ডিএমপি নিউজঃ সহিংস উগ্রবাদ প্রতিরোধে জনসাধরণকে সম্পৃক্ত ও জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সিটিটিসি, ডিএমপি ২৫ জুন ২০১৯ থেকে ১ জুলাই ২০১৯ পর্যন্ত পালন করছে ‘‘সহিংস উগ্রবাদ বিরোধী সচেতনতা সপ্তাহ ২০১৯”। চলমান সহিংস উগ্রবাদ বিরোধী সপ্তাহে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সিটিটিসি নানাবিধ কার্যক্রম চালাচ্ছে। তার মধ্যে সহিংস উগ্রবাদ বিরোধী সেরা রিপোর্টিং ও স্কুল কলেজ ও মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের মধ্যে রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে। এছাড়াও ‘আমরা করবো জয়’ শিরোনামে একটি স্মরণিকা প্রকাশ করেছে সিটিটিসি।
আজ (৩০ জুন) ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সহিংস উগ্রবাদ বিষয়ে সেরা রিপোর্টিং ও রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন ডিএমপি’র ভারপ্রাপ্ত কমিশনার অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (সিটিটিসি) মোঃ মনিরুল ইসলাম বিপিএম (বার), পিপিএম (বার)।
সহিংস উগ্রবাদ বিষয়ে সেরা রিপোর্টিং জুরি বোর্ডের সদস্য ছিলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণসংযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. আব্দুস সালাম, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ও দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক সাইফুল আলম, ডিবিসি নিউজের সিইও মঞ্জুরুল ইসলাম ও ডিএমপি’র মিডিয়া এন্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মোঃ মাসুদুর রহমান পিপিএম।
সহিংস উগ্রবাদ বিষয়ে সেরা রিপোর্টিং এ পুরস্কৃত হয়েছেন
ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া
১। খান মুহাম্মদ রুমেল, সময় সংবাদ ও শামীমা সুলতানা স্টাফ রিপোর্টার চ্যানেল ২৪।
প্রিন্ট মিডিয়া
১। শেখ সাবিহা আলম জেষ্ঠ্য প্রতিবেদক দৈনিক প্রথম আলো, শরিফুল ইসলাম হেড অব ক্রাইম ডেস্ক দ্য ডেইলি স্টার ও মোহাম্মদ জামিল খান স্টাফ রিপোর্টার দ্য ডেইলি স্টার।
অনলাইন মিডিয়াঃ নুরুজ্জামান লাবু সিনিয়র রিপোর্টার বাংলা ট্রিবিউন।
সহিংস উগ্রবাদ বিষয়ে রচনা প্রতিযোগিতায় পুরস্কৃত হলেন-
স্কুল শাখাঃ ‘সহিংস উগ্রবাদ প্রতিরোধে পরিবারের ভূমিকা’
১ । প্রভাষ দাস, ১০ম শ্রেণী বিন্দুবাসিনী সরকারী বালক উচ্চ বিদ্যালয় টাংগাইল,
২। সানজানা তাসনিম আদিবা, ৯ম শ্রেণী তেজগাঁও সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়,
৩। সামিয়া হাসান দিপিয়া, ১০ম শ্রেণী রফিকুল ইসলাম স্কুল এন্ড কলেজ , ঢাকা।
কলেজ শাখাঃ‘ সহিংস উগ্রবাদের কারণ ও প্রতিকারের উপায়’
১। শামীশা আফরিন সুইট, দ্বাদশ শ্রেণী হলিক্রস কলেজ, ঢাকা,
২। মাহমুদা আকতার দৃষ্টি, দ্বাদশ শ্রেণী ময়মনসিংহ সরকারী কলেজ,
৩। মোঃ শরীফুল আলম সাকিব, দ্বাদশ শ্রেণী আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজ, ঢাকা,
মাদ্রাসা শাখাঃ ‘সহিংস উগ্রবাদ প্রতিরোধে ইসলামী শিক্ষা’
১। মোহাম্মদ সাইফুর রহমান, ফাজিল শ্রেণী বায়তুশ শরফ আদর্শ কালিম মাদ্রাসা ধনিয়ালাপাড়া চট্টগ্রাম,
২। রাইয়ান রাফি, দাখিল শ্রেণী পাবনা ইসলামিয়া মাদ্রাসা পাবনা,
৩। মুহাম্মাদ হেদায়াতুল্লাহ, ফাজিল শ্রেণী সরকারী মাদরাসা-ই-আনিয়া ঢাকা,
মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, বাঙালি সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য এবং অসাম্প্রদায়িক মূল্যবোধের চর্চাই উগ্রবাদ, সন্ত্রাসবাদ, সাইবার অপরাধ এবং মাদক সন্ত্রাসকে রুখে দিতে পারে। এই বিষয়টিকে মাথায় রেখে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম, ডিএমপি গত ১ এপ্রিল ২০১৯ থেকে ১০ এপ্রিল ২০১৯ পর্যন্ত প্রাসঙ্গিক স্লোগান (ইংরেজি ও বাংলা) আহবান করেছিল। তাতে অনেকে অভূতপূর্ব সাড়া দিয়ে বিভিন্ন প্রাসঙ্গিক স্লোগান পাঠিছিল সেসব স্লোগান থেকে বাছাই করার জন্য কমিটি ১০টি স্লোগানকে সেরা স্লোগান হিসেবো মনোনীত করেছে।
নির্বাচিত স্লোগানসমূহ হলো-
১। সন্ত্রাস মুক্ত সমাজ হবে সংকল্প নিয়ে ঘরে ঘরে।
২। লাখো শহীদের বাংলায় উগ্রবাদের ঠাঁই নাই।
৩। সন্ত্রাসবাদ বিরোধী ঐক্য গড়ুন নিরাপদ সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ুন।
৪। সকল ধর্মের জয় হোজ উগ্রবাদ আর নয়।
৫। গাহি সাম্যের গান সম্প্রতি বাংলাদেশের প্রাণ।
৬। আমার মাটি আমার দেশ মাদকমুক্ত বাংলাদেশ।
৭। রুখবো সাইবার অপরাধ দেশ রাখবো নিরাপদ।
৮। নতুন বর্ষ নতুন প্রভাত উগ্রবাদের হোক নিপাত।
৯। আমি তুমি আমরা গড়বো সোনার বাংলা।
জুরি বোর্ডের প্রধান অধ্যাপক ড. আব্দুস সালাম বলেন, ডিএমপি’র কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটকে ধন্যবাদ সুন্দর একটি আয়োজন করার জন্য। পুলিশ ও সাংবাদিকতা একটি ঝুঁকিপূর্ণ পেশা। উগ্রবাদের একটি থিউরিক্যাল ব্যাক গ্রাউন্ড আছে। আপনাদের লেখনী ও বস্তুনিষ্ট সংবাদ প্রকাশের মাধ্যমে আপনারা সমাজের নায়ক হয়ে উঠবেন। যারা আজ পুরস্কৃত হয়েছেন সকলেকে অভিনন্দন জানাই।
মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, রিপোর্টগুলো আমরা বিচারক হিসেবে না সাধারণ নাগরিক হিসেবে পড়ে উপকৃত হয়েছি। শুধু সিটিটিসি না বাংলাদেশ পুলিশ এর প্রত্যেক সদস্যকে ধন্যবাদ জানাই, তারা স্বল্প সংখ্যক জনবল নিয়ে হলি আর্টিসান হামলার পর বাংলাদেশে উগ্রবাদ নিয়ন্ত্রন করেছে। বাংলাদেশ এগিয়ে যাক, নিরাপদে থাকুক ও আপনারাও নিরাপদ থাকুন এই প্রত্যাশা করছি।
সাইফুল আলম বলেন, যারা গান ভালোবাসে ও প্রকৃতিকে ভালোবাসে তারা কখনও খারাপ কাজ করতে পারে না। সহিংস উগ্রবাদ সমাজ, পরিবার, রাষ্ট্র বা বিশ্বের জন্য নিরাপদ না। বাংলাদেশের মানুষ, সরকার, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, মিডিয়া উগ্রবাদ বিরোধী। যেদেশের মানুষ উগ্রবাদ বিরোধী সেদেশে উগ্রবাদ হতে পারে না।
সহিংস উগ্রবাদ বিরোধী রিপোর্টি ও রচনা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করায় সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়ে মনিরুল ইসলাম বলেন, আমরা সহিং উগ্রবাদ বিরোধী অনেক রিপোর্টি ও রচনা পেয়েছি। তার মধ্যে বস্তুনিষ্ঠ ও ভালো রিপোর্টি ও রচনা বাছাই করে জুরি বোর্ডের নিকট দিয়েছি। তারা একটি চমৎকার ফলাফল ঘোষণা করেছেন। যারা পুরস্কৃত হয়েছেন তাদেরকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমরা উগ্রবাদ বিরোধী সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ ও শিক্ষার্থীদের সাথে মতবিনিময় করেছি। আমরা আশা করি এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে সকলের মাঝে উগ্রবাদ বিরোধী সচেতনতা বৃদ্ধি পাবে।
এসময় পুরস্কার হিসেবে সম্মাননা স্মারক, সার্টিফিকেট ও নগদ অর্থ প্রদান করা হয়। এসময় ডিএমপি’র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, সাংবাদিকবৃন্দ, বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা থেকে আগত শিক্ষার্থীদের অভিভাবকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন