অনেক মা-বাবাই অভিযোগ করেন, তাদের শিশু খেতে চায় না। শিশুর এই খেতে না চাওয়ার কারণ কী, এ বিষয়ে কথা বলেছেন ডা. ছামিদুর রহমান। ডা. ছামিদুর রহমান বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের শিশু বিভাগের ইউনিট প্রধান হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : শিশুরা খেতে চায় না কেন? আর শিশু কম খাচ্ছে কি না, সেটি বোঝার উপায় কী?
উত্তর : আমি খুব খেয়াল করে দেখেছি, আমার চেম্বারে যত রোগী এসেছে, নব্বই ভাগ মায়েরা বলে, ‘শিশু খেতে চায় না। একটা ওষুধ লিখে দিন। একটি ভিটামিন লিখে দিন।’ আমি কোনো কোনো সময় যদি আগেই ধারণা করি, তখন একটি ভিটামিন লিখেও দেই অনেক সময়। অথবা তাকে কী বলব চিন্তা করি। আসলে শিশুরা খেতে চায় না, কথাটা পুরোপুরি ঠিক নয়।
বিষয়টা হয়েছে কী? আমাদের পরিবারগুলো ছোট হয়ে গেছে। মায়েদের কাজের পরিসর যে কমেছে সেটি বলব না, তবে খুব গুছানো হয়েছে। এজন্য তারা বাচ্চাদের বেশি বেশি খাওয়ানোর প্রতি মনোযোগী হয়ে যায়।
আসলে খাওয়াটা কখন প্রয়োজন? যখন ক্ষুধা লাগবে। তার শরীরে যখন খাবার লাগবে, সে ক্ষুধার কিছু আলামত বহিঃপ্রকাশ করবে। কিন্তু মায়েরা সময় দেখে তখন খাওয়াতে চায়। মনে রাখবেন, শিশুদের ক্ষেত্রে সাত মাস থেকে তিন বছর বয়স পর্যন্ত একটি ব্যক্তিত্ব তৈরি হয়। এই সময় শিশুরা বেশি পীড়াপিড়ি পছন্দ করে না। সুতরাং কী হয়? যখনই মা খাবার তৈরি করে, বাচ্চা মনে করে, তার ওপর একটি আজাব শুরু হলো। তখন হয়তো লুকিয়ে থাকে, খেতে চায় না। এ রকম পরিস্থিতিতে বড়রাও কিন্তু খেতে চায় না।
এভাবে কি খাবারটা ভেতরে ঢুকবে? ঢুকবে না। তো বাচ্চারা করে কি? এক/ দুই লোকমা মা যখন ঠেলে ঠুলে দেয়, একে বমি করে ফেলে। অথবা দৌঁড়ে দাদি বা নানির কাছে চলে গেল। এদের তখন আশ্রয়স্থল বলে মনে করে। সেই জন্য প্রথম বিষয়টা হলো বাচ্চাদের খাওয়াতে হবে তাদের চাহিদা অনুসারে। ক্ষুধা লাগলে এরপর খাবার দিতে হবে। তাহলে এই সমস্যাটা তৈরি হবে না। খবর এনটিভি।