ডিএমপি নিউজঃ শহীদ পুলিশ সুপার শাহ্ আব্দুল মজিদ ১৯৩৫ সালের ৩ জানুয়ারি রংপুর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম মরহুম শাহ্ আব্দুল ইউনুস আলী এবং মাতা মরহুম মোছাম্মৎ মেহের আফজুন বেগম। একভাই ও দুই বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন পিতা-মাতার প্রথম সন্তান।
তিনি রংপুর জেলা স্কুলে তারপর রংপুর কারমাইকেল কলেজে পড়াশুনা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাষ্ট্রবিজ্ঞান) এম.এ এবং এন.আই.পি প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।
তিনি ১৯৬০ সালের ১২ অক্টোবর স্ত্রী নাজমা মজিদকে বিয়ে করেন। তিনি দুই পুত্র ও দুই কন্যাসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
তিনি ১৯৬২ সালে এ.এস.পি হিসেবে সারদা পুলিশ একাডেমিতে যোগদান করেন। প্রশিক্ষণ শেষে সহকারি পুলিশ সুপার পদে চট্টগ্রামে নিযুক্ত হন। তিনি এস.ডি.পিও হিসেবে প্রথমে নারায়নগঞ্জে এবং পরবর্তীতে মাদরীপুরে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬৫ সালে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে ঢাকা এবং ১৯৬৭ সালের শেষের দিকে জেলা পুলিশ সুপার হিসেবে বগুড়া জেলায় যোগদান করেন। কর্মজীবনে ফরিদপুর জেলা এবং ভাইস প্রিন্সিপাল হিসেবে সারদা পুলিশ একাডেমিতে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭০ সালে রাজশাহী জেলা পুলিশ সুপার পদে নিযুক্ত হয়ন। মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত রাজশাহী পুলিশ সুপার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
রাজশাহীতে অসহযোগ আন্দোলনএবং প্রতিরোধযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ২৮ মার্চ পাকবাহিনীর পুলিশ লাইন আক্রমণের বিরুদ্ধে পুলিশ ফোর্স সংগঠিত করেন। ৩১ মার্চ রাজশাহী জেলা প্রশাসকের আশ্বাসের ভিত্তিতে আলোচনার জন্য জেলা প্রশাসকের বাসভবনে গমন করেন। মাগরিবের নামাজের সময় পাক আর্মি ক্যাপ্টেন সালমান মাহমুদ কর্তৃক জেলা প্রশাসকের বাসভবন থেকে বন্দি হন। ঠিক ঐদিনেই পদ্মা নদীর তীরবর্তী স্থানে পাকবাহিনী গুলি করে তাকে হত্যা করেন। মৃতদেহের সন্ধান পাওয়া যায়নি ।
দেশ মাতৃকার দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে শহীদ পুলিশ সুপার শাহ্ আব্দুল মজিদ নিজের জীবনকে উৎসর্গ করে মৃত্যুকে হাসিমুখে আলিঙ্গন করে দেশবাসীকে চিরঋণী করে গেছেন। বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে তাঁর এই বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য ১৯৭৬ সালে সরকার কর্তৃক ধানমন্ডিতে ১টি বাড়ি প্রদান করা হয়। এছাড়াও এ শহীদের নামে রাজশাহী শহরে রাস্তার নামকরণসহ রাজশাহী পুলিশ লাইনে পাঠাগার স্থাপন করা হয়।