২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরে নতুন মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট/মূসক) আইন বাস্তবায়ন না হওয়ায় রাজস্ব ঘাটতি হচ্ছে অন্তত ২০ হাজার কোটি টাকা। ওই ঘাটতি পূরণে নতুন কর্ম পরিকল্পনা গ্রহণ করার পাশাপাশি সম্মিলিত প্রয়াসকেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সিনিয়র সচিব মো. নজিবুর রহমান নতুন কর্ম পরিকল্পনার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, অনায়াসে নয় প্রয়াসে (পরিশ্রমের সহিত) কাজ করতে হবে। সকল কমিশনারের এলাকায় ভ্যাট নিবন্ধিত যত প্রতিষ্ঠান আছে, তা উদ্বুদ্ধ করে নিয়মিতভাবে ভ্যাট রিটার্নের আওতায় আনার নির্দেশনা দিয়েছি। একই সঙ্গে কমিশনারদের নতুন নতুন সম্ভাবনা খুঁজতে হবে। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রেখে টিম ওয়ার্ক ও ভ্যাট কর্তন মনিটরিং জোরদার করতে হবে। রাজস্ব পর্যালোচনা সভায় আমরা এগুলোর ওপর জোর দিচ্ছি।
এর পাশাপাশি ওই ঘাটতি পূরণে নতুন একটি কর্মপরিকল্পনা অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির কাছে প্রেরণ করা হয়েছে। যেখানে বকেয়া রাজস্ব আদায়সহ সম্মিলিত প্রয়াসকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের কর্মপরিকল্পনার সঙ্গে অর্থ বিভাগ একমত পোষণ করেছে। অর্থবিভাগ বকেয়া নিয়ে ইতিবাচক অবস্থান নিয়েছে। অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব এ বিষয়ে সৃজনশীল ভূমিকা রাখছেন।
এনবিআরের নতুন কর্মপরিকল্পনার বিষয়ে সংসদ সচিবালয় থেকে জানা যায়, নতুন ভ্যাট আইন স্থগিত করায় যে ২০ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব ঘাটতি হওয়ার কথা, তা সংস্থানের একটি পরিকল্পনা সংসদীয় কমিটিতে তুলে ধরে রাজস্ব আদায়কারী প্রতিষ্ঠানটি। অর্থায়নের নতুন পরিকল্পনায় দেখা যায়, ঘাটতি পূরণে সিগারেট ও বিড়ি খাত থেকে ৫ হাজার কোটি টাকা, ব্যাংক হিসাব ও বিমানের টিকিটে আবগারি শুল্ক থেকে ৫০০ কোটি টাকা, ফাস্ট ফুডের ওপর ১০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক থেকে ১০০ কোটি টাকাসহ মোট ৫ হাজার ৬০০ কোটি টাকা অতিরিক্ত রাজস্ব আদায়ের সম্ভব হবে। এ ছাড়া রাজস্ব আদায় মনিটরিং জোরদারসহ এডিআর ব্যবস্থা কার্যকর করার মাধ্যমে বকেয়া রাজস্ব আহরণ ও কর প্রতিপালন বাড়ানোর মাধ্যমে আরও প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আহরণের সম্ভাবনা রয়েছে।
সংসদ সচিবালয় সূত্র জানায়, ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ও অর্থনৈতিক কার্যক্রমের স্বাভাবিক প্রবৃদ্ধির কারণে ৯ হাজার ৩৮০ কোটি টাকা অতিরিক্ত রাজস্ব আহরণ প্রাক্কলন করা হয়েছে। সবমিলে ঘাটতি দাঁড়ায় পাঁচ হাজার ২০ কোটি টাকা। আর ঘাটতি পূরণে এনবিআরের অধীন বিভিন্ন ভ্যাট কমিশনারেটের বড় মামলাগুলো নিষ্পত্তি এবং নিরঙ্কুশ বকেয়া আদায়ের লক্ষ্যে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলা হয়েছে নতুন কর্মপরিকল্পনায়।