ইফতার শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কন্ট্রোল রুম থেকে সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজ খবর নিচ্ছিলাম। হঠাৎ মোবাইল ফোনের রিং শুনে ডিসপ্লে মনিটরে তাকালাম। দেখলাম ডিসি গুলশানের ফোন। ফোনটি ধরতেই সে জানাল, ‘স্যার গুলশানের ৭৯ নং রোডের একটি রেস্টুরেন্টে সন্ত্রাসীরা আক্রমণ করেছে, তারা অনবরত গুলি করছে, পুলিশের রেসপন্ডিং টিম সন্ত্রাসীদের গুলি করলে তাদেরও পালটা গুলি করছে। অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েনের পাশাপাশি সোয়াটকেও দ্রুত ঘটনাস্থলে পাঠাতে হবে।’ তখন বলেছিলাম, ‘আমি নিজেই আসছি। তোমার যত ফোর্স লাগে নিয়ে নাও। সম্পূর্ণ রেস্টুরেন্ট কর্ডন করে ফেলো। কোনোভাবেই যেন কোন সন্ত্রাসী পালাতে না পারে। সর্বোচ্চ শক্তি নিয়োগ করো। সোয়াট, ডিবি এখনই যাচ্ছে।’
২০১৬ সালের ১ জুলাই সন্ধ্যার পর হলি আর্টিজানে হামলা সংক্রান্তে প্রথম সংবাদটি এভাবেই আমার কাছে এসেছিল। সংবাদ প্রাপ্তির সাথে সাথে ওয়ারল্যাসে কন্ট্রোল রুমকে নির্দেশনা দেই গুলশানে দশ প্লাটুন ফোর্স প্রেরণের জন্য। একইসাথে কাউন্টার টেরোরিজম, ডিবি ও সোয়াটকে দ্রুততম সময়ে ঘটনাস্থলে যাওয়ার জন্যও নিদের্শনা দেই। পুলিশ কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে ডিএমপির সকল ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে ঘটনাটি অবহিত করে যার যার দায়িত্ব পালনের নির্দেশনা দেই। গুলশানের সকল আউটগোয়িং গাড়ি তল্লাশি করার নির্দেশনা প্রদান করি। কোনো সন্ত্রাসী যেন গুলশান থেকে বের হতে না পারে এজন্যই ছিল ঐ নির্দেশনা।
আমার গাড়িটি আগে থেকেই বাসায় ছিল। কোনোরকম কালবিলম্ব না করে পরিহিত পোষাকেই (সিভিল) গাড়িতে উঠি এবং গুলশানের উদ্দেশ্যে রওনা দেই। গাড়ির মধ্যে বসেই সংবাদটি মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইজিপি এবং এডিশনাল আইজি এসবিকে জানাই। পরবর্তীতে ডিসি গুলশান ফোনে জানায়, ‘রেস্টুরেন্টের নাম হলি আর্টিজান। সম্ভবত ভিতরে বিদেশী নাগরিক আছে। সন্ত্রাসীরাও ভিতরে আছে।’
হলি আর্টিজানে পৌঁছানোর পথ আমার ড্রাইভারের পূর্বে থেকে চেনা ছিল না। গুলশান থানায় পৌঁছালে একটি মোটরসাইকেল আমাকে পথ দেখিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল। তখন গুলির শব্দ শুনতে পাচ্ছিলাম। প্রথমেই গাড়ি নিয়ে ৭৯ নং রোডের পূর্ব মাথায় হলি আর্টিজানের একেবারে মূল গেটে পৌঁছে যাই। কেউ একজন তখন আমাকে একটি বুলেট প্রুফ ভেস্ট এবং হেলমেট পরিয়ে দেয়। ওখানে ডিসি গুলশান, ডিসি ডিপ্লোমেটিক সিকিউরিটি, এডিসি গুলশান, এসি গুলশান, ওসি গুলশান, এডিসি ডিপ্লোমেটিক সিকিউরিটিসহ ডিবির সদস্যরা ছিল। তাদের কাছ থেকে জানতে পারি আনুমানিক রাত পৌনে নয়টার সময় কয়েকজন অল্প বয়সী ছেলে হাঁটতে হাঁটতে হলি আর্টিজানের গেট দিয়ে ভিতরের লনে প্রবেশ করে সামনে যাকেই পাচ্ছিল তাকেই গুলি করছিল। রেস্টুরেন্টের ভিতরে প্রবেশ করে তারা এলোপাতাড়ি গুলি করতে থাকে। ভিতরে অনেক বিদেশী রয়েছে যারা আটকা পড়েছে। পাশাপাশি বাঙালি অনেকেও রয়েছে। গুলির শব্দ শুনে গুলশান থানার ঐ এলাকায় দায়িত্বরত প্যাট্রোল