স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের নির্দেশে দেশের সকল সরকারি হাসপাতালে চিকুনগুনিয়া পরিস্থিতি মোকাবেলায় হেল্প ডেস্ক খোলা হচ্ছে। পাশাপাশি চিকুনগুনিয়া আক্রান্ত রোগীদের শরীরের বিভিন্ন অস্থিসন্ধির ব্যথা প্রশমনে প্রতিটি হাসপাতালে প্রয়োজনে জয়েন্ট পেইন ক্লিনিক বা আর্থালজিয়া ক্লিনিক খোলারও উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এখান থেকে রোগীদের প্রয়োজন অনুযায়ী ফিজিওথেরাপি বা ওষুধ সেবনের পরামর্শ দেয়া হবে।
দেশের সকল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালসহ জেলা ও উপজেলা হাসপাতালেও এই সেবা দেয়া হবে।
এক তথ্য বিবরণীতে বলা হয়, রবিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে অনুষ্ঠিত এক জরুরি সভা থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দেশের সকল হাসপাতালের পরিচালক, বিভাগীয় পরিচালক ও সিভিল সার্জনদের কাছে মন্ত্রীর এই নির্দেশনা পৌঁছে দেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ।
এর আগে চিকুনগুনিয়া পরিস্থিতি পর্যাবেক্ষণের জন্য পাবলিক হেলথ ইমারজেন্সি অপারেশন সেন্টার (চিকুনগুনিয়া নিয়ন্ত্রণ কক্ষ) খোলা হয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে।
এ ছাড়া সপ্তাহের প্রতিদিন ২৪ ঘন্টা কাজ করার জন্য একটি ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করা হয়েছে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান এর আওতায়।
চিকিৎসক ও সাধারণ জনগণের প্রশ্নের জবাব দেওয়ার জন্য সার্বক্ষণিক হটলাইনও চালু করা হয়েছে যার ফোন নম্বর হচ্ছে ০১৯৩৭-১১০০১১, ০১৯৩৭-০০০০১১।
চিকুনগুনিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য www.iedcr.gov.bd লিংকটি ভিজিট করার জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে সকলের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, চিকুনগুনিয়া ঢাকা মহানগরীতেই সীমাবদ্ধ, এ রোগ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েনি।
তিনি আজ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘এখনো ঢাকার বাইরের লোকেরা চিকুনগুনিয়া রোগে আক্রান্ত হয়নি, সুতরাং এটি ব্যাপক আকারে ছড়ায়নি। ’
জাহিদ বলেন, ‘চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধে গণসচেতনতা সৃষ্টির জন্য আমরা পর্যপ্ত ব্যাবস্থা নিয়েছি,এর পাশা পাশি চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণও দেওয়া হচ্ছে। ’
তিনি বলেন, ঢাকায় এ রোগ যাতে আরো ছড়িয়ে পড়তে না পারে তার জন্য সিটি কর্পোরেশনকে এডিস মশা নিধন কর্যক্রম আরো জোরদার করতে হবে।
এদিকে রোগ তত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা এক বিবৃতিতে বলেছেন, ঢাকা শহরে প্রতি ১১ জনের মধ্যে এক ব্যক্তি এক চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত এটি সত্য নয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ ইউনিটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. সানিয়া তাহমিনা সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, প্রায় পাচশ ডাক্তার ও নার্সকে চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধ ও নিয়স্ত্রণ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ঢাকা শহরের ৪ হাজার ৭৭৫ জনকে আইসিডিআর দ্বারা পরিচালিত একটি জরিপ অনুসরণ করে চিকুনগুনিয়ার উপস্থিতি জানতে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করা হয়।
এদিকে, ঢাকা শহরের ৪৭টি ওয়ার্ডের ৫০টি স্থানকে চিকুনগুনিয়া এলাকার ঝুঁকি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।