ডিএমপি নিউজঃ ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) এর উদ্যোগে সন্ত্রাসবাদ ও উগ্রবাদ বিরোধী জনসচেতনতামূলক পথনাটক “মুখোশ” এর প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ শুক্রবার সন্ধ্যা ৬:৩০টায় ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবর উন্মুক্ত মঞ্চে পথনাটক “মুখোশ” এর প্রদর্শনী করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বিপিএম-বার, পিপিএম। সভাপতিত্ব করেন সিটিটিসি-র অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোঃ আসাদুজ্জামান বিপিএম-বার।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ২০০৪ ও ২০০৫ সালে সারা বাংলাদেশে আধুনিক জঙ্গিবাদের উত্থান হয়। সারা বাংলাদেশে ৬৩টি জেলার ৫০০ এর অধিক বোমা বিস্ফোরিত হয়। কিন্তু জঙ্গিবাদ নির্মুল না হওয়ার কারণে ২০১৪-১৫ সালে জঙ্গিরা আবার মাথাচারা দিয়ে উঠে। তখন ঢাকার একজন বিদেশি নাগরিক ও রংপুরে জাপানি একজন নাগরিককে খুন করা হয়। বিভিন্ন জায়গায় একের পর এক ধর্মীয় পুরোহিত, বিভিন্ন গোষ্ঠীর লোক তথা মুসলিমদেরও খুন করা শুরু হয়। হলি আর্টিসান ও শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠে ভয়াবহ জঙ্গি হামলা হলে উন্নয়ন সহযোগীরা বাংলাদেশ ছেড়ে চলে যায়। তখন বাংলাদেশ পুলিশ ও জনগণ একত্রে মিলে জঙ্গিবাদকে রুখে দাঁড়ায় এবং জঙ্গিবাদকে নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। এরপর উন্নয়ন সহযোগীরা বাংলাদেশে এসে বিনিয়োগ শুরু করে।
তিনি আরো বলেন, “মুখোশ” নাটকটিতে উগ্রবাদ-সন্ত্রাসবাদ-জঙ্গিবাদ ও ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে। এছাড়াও মানুষ কিভাবে ও কোন পরিস্থিতিতে ধর্মের ভুল ব্যাখ্যা গ্রহণ করে উগ্রবাদের দিকে ধাবিত হয় তা দেখানো হয়েছে এ নাটকটিতে। নাটকে কিভাবে উগ্রবাদের উস্কানিদাতা বা জঙ্গি রিক্রুটরা বিভিন্ন সংগঠনের নাম ধারণ করে ধর্মের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে মানুষকে বিপথগামী করে তা উপস্থাপন করা হয়েছে।
সিটিটিসি-র অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোঃ আসাদুজ্জামান বিপিএম-বার বলেন, সন্ত্রাসবাদের কথা মনে আসলে ২০১৬ সালে ১ জুলাই হলি আর্টিসান বেকারিতে নারকীয় ও ন্যাক্কারজনক ঘটনার কথা চলে আসে। সেই বাস্তবতা থেকে বাংলাদেশ সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ দমনে আজ বিশ্বে রোল মডেল। সিটিটিসি বাংলাদেশ পুলিশকে রোল মডেলে পরিণত করেছে।
তিনি আরো বলেন, দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার বিঘ্ন ঘটাতে না পারে সেই বিষয়ে জনসচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে গত ২০২২ সালে বগুড়া ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার বিভিন্ন স্থানে নাটকটির দশটি প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়, যা স্থানীয় দর্শকের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলে। এরই ধারাবাহিকতায় এ বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি, পায়রা চত্বর ও মিরপুর বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে নাটকটির দুটি প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়েছে। ঢাকা মহানগরের আরো কয়েকটি স্থান সহ দেশের অন্যান্য স্থানেও নাটকটি ধারাবাহিকভাবে প্রদর্শন করার পরিকল্পনা রয়েছে।
নাটকটির সার্বিক তত্ত্বাবধায়ন করেছেন ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) এর অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোঃ আসাদুজ্জামান বিপিএম-বার। নাটকটির প্রধান সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন সিটিটিসির অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার খন্দকার রবিউল আরাফাত লেনিন।
ART-FRY THEATRE এর ব্যানারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী ও গবেষক, থিয়েটার এন্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগ, তেজগাঁও কলেজের শিক্ষার্থী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় নাট্য সংসদের সদস্যবৃন্দ নাটকটির কমিশনের যুক্ত রয়েছেন।
নাটকটি রচনা করেছেন জায়েদ জুলহাস (সাবেক শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বর্তমান প্রভাষক, থিয়েটার এন্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগ, হাবিবুল্লাহ বাহার কলেজ, ঢাকা) এবং যৌথ নির্দেশনায় ছিলেন জায়েদ জুলহাস ও সৈয়দ ম. জুবায়ের (সাবেক শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বর্তমান প্রভাষক, থিয়েটার এন্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগ, তেজগাঁও কলেজ, ঢাকা)।
পথনাটক “মুখোশ” এর প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণসহ দেশের সংস্কৃতি অঙ্গনের স্বনামধন্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।