সাব-ইন্সপেক্টর ফারুক হোসেন উপস্থিত হয়ে চার-পাঁচজন ছেলেকে অস্ত্র হাতে বের হয়ে আসতে দেখলে তাদেরকে চ্যালেঞ্জ করে। ছেলেগুলো পুলিশ দেখেই পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি করে এবং গ্রেনেড ছুড়ে। এতে দু’জন কনস্টবল আহত হয়। সাব-ইন্সপেক্টর ফারুক তখন আড় নিয়ে পালটা গুলি করতে থাকে। এর মধ্যে গুলশান থানার আর একটি প্যাট্রোল গাড়ি এসে উপস্থিত হয়। তখন ঐ সন্ত্রাসীরা দৌড়ে আবার হলি আর্টিজান বেকারির ভিতরে প্রবেশ করে। এরপর পুলিশ চতুর্পাশ ঘিরে ফেলে। ভিতরে তখন বার বার আল্লাহু আকবর, আল্লাহু আকবর ধ্বনি শোনা যাচ্ছিল।
হলি আর্টিজান বেকারির দক্ষিণ পাশে লেক ভিউ ক্লিনিক। হলি আর্টিজান এবং লেক ভিউ ক্লিনিক, দুটো ভবনের ভিতরটা ছিল অন্ধকার। ভিতরে কী হচ্ছিল তা দূর থেকে দেখা যাচ্ছিল না। জিম্মি উদ্ধারের জন্য নিয়োজিত পুলিশের একটি টিম হলি আর্টিজান বেকারির পশ্চিম দেয়ালের পাশ থেকে প্রথম একজন জিম্মিকে উদ্ধার করে। ঐ জিম্মি ছিল একজন আর্জেন্টিনিয়ান। তাকে দেয়ালের উপর দিয়ে এপাশে নিয়ে আসা ছিল অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। তারপরও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পুলিশ সদস্যরা কাজটি করেছিল। আর্জেন্টিনিয়ান ঐ ব্যক্তি তখন কাঁপছিল এবং বিশ^াস করতে পারছিল না যে সে বেঁচে আছে। সে হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে দীর্ঘদিন ধরে কুকের কাজ করত। সে ভালো বাংলা বলতে পারত না, ইংরেজিও পারত না। ফলে তার কাছ থেকে তেমন কোনো তথ্য পাচ্ছিলাম না। তবে সে যতটুকু বলতে পারছিল তাতে বুঝতে পারছিলাম ভিতরে বেশ কয়েকজন সন্ত্রাসী আছে, তারা বিদেশীদের গুলি করেছে এবং ছুরি দিয়ে আহত করেছে। সে কোনোমতে পালিয়ে ড্রেনের মধ্যে লুকিয়ে ছিল।
হলি আর্টিজানে প্রবেশের মুখে হাতের বামপাশের্ একটি বহুতল ভবনের সামনের রাস্তার ফুটপাত ঘেঁষে আমরা অবস্থান করছিলাম। হলি আর্টিজানের ভিতরের ঘটনা সম্পর্কে তখন অধিকতর তথ্যের প্রয়োজন ছিল। পুলিশের সার্ভিলেন্স টিম হলি আর্টিজানের পাশের বহুতল ভবনের দোতলার একটি বাসায় উঠে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য সংগ্রহ করে। ঐ বাসায় এক বিদেশি দম্পতি ছিল। তাদের জানালা দিয়ে হলি আর্টিজানের দোতলার কর্মকান্ড দেখা যাচ্ছিল। সন্ত্রাসীরা নীচতলায় লাইট বন্ধ করে দেয়ায় আলোর স্বল্পতার কারণে সবকিছু ছিল অস্পষ্ট। ঐ আলোতে অস্ত্র হাতে কয়েকজনকে দোতলায় ঘুরতে দেখা যায়। এতে নিশ্চিত হই যে, সন্ত্রাসীরা ভিতরে রয়েছে।
আটকে পড়া জিম্মিদের সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে তেমন কিছু জানতে পারছিলাম না। জিম্মি উদ্ধারে ও সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারে কিছু সময়ের প্রয়োজন হচ্ছিল। এজন্য কিছুটা কৌশল অবলম্বন করা অপরিহার্য হয়ে পড়ে। কৌশল হিসাবে ভেতরে থাকা সন্ত্রাসীদের সাথে যোগাযোগ স্থাপনের চেষ্টার অংশ হিসাবে হ্যান্ডমাইকে তাদেরকে আত্মসমর্পণ করার জন্য নির্দেশ দেই। পুলিশ তাদেরকে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলেছে এবং পালানোর কোন সুযোগ নেই জানিয়ে হ্যান্ডমাইকে ডিসি (গুলশান) এবং আমি বারবার ঘোষণা দিতে থাকি।
