জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাংকিংয়ে আবারও দেশের সেরা কলেজের গৌরব অর্জন করলো রাজশাহী কলেজ। দ্বিতীয়বারের মতো ২০১৬ সালের র্যাংকিংয়ে ৬৯ দশমিক ১৬ পয়েন্ট পেয়ে সেরা জায়গাটি দখল করলো রাজশাহী কলেজ।
মঙ্গলবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাব-অফিসে শিক্ষা সমাবেশ, রজতজয়ন্তী ও কলেজ র্যাংকিং অনুষ্ঠানে এ ঘোষণা দেন উপাচার্য অধ্যাপক হারুন-অর-রশিদ বলে জানিয়েছেন রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ মুহা. হবিবুর রহমান।
র্যাংকিংয়ে দেশের শীর্ষ সাত কলেজের তালিকায় রাজশাহীর পরে রয়েছে পাবনার সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ। তাদের স্কোর ৬৩ দশমিক ৯৩ পয়েন্ট। তৃতীয় রংপুরের কারমাইকেল কলেজ (৬৪.০৫ পয়েন্ট), চতুর্থ বরিশালের বিএম কলেজ (৬৩.৯৩ পয়েন্ট) এবং পঞ্চম বগুড়ার সরকারি আজিজুল হক কলেজ (৬০.৭০ পয়েন্ট)। দেশের সব সরকারি কলেজের মধ্যে সেরা অবস্থানে রয়েছে রাজশাহী কলেজ।
রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ জানান, ২০১৫ সাল থেকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভূক্ত স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সব কলেজের ৩১ কেপিআই (কি পারফরমেন্স ইন্ডিকেটরস) র্যাংকিং শুরু হয়। এবার দ্বিতীয়বারের মতো এ র্যাংকিং প্রকাশ করা হয়েছে। প্রথমবারও রাজশাহী কলেজ সেরা হওয়ার পর এবারও সেরার মান অক্ষুন্ন রেখেছে এ কলেজ। দ্বিতীয়বারেও এ কলেজ সেরা হওয়ার গৌরব অর্জন করায় তিনি আনন্দ প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, কলেজে পাঠদানে ইতিবাচক প্রতিযোগিতার মনোভাব সৃষ্টি করে শিক্ষার মানোন্নয়নে তারা নিরলস কাজ করেন। আগামীতেও এ কলেজকে তার গৌরব ধরে রাখার চেস্টা করবেন বলে জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, উত্তরাঞ্চলে শিক্ষা বিস্তারের ঐতিহ্যবাহী শীর্ষ বিদ্যাপীঠ রাজশাহী কলেজ প্রায় দেড়শো বছর আগে প্রতিষ্ঠিত। হাজারো জ্ঞানী-গুনি এ বিদ্যাপিঠের আলোয় আলোকিত হয়ে এখন আলো ছড়াচ্ছেন দেশ-বিদেশে। এবারো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাংকিংয়ে দেশ সেরার তালিকায় অক্ষুন্ন রয়েছে এ কলেজটি।
কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মহা. হবিবুর রহমান জানান, দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় এ কলেজটি দেশের সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে আবারো স্থান ধরে রেখেছে। পশ্চিম বঙ্গের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী বিখ্যাত রাজনীতিবিদ জ্যোতি বসু, উপমহাদেশের খ্যাতিমান চলচ্চিত্র পরিচালক ঋত্বিক ঘটক, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি স্যার যদুনাথ সরকার, বৈজ্ঞানিক প্রথায় ইতিহাস চর্চার পথিকৃত অন্যতম সাহিত্যিক অক্ষয় কুমার মৈত্র, সাবেক প্রধান বিচারপতি হাবিবুর রহমান, জননেতা ও শিক্ষানুরাগী মাদার বখশ, বাংলাদেশের ৪ জাতীয় নেতার একজন এএইচএম কামারুজ্জামানের মতো বরেণ্য ব্যক্তিত্ব এ কলেজের ছাত্র ছিলেন। এ কলেজের সবুজ চত্ত্বরে ছিলো তাদের পদচারণা।
একবিংশ শতব্দীর প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে রাজশাহী কলেজ ডিজিটাল করে নিয়েছে নিজেকে। কলেজের নিরাপত্তা বিধান করতে গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। আধুনিক বিশ্বের সঙ্গে সংযুক্ত থাকতে সকল শিক্ষার্থীদের জন্য বিনামূল্যে ওয়াই ফাই সুবিধ দেয়া হয়েছে। ঐতিহ্য আর আধুনিকতার মিশেলে এখন দর্শনীয় স্থান হিসেবেও গড়ে উঠেছে উত্তরের এ কলেজটি।