা যাবে। রাত ৮ টার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টিকার ব্যতীত কোন গাড়ি প্রবেশ করতে দেয়া হবে না। পায়ে হেঁটে প্রবেশের ক্ষেত্রে আইডি কার্ড প্রদর্শন করতে হবে।
এছাড়াও তিনি বলেন- যদি কেউ চার দেয়ালের মধ্যে নববর্ষ উদযাপন করতে চান তাতে কোন বাধা নেই। তবে অনুষ্ঠানের পূর্বেই পুলিশকে জানাতে হবে। রাস্তায় যদিকে অপ্রীতিকর কাজ করে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। ৩১ তারিখ সন্ধ্যা থেকে পরের দিন সকাল পর্যন্ত ঢাকা শহরের সকল বার বন্ধ থাকবে। কেউ এই নির্দেশ অমান্য করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। থার্টি ফাস্ট নাইটে করণীয় ও বর্জনীয় বিষয় সম্পর্কে জনসাধারণকে আরও বিস্তারিত জানাতে আগামী ৩০ ডিসেম্বর প্রেস কনফারেন্স করা হবে বলে জানান ডিএমপি কমিশনার।