এমনি সময় ভেতরে আটকে পড়া একজন অবসরপ্রাপ্ত সেনা সার্জেন্ট-এর সাথে এডিসি (গুলশান) টেলিফোনে যোগাযোগ করতে সমর্থ হয়। ঐ সার্জেন্ট হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্ট-এ নিহত ফারাজ-এর দেহরক্ষী হিসাবে কর্মরত ছিল। সে বারবার তাকে ঐখান থেকে উদ্ধার করে নেয়ার জন্য ফোনে অনুরোধ করতে থাকে। এডিসি (গুলশান) তখন মোবাইল সেটটি আমাকে দিলে সরাসরি আটকে পড়া ঐ অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট এর সাথে কথা বলি। তিনি আমাকে জানান যে, “তিনি লেক ভিউ ক্লিনিক-এর নিচ তলায় বারান্দায় আটকে পড়েছেন এবং তার সাথে আরও ৭/৮ জন জিম্মি রয়েছে। লেক ভিউ ক্লিনিকে কোন সন্ত্রাসী নেই। সন্ত্রাসীরা হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্ট-এর নিচতলার রুমের ভিতরে অবস্থান করছে। স্যার আপনারা কাউন্টার ফায়ার করলে আমরা বেরিয়ে আসতে পারি।” তখন ঐ জিম্মিদের উদ্ধারের জন্য ডিসি (গুলশান)-কে নির্দেশ দেই এবং মোবাইল ফোনটি ডিসি (গুলশান)-কে দেই।
ডিসি (গুলশান) আমার সামনেই ফোনে অবসরপ্রাপ্ত এই সার্জেন্টের সাথে কথা বলতে থাকে। তাকে বারবার বাইরে আসতে বললেও ভয়ে সে বাইরে আসছিল না। আশাপ্রদ ছিলাম যে, তার কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাব। সে ফোনে আরও বলছিল যে, তার আশেপাশে কোন সন্ত্রাসী দেখতে পাচ্ছে না। সিদ্ধান্ত নিলাম ঝুঁকি নিয়ে হলেও এই জিম্মিদের উদ্ধার করব। ঐ সিদ্ধান্ত অনুসারে ওসি (গুলশান) আর ওসি (বনানী) দু’জনের নেতৃত্বে দু’টো টিম গঠন করা হয়। তারা হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্ট-এর গেটে (৭৯ নং রোড) দু’পাশে অবস্থান নেয়। ডিবির টিমও দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে অবস্থান নেয়। তখন হলি আর্টিজান-এর দিকে উঁচুতে ব্ল্যাংক ফায়ার করতে করতে হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্ট-এর গেট থেকে প্রায় ৭/৮ গজ ভিতরে ঢুকে যাই। সে মুহূর্তে ঐ সার্জেন্টসহ ৮/৯ জন জিম্মি আমাদের নির্দেশ মতে হাত উঁচু করে হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্ট এবং লেক ভিউ ক্লিনিকের দিক থেকে বের হয়ে আসে।
তাদেরকে উদ্ধার করে হলি আর্টিজান-এর বাইরের গেট অর্থাৎ পশ্চিম গেট পার হয়ে প্রায় ১০ থেকে ১২ গজ বাহির চলে আসি। ঠিক সেই মুহূর্তে পিছনে বিকট বিস্ফোরণের শব্দ পাই। তাৎক্ষণিকভাবে দ্রুত ৭৯ নং রোডের দুই পাশের ভবনের নীচে যে যেখানে পারি অবস্থান নেই। আমি হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্ট-এর লাগোয়া পশ্চিম পার্শ্বের বহুতল ভবনের গেটের সামনে অবস্থান নেই। মুহূর্তের মধ্যে দেখি আমার ডানে, বামে এবং পেছনে প্রায় ৩০ জন পুলিশ সদস্য রক্তাক্ত, আহত অবস্থায় পড়ে আছে। যেখানে দাঁড়িয়ে ছিলাম ঠিক তার ৫ গজ পেছনে অর্থাৎ দক্ষিণ পার্শ্বে একজন অফিসারকে রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে শুয়ে কাতরাতে দেখি। পরে জানতে পারি তিনি ছিলেন এসি মো. রবিউল করিম। বহুতল ভবনের গেটের সামনে আমার ঠিক ২ গজ বামে ঘুরতে ঘুরতে