ডিএমপি নিউজ: রাজধানীর হাজারীবাগ থানা এলাকা থেকে অপহৃত ২ বছর ৪ মাসের শিশু তাওসীনকে কুমিল্লা থেকে উদ্ধারসহ শিশু ক্রয়-বিক্রয় ও অপহরণকারী চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা-রমনা বিভাগের একটি দল।
গ্রেফতারকৃতরা হলো সুলতানা আক্তার ওরফে নেহা, মোঃ সাইফুল ইসলাম ও মোঃ শাহজাহান। গ্রেফতারের সময় তাদের হেফাজত থেকে অপহৃত শিশু তাওসীনকে উদ্ধারসহ শিশু বিক্রির ২৩ হাজার ৫০০ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।
বুধবার কুমিল্লার লালমাই ও বরুড়া থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করে ধানমন্ডি জোনাল টিