ডিএমপি নিউজঃ মোটরযান আইন অনুযায়ী গাড়ি কেনার পর রেজিস্ট্রেশন করা বাধ্যতামূলক। গাড়ি চালাতে হলে আপনাকে অবশ্যই রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। গাড়ির রেজিস্ট্রেশন মালিকানার বৈধতার প্রমান। অনেকেই বিভিন্ন কারনে প্রিয় গাড়িটি বিক্রয় করে দেয় অথবা পুলিশ বা কাস্টমস যে গাড়িগুলো জব্দ করে তা আদালতের নির্দেশে আয়োজিত নিলামের মাধ্যমে গাড়ি কিনে থাকে। আপনার গাড়ি যে প্রক্রিয়ায় ক্রয় করা হয়ে থাকুক না কেন আপনাকে অবশ্যই বিআরটিএ কর্তৃক নিবন্ধন ও মালিকানা পরির্তন করতে হবে।
মালিকানা পরিবর্তনের ক্ষেত্রে ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়কে কিছু প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয়। গাড়ির মালিকানা পরিবর্তনে পাঠক, আপনি নিজেও এমন সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন। তাই সমস্যা এড়াতে জেনে নিন মালিকানা পরিবর্তন করার জন্য কি করবেন।
ক্রেতা হিসেবে আপনার করণীয়:
১। নির্ধারিত ফরম ‘টিও (Transfer of ownership)’ তে ক্রেতার স্বাক্ষর এবং ‘টিটিও(Transfer of ownership by the transferor)’ এর নির্ধারিত স্থানে ক্রেতার নমুনা স্বাক্ষর প্রদান করতে হবে। ফরমগুলো বিআরটিএ এর ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে।
২। নির্ধারিত ফি জমা দিয়ে রশিদের মূলকপি বিআরটিএ দাখিল করতে হবে।
৩। ক্রেতার টিন (TIN) সার্টিফিকেট, জাতীয় পরিচয়পত্র এবং বর্তমান ঠিকানার স্বপক্ষে টেলিফোন বিল/বিদ্যুৎ বিল ইত্যাদি যে কোনটির সত্যায়িত ফটোকপি দাখিল করতে হবে।
৪। মূল রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট (ব্লু-বুক) এর উভয় কপি প্রদান/ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট এবং হালনাগাদ ট্যাক্স-টোকেন, ফিটনেস, রুট পারমিট (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) এর সত্যায়িত ফটোকপি প্রদান করতে হবে।
৫। ছবিসহ ক্রয় সংক্রান্ত ২০০/- টাকা অথবা সরকার নির্ধারিত নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে হলফনামা দাখিল। ক্রেতা যদি কোনো প্রতিষ্ঠান হয় তাহলে হলফনামার পরিবর্তে অফিসিয়াল প্যাডে চিঠি প্রদান করতে হবে।
৬। নির্ধারিত নমুনা স্বাক্ষর ফরমে ক্রেতার নমুনা স্বাক্ষর এবং তিনকপি স্ট্যাম্প সাইজের রঙ্গিন ছবিসহ ফরমের অন্যান্য সকল তথ্য ইংরেজি BLOCK LETTER এ পূরণ করে দাখিল করতে হবে।
৭। মোটরযানটি সরেজমিনে পরিদর্শনের জন্য সংশ্লিষ্ট বিআরটিএ অফিসে উপস্থাপন করতে হবে।
৮। বিক্রেতার স্বাক্ষর গরমিল হলে তাঁকে বিআরটিএ অফিসে হাজির করতে হবে।
গাড়ি বিক্রেতা হিসেবে করণীয়:
১। ফরম ‘টিটিও’ এবং বিক্রয় রশিদে বিক্রেতার স্বাক্ষর প্রদান (স্বাক্ষীর স্বাক্ষর ও রাজস্ব স্ট্যাম্পসহ) করতে হবে।
২। ছবিসহ বিক্রয় সংক্রান্ত ২০০/- টাকা অথবা সরকার নির্ধারিত নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে হলফনামা দাখিল করতে হবে।
৩। বিক্রেতা যদি কোম্পানী হয় কোম্পানীর লেটার হেড প্যাডে ইন্টিমেশন, বোর্ড রেজুলেশন ও অথরাইজেশনপত্র প্রদান করতে হবে।
৪। মোটরযানটি ব্যাংক অথবা অন্য কোন প্রতিষ্ঠানের নিকট দায়বদ্ধ থাকলে দায়বদ্ধকারী প্রতিষ্ঠানের ঋণ পরিশোধ সংক্রান্ত ছাড়পত্র, লোন এ্যাডজাষ্টমেন্ট স্টেটমেন্ড, ব্যাংক কর্তৃক সহকারী পরিচালক(ইঞ্জিঃ) বিআরটিএ বরাবর অনুরোধ পত্র এবং ২০০/- টাকা অথবা সরকার নির্ধারিত নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে হলফনামা প্রদান করতে হবে।
৫। বিক্রেতার জাতীয় পরিচয়পত্রের সত্যায়িত ফটোকপি দাখিল করতে হবে।
৬। বিক্রেতার স্বাক্ষর গরমিল হলে সরেজমিনে অফিসে উপস্থিত হতে হবে।।
ওয়ারিশ সূত্রে মালিকানা বদলীর ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র:
১। পূরণকৃত ও স্বাক্ষরিত ‘টিও’ ও ‘টিটিও’ ফরম [এ দু’টি ফরমসহ অন্যান্য ফরম বিআরটিএ ওয়েবসাইটের DOWNLOAD FORMS থেকে পাওয়া যাবে]।
২। কোর্ট/স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান প্রদত্ত ওয়ারিশ সংক্রান্ত সনদ।
৩। প্রয়োজনীয় ফি জমা দানের রশিদ।
৪। একাধিক ওয়ারিশ থাকলে প্রথম ওয়ারিশের TIN সার্টিফিকেটের সত্যায়িত কপি (ভাড়ায় চালিত নয় এমন কার, জিপ, মাইক্রোবাস-এর ক্ষেত্রে)।
৫। মূল রেজিস্ট্রেশন সনদ (উভয় কপি)/ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট(প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)।
৬। ছবিসহ নন-জুডিসিয়াল স্ট্যাম্পে ওয়ারিশসূত্রে মালিকানা প্রাপ্তি সংক্রান্ত ওয়ারিশগণের হলফনামা [একাধিক ওয়ারিশ থাকলে এবং একজনের নামে মালিকানা প্রদান করা হলে সেক্ষেত্রে অন্যান্য ওয়ারিশগণ কর্তৃক সকলের ছবিসহ নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে আর একটি হলফনামা]।
৭। নমুনা স্বাক্ষর ফর্মে নমুনা স্বাক্ষর এবং ইংরেজীতে নাম, পিতার/স্বামীর নাম, পূর্ণ ঠিকানা ও ৩ কপি স্ট্যাম্প আকারের রঙ্গিন ফটোসহ ফরমের অন্যান্য তথ্য পূরণ করতে হবে।
মোটরযান রেজিস্ট্রেশন করার প্রক্রিয়া দেখতে এখানে ক্লিক করুন।
মোটরযান নিবন্ধন ফি সম্পর্কে জানতে ক্লিক করুন।
তথ্যসূত্রঃ বিআরটিএ।