সকালের আকাশ ফুঁড়ে সূর্যের তীব্রতা তখনো ততটা ছড়ায়নি। তবে সাদা-গোলাপি জামা পরা কিছু শিশু-কিশোরের হাসির উজ্জ্বল আভা যেন ছড়িয়ে পড়েছে ঢাকার শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সর্বত্র। যাদের জীবনের গতিই একসময় থেমে যেতে শুরু করেছিল তারাই কিনা উড়তে যাচ্ছে আকাশে!
শনিবার মিরপুর ও তেজগাঁও শিশু পরিবারের সুবিধা বঞ্চিত ৩০ শিশু-কিশোরকে নিয়ে এই বিমান ভ্রমণের আয়োজন করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। সকালে ঢাকা থেকে সিলেটগামী বিজি ১৬০৫ ফ্লাইটে রওনা হয় তারা। সিলেটে পর্যটন মোটেল, লাক্কাতুরা চা বাগান ও হজরত শাহজালাল (রা.) মাজার পরির্দশন করে দুপুরে বিজি ০০২ ফ্লাইটে ঢাকায় ফেরে তারা।
উড়োজাহাজ থেকে নেমেও যেন তাদের ঘোর কাটেনি। মিরপুর সরকারি শিশু পরিবারের মো. সোহেল রানা বলেন, ‘আমি কোন দিন ভাবতে পারিনি, বিমানে চড়বো। এই ভ্রমণ আমার কাছে স্বপ্নের মতো হয়েছে।’
তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্র মেহেদী হাসান বলেন, ‘উড়োজাহাজের উপরেও মেঘ, নিচেও মেঘ আর আমি এর মধ্যে উড়োজাহাজে ছিলাম। এটা সত্যিই অসাধারণ।’
তাদের এই ভ্রমণ বদলে দিয়েছে তাদের স্বপ্নটাকেও। মেহেদী হাসানের কথাতেই বোঝা গেল সেটা। সে বলছিল, আমি আগে ভাবতাম বড় হয়ে একটা চাকরি করবো। এখন আমার স্বপ্ন আমি পাইলট হব।’
এ আয়োজন প্রসঙ্গে বিমানের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) শাকিল মেরাজ বলেন, সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স সুবিধাবঞ্চিত শিশু কিশোরদের জন্য ব্যতিক্রম এই আয়োজন করেছে। বিমানের রয়েছে মজবুত ও স্থায়ী সামাজিক দায়বদ্ধতা বোধ। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি বিমান সামাজিক উন্নয়নে অংশীদারিত্ব রেখেছে প্রতিষ্ঠার পর থেকেই।
আয়োজন প্রসঙ্গে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) এ এম মোসাদ্দিক আহমেদ বলেন, ‘শিশুদের নিয়ে আয়োজন নিছক বিমান ভ্রমণ নয়, এটা তাদের জন্য অনুপ্রেরণা। জীবনের সফল ও সঠিক লক্ষ্যে পৌছানোর জন্য আমরা তাদের অনুপ্রাণিত করছি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, শিশুরাই আগামীর ভবিষৎ, তাদের উন্নয়ন ছাড়া কোন অগ্রযাত্রা সফল হবে না। মুনাফা অর্জনের পাশাপাশি সেই মুনাফার একটা অংশ বৃহত্তর সমাজের কল্যাণে বিনিয়োগ করা জন্য ’কর্পোরেট সোস্যাল রেসপনসিবিলিটি’র আওতায় বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হয়। যা দেশের উন্নয়নধারাকে মজবুত ও টেকসই করতে সহায়ক।’