মাটিতে পড়ে যান বনানী থানার অফিসার ইনচার্জ মো. সালাহ্ উদ্দীন খান। তার মুখ ও গলা থেকে ফিনকি দিয়ে রক্ত বের হচ্ছিল। ঐ বহুতল ভবনের সামনে ৭৯ নং রোডের পূর্ব প্রান্তে তখন শুধু রক্ত আর রক্ত। ঐ সময়ের অভিব্যক্তি ভাষায় বর্ণনা করার মতো নয়। এ্যাডিশনাল কমিশনার (ক্রাইম), এডিসি (গুলশান), ওসি (গুলশান), এসি (গুলশান), বনানী ফাঁড়ির ইনচার্জ, গুলশান ফাঁড়ির ইনচার্জ, পিআই বনানী, ডিবির অনেক সদস্যসহ প্রায় ৩০ জন পুলিশ সদস্য মারাত্মকভাবে ¯িপ্রন্টারের আঘাতে ক্ষতবিক্ষত। তাদের শরীরের বিভিন্ন স্থান থেকে ঝরছে রক্ত। ঐ মুহূর্তে সবাইকে হাসপাতালে নেয়ার মতো না ছিল পর্যাপ্ত ফোর্স, না ছিল কোন অ্যাম্বুলেন্স বা গাড়ি।
এমন সময় আইজিপি মহোদয় গুলশান ২ নম্বর গোল চক্করের কাছে এসে আমাকে ফোন করেন এবং হলি আর্টিজান-এ ঘটনাস্থলে আসছেন বলে জানান। তখন আইজিপি মহোদয়কে সংক্ষেপে ঘটনার ভয়াবহতা অবহিত করি এবং সন্ত্রাসীদের ও পুলিশের সর্বশেষ অবস্থান সম্পর্কে জানাই।
হলি আর্টিজানের ঐ রাতে সবচেয়ে সংকটময় সময় ছিল তখন। কারণ হলি আর্টিজানের গেট তখন খোলা। সন্ত্রাসীরা দৌড়ে পালিয়ে গেলে তাদের ঠেকানো অত্যন্ত দুঃসাধ্য হয়ে পড়বে। ঐ মুহূর্তে সন্ত্রাসীদের পলায়নের পথ রোধ করা, হতাহতদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া ও তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করার অনেকগুলো দায়িত্ব এসে পড়ে আমার উপর। যারা ঘটনাস্থল থেকে বেশ দূরে ছিল তাদের পক্ষে তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনার ভয়াবহতা ও গুরুত্ব অনুধাবন করা সম্ভব ছিল না।
যে সকল অফিসার ও ফোর্স আহত হয়নি তাদের একাংশকে হলি আর্টিজানের গেটের দায়িত্ব দেই যেন সন্ত্রাসীরা দৌড়ে পালাতে না পারে। এই অংশ তখন ক্রমাগত দক্ষিণ পূর্ব দিকে থেমে থেমে গুলি করতে থাকে। অন্য অংশকে দায়িত্ব দেই হতাহতদের শুশ্রুষা করার এবং হাসপাতালে পৌঁছে দেয়ার। সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ছিল আহত এসি রবিউল ও ওসি বনানীকে ঘটনাস্থল থেকে হাসপাতালে প্রেরণ করা। বেশ কয়েকবারের চেষ্টায় ডিসি গুলশান কাজটি করতে পেরেছিল। ঐ সময় র্যাব ওয়ান এর সিও তাকে সহায়তা করেছিল। এর মধ্যে ৭৯ রোডের পশ্চিম মাথায় একটি ব্যারিকেড দেয়ার নির্দেশনাও আমি দেই। কারণ সন্ত্রাসীরা বেরিয়ে দৌড় দিলে রাস্তার ঐ মাথা দিয়েই যেতে হবে। ঐ ব্যারিকেড দেয়ার পর আমি নিশ্চিত হয়েছিলাম যে সন্ত্রাসীরা আর পালাতে পারবে না। হলি আর্টিজানের বাইরের গেটে ভারী অস্ত্রসহ পুলিশের একটা শক্ত টিম মোতায়েন করার নির্দেশ দেই।
কোনো অ্যাম্বুলেন্স না থাকায় পুলিশের গাড়িতেই একে একে সবাইকে হাসপাতালে পাঠানোর নির্দেশ প্রদান করি। কিন্তু গাড়িগুলো বহুতল ভবন পর্যন্ত আসা ছিল অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। সেই ঝুঁকি মেনে নিয়েই একটা একটা করে গাড়ি বহুতল ভবনের নিচে আসে। আহত সবাইকে যখন গাড়িতে উঠানো হচ্ছিল রক্তে ভেসে যাচ্ছিল গাড়িগুলো। গ্রেনেডের স্পিøন্টার কারো মাথায়, কারো হাতে, কারো পায়ে আবার কারো সমস্ত শরীরে লেগেছিল।
বহুতল ভবনের নিচে তখন অবস্থান করাটা সত্যি ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। কারণ একতলায় ভবনের নিচে পূর্ব দিকে একটা ফাঁকা জায়গা ছিল। ঐ ফাঁকা জায়গা দিয়ে সন্ত্রাসীরা গ্রেনেড ছুঁড়লে আমরা সবাই আক্রান্ত হব। আবার এই জায়গা ছেড়ে যাওয়ারও উপায় নেই। স্ট্রাটেজিক পয়েন্ট অব ভিউ থেকে এই জায়গার অবস্থান আমাদের জন্য ছিল অতি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এখান থেকে হলি আর্টিজান সবচেয়ে নিকটে। সহকর্মীরা অনেকেই বলছিল আমি যেন নিরাপদ স্থানে সরে যাই। কিন্তু রাজি হইনি। কারণ সন্ত্রাসী ঐ আক্রমণের গুরুত্ব বুঝতে পেরেছিলাম। কোথাও সামান্য একটু গ্যাপ হলে সন্ত্রাসীরা পালানোর সুযোগ নিতে পারে। এজন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হলেও আমি, ডিসি গুলশান, ডিসি ডিপ্লোমেটিক সিকিউরিটিসহ সকলকে নিয়ে ঐ ভবনের নিচে অবস্থান করছিলাম এবং সার্বিক নির্দেশনা দিয়ে কার্যক্রম তদারকি করছিলাম। সত্যি কথা বলতে কী, বহুতল ভবনের ওই নিচতলা ব্যতীত অন্য কোথাও অবস্থান করে সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ এবং অনুধাবন করা ছিল অসম্ভব। এক তলার ওই ফাঁকা জায়গা দিয়ে একটু পর পর শটগানের গুলি করছিলাম। এর মাঝেই বিস্তারিত ঘটনা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং আইজিপি মহোদয়কে অবহিত করি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তখন আমাকে পুলিশ সদস্যদের ব্যক্তি নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ সম্পূর্ণ এলাকা কর্ডন করার নির্দেশ দেন এবং একটি অটুট অপারেশনাল পরিকল্পনা গ্রহণ করে অভিযান পরিচালনার নির্দেশ দেন।
এরই মধ্যে আমার নির্দেশে ৭৯ নং রোডের পশ্চিম মাথায় এপিসি মোতায়েন সম্পন্ন হয়েছে। মোট চারটি এপিসি মোতায়েনের নির্দেশনা দিয়েছিলাম। প্রত্যেকটি এপিসির উপর ছিল এলএমজি ও প্রশিক্ষিত অফিসার। কোনো সন্ত্রাসী যেন লেক পার হয়ে পালাতে না পারে তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল পূর্ব দিকে লেকের পারে ওসি ভাটারা ও তার ফোর্সকে, উত্তর পূর্ব দিকে লেকের পাড়ে এডিসি ক্যান্টনমেন্ট ও ওসি বাড্ডাকে আর দক্ষিণ পূর্ব দিকে লেকের পাড়ে এসি বাড্ডা ও তার ফোর্সকে। তারা শক্তিশালী টর্চ লাইট হাতে লেকে আলো ফেলছিল আর পর্যবেক্ষণ করছিল। হলি আর্টিজানের পাশের ছাদে দায়িত্ব ছিল এসি গুলশান ও এসি ক্যান্টনমেন্টের। রাজারবাগ থেকে প্রয়োজনীয় অস্ত্র, গুলি, গ্যাস গ্রেনেড আর সাউন্ড গ্রেনেড আনার দায়িত্ব ছিল ডিসি লজিস্টিক্স আর ডিসি হেডকোয়ার্টার্সের। এগুলো সংগ্রহে রাখছিল ওসি ক্যান্টনমেন্ট ও সঙ্গীয় ফোর্স। গ্রাউন্ড পর্যায়ে কো-অর্ডিনেশনের জন্য একটি অস্থায়ী কন্ট্রোল রুম ৭৯ নং রোডের পশ্চিম মাথায় ইতোমধ্যে তৈরি করা হয়েছিল। ওখানে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল ইন্সপেক্টর অপারেশনস্, গুলশান থানাকে। ওখান থেকেই সকল কার্যক্রম সমন্বয় করা হচ্ছিল। এর মধ্যে অস্থায়ী কন্ট্রোল রুমে আইজিপি মহোদয় এবং এডিশনাল আইজিপি এসবি উপস্থিত হয়েছিলেন। আইজিপি মহোদয় নিজেই অপারেশনের প্রস্তুতিসহ প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিচ্ছিলেন। যদিও তখন থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছিল, প্রত্যেক পুলিশ সদস্য ছিল দায়িত্বে অনড়। আর তাদের মনোবল ছিল সম্পূর্ণই অটুট।
উদ্ধার হওয়া অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্টের কাছ থেকে লেক ভিউ ক্লিনিকের ভিতরে কোনো সন্ত্রাসী নেই জানতে পেরে মূলতঃ হলি আর্টিজান বেকারির উপর মনোযোগ দেই। উদ্ধারকৃত ভিকটিমদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য, বহুতল ভবনের দোতলায় বসবাসরত বিদেশী নাগরিকদের তথ্য এবং আমাদের ইন্টেলিজেন্স ও সার্ভিলেন্স টিমের তথ্য বিশ্লেষণ করে তখন অনুমান করতে পারছিলাম সন্ত্রাসীরা কম বেশি বিদেশীদের হতাহত করেছে। কিন্তু ওরা কী চাচ্ছে তা স্পষ্ট ছিল না। আবার ওদের সাথে আলোচনারও সুযোগ সৃষ্টি করা যাচ্ছিল না। হ্যান্ডমাইকে সন্ত্রাসীদের অনেকবার আত্মসমর্পণের অনুরোধ করা হলেও কোনো সাড়াশব্দ পাওয়া যাচ্ছিল না।
পরবর্তীতে অপারেশনের প্রয়োজনে যে সকল সরঞ্জামাদি দরকার হতে পারে সেগুলো নিশ্চিত করার জন্য তখন অস্থায়ী কন্ট্রোল রুমকে নির্দেশ প্রদান করি। ফায়ার সার্ভিস, অ্যাম্বুলেন্স, বিদ্যুৎ সঞ্চালন নিয়ন্ত্রণ, মাইকের ব্যবস্থাসহ সবকিছু তখন অস্থায়ী পুলিশ কন্ট্রোল রুমের নিয়ন্ত্রণাধীন। ডিজি র্যাব, কাউন্টার টেরোরিজমের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার, সোয়াট, বোম ডিসপোজাল টিমের অফিসাররাসহ পুলিশের সকল ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও তখন চলে এসেছেন। সাবসিডিয়ারি আক্রমণ প্রতিরোধের জন্য অপরাধ বিভাগের ডিসিদের যার যার অধিক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ ও তল্লাশি চৌকি স্থাপন করার নির্দেশ প্রদান করি।
ইউনাইটেড হাসপাতাল ঘটনাস্থল থেকে সবচেয়ে কাছে থাকায় আহত পুলিশ সদস্যদের সকলকে ইউনাইটেড হাসপাতালে প্রেরণ করার নির্দেশ প্রদান করেছিলাম। এর মধ্যে হাসপাতাল থেকে সংবাদ এলো যে এসি রবিউল আর ওসি বনানী শহীদ হয়েছেন। প্রথমে বিশ^াস করতে পারিনি। কিন্তু আমাকে বিশ্বাস করতে হয়েছে। কারণ সন্ত্রাসীদের স্পিøন্টার সত্যি আমাদের দু’জন পেশাদার পুলিশ সদস্যদের জীবন কেড়ে নিয়েছে। দুঃখজনক হলেও সত্য, অকুতোভয় ঐ দুই পুলিশ সদস্য আমারই নির্দেশেই গুলশান থানা এলাকায় এসেছিল সন্ত্রাসীদের রুখে দিতে। জীবন দিয়ে তারা প্রমাণ করে গেছে এ দেশের পুলিশ কোনোদিনও এ মাটিতে জঙ্গীদের স্থান দেবে না। সশ্রদ্ধ সালাম জানাই জাতীয় এই বীরদের।
এক পর্যায়ে প্রায় দেড় ঘন্টা পর আমি সোয়াট টিমের কাভারে ঘটনাস্থল থেকে ৭৯ নং রোডের পশ্চিম প্রান্তে স্থাপিত অস্থায়ী কন্ট্রোল রুমে এসে পৌঁছাই। আইজিপি মহোদয়ের নেতৃত্বে¡ আমরা অস্থায়ী কন্ট্রোল রুমের পাশে একটি বাড়িতে পরবর্তী অপারেশন পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনায় বসি। ঐ সময় ওখানে এডিশনাল আইজি এসবি, ডিজি র্যাব, এডিশনাল কমিশনার কাউন্টার টেরোরিজম, ডিএমপির এডিশনাল ও জয়েন্ট কমিশনারবৃন্দসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার অনেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। ওখানে অপারেশন পরিকল্পনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা ও চুলচেরা বিশ্লেষণ হতে থাকে। ডিএমপির সোয়াট টিম ইতোমধ্যে প্রস্তুতি গ্রহণ করে ফেলেছে। তারা তাদের প্রয়োজনীয় রেকিও শেষ করেছে। কীভাবে তারা অভিযান করবে তা সোয়াট কমান্ডার এবং বোম ডিসপোজাল ইউনিট কমান্ডার ছক করে আইজিপি মহোদয়ের সম্মুখে উপস্থাপনও করেছে। ইতোমধ্যে সোয়াট এবং র্যাবের ¯œাইপার টিম আশে পাশের উঁচু ভবনের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় অবস্থান নিয়ে হলি আর্টিজানের দিকে তাক করে সতর্কাবস্থায় পর্যবেক্ষণ করতে থাকে। এর মধ্যে বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও বিজিবির ডুবুরী দল গুলশান লেকের মধ্যে টহল কার্যক্রম চালাতে থাকে। এক পর্যায়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পরিচালক, মিলিটারি অপারেশনস্ সহ দু’জন ঊর্ধ্বতন অফিসার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং ঘটনার সর্বশেষ অবস্থা ও করণীয় নিয়ে আমাদের সাথে বিস্তারিত আলোচনা করেন। এরইমধ্যে রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ পর্যায়ের এক সভায় উপস্থিত হওয়ার নির্দেশনা পেলে আইজিপি মহোদয়ের সাথে আমরা সেখানে যাই। ঐ সভায় সিদ্ধান্ত হয় অপারেশনের মূল দায়িত্ব পালন করবে সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডো ইউনিট – পুলিশ ও র্যাব সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। প্যারা কমান্ডো ইউনিট সিদ্ধান্ত নেয় যে তারা সকালে অভিযান পরিচালনা করবে।
প্যারা কমান্ডো ইউনিটের অপারেশনের জন্য সেনাবাহিনীর এপিসিসহ সকল যানবাহন চলাচলের পথ সুগম করা, দেশি-বিদেশি মিডিয়ার কর্মী আর উৎসুক জনতাকে নিরাপদ দূরত্বে নিয়ে যাওয়া, ফায়ার সার্ভিস ও অ্যাম্বুলেন্সের পথ উম্মুক্ত রাখা, হাসপাতালে সকল ব্যবস্থাপনা প্রস্তুত রাখা, ঘটনাস্থলের আশেপাশের বাড়ির নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়ে আইজিপি মহোদয়ের পরামর্শক্রমে সকল প্রয়োজনীয় নির্দেশনা আগেই পুলিশকে প্রদান করেছিলাম।
প্যারা কমান্ডো অপারেশন শেষ হলে আমরা হলি আর্টিজানের ভিতরে প্রবেশ করি। হলি আর্টিজানে সন্ত্রাসীরা দেশি বিদেশি নাগরিকসহ মোট ২০ জনকে হত্যা করে। এ ছাড়া দু’জন পুলিশ সদস্যও আত্মোৎসর্গ করেন। প্যারাকমান্ডো অভিযানে নিহত হয় ০৬ জন সন্ত্রাসী। সম্পূর্ণ হলি আর্টিজান তখন লন্ডভন্ড। সন্ত্রাসীদের লাশগুলো বাইরের মাঠে থাকলেও অন্য সবার লাশগুলো ছিল হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টের বিভিন্ন জায়গায়। সবকিছু মিলিয়ে ক্রাইম সিনের আকার ছিল অনেক বড়। এজন্য সিআইডির সহায়তা চেয়ে আগেই সিআইডির এডিশনাল আইজিকে অনুরোধ করে রেখেছিলাম। পড়ন্ত বিকেলে লাশগুলো অ্যাম্বুলেন্সযোগে কড়া নিরাপত্তায় নিয়ে যাওয়া হয় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে।
হলি আর্টিজান থেকে মোট ৩২ জন দেশী বিদেশী জিম্মিকে উদ্ধার করা হয়। পুলিশের পেশাদারিত্ব এবং দক্ষতা এবং সময়োচিত উপস্থিতির কারণে একজন জঙ্গীও পালাতে সক্ষম হয়নি হলি আর্টিজান থেকে। বরং ঐ অভিযানে পুলিশের দুজন কর্মকর্তা শহীদ হন। আহত হন মোট ২৯ জন। আহত প্রায় সকলের শরীরে কম বেশি স্পিøন্টার রয়েছে যেগুলো সময়ে সময়ে শরীরে তীব্র যন্ত্রণার সৃষ্টি করে মনে করিয়ে দেয় হলি আর্টিজানে সন্ত্রাসী হামলার ঐ রাতের বিভীষিকার কথা। তবে পুলিশ সদস্যরা কেউ থেমে থাকেন নি। নিজ নিজ কর্মস্থলে ঠিকই তারা শত শত বিট পুলিশিং, উঠোন বৈঠক করে আর ভাড়াটিয়া তথ্য ফরম সংগ্রহের মাধ্যমে জঙ্গী দমনে জনসম্পৃক্ততার বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে চলেছেন। নিজের শরীরের স্পিøন্টারের যন্ত্রণা আর ব্যথাকে তারা জয় করছেন দেশকে জঙ্গীমুক্ত করার গৌরবময় পেশাদারিত্বের উৎকর্ষতায়।
সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ দমনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দ্ব্যর্থহীন ভাষায় ঘোষণা করেছেন ‘জিরো টলারেন্স টু টেরোরিজম পলিসি’। তাঁর এ আহ্বানে সাড়া দিয়ে আজ জাতি ধর্ম বর্ণ শ্রেণী পেশা নির্বিশেষে জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে সৃষ্টি হয়েছে এক অভূতপূর্ব নাগরিক ঐক্য। বর্তমান সরকারের পলিটিক্যাল কমিটমেন্ট, নাগরিক ঐক্য এবং বাংলাদেশ পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থাসমূহের পেশাদারিত্ব ও চমৎকার সমন্বয়ের মাধ্যমে জঙ্গী দমনে এসেছে প্রশংসনীয় সাফল্য। হলি আর্টিজান-এর পরবর্তীতে শোলাকিয়া, মৌলভীবাজার, সিলেট, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, কুমিল্লা ও সীতাকুন্ডুসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় একের পর এক সফল জঙ্গী বিরোধী অভিযানে আজ জঙ্গীদের নেটওয়ার্ক প্রায় ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে। জঙ্গী দমনে পৃথিবীতে বাংলাদেশ আজ রোল মডেল। পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ও সোয়াট-এর সাফল্যের প্রশংসা আজ দেশে বিদেশে সর্বত্র। এ পর্যন্ত কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের ১৯টি অভিযানে নব্য জেএমবি প্রধান তামীম চৌধুরীসহ প্রায় ৬৬ জন আত্মস্বীকৃত জঙ্গী নিহত হয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে অনেক জঙ্গীকে। উদ্ধার হয়েছে বিভিন্ন অস্ত্র, গোলাবারুদ, বিস্ফোরক, সুইসাইডাল ভেস্ট, বোমা তৈরীর সার্কিট ও অন্যান্য সরঞ্জামাদি। এ সাফল্য শুধু পুলিশের একার নয় – এ দেশের সকল শান্তিকামী জনতার, যার পুরোভাবে নেতৃত্ব দিচ্ছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও ইন্সপেক্টর জেনারেল, বাংলাদেশ পুলিশ-এর সরাসরি তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশের মাটি থেকে জঙ্গীবাদের শেকড় চিরতরে উপড়ে ফেলতে জীবন বাজি রেখে অহর্নিশ দায়িত্ব পালন করে চলেছে বাংলাদেশ পুলিশের প্রতিটি সদস্য। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি সাধারণ জনগণের স্বতস্ফুর্ত সমর্থন ও সম্পৃক্ততার মাধ্যমেই বাংলাদেশের মাটি থেকে চিরতরে সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ নির্মূল করা সম্ভব।
মো. আছাদুজ্জামান মিয়া বিপিএম (বার), পিপিএম
কমিশনার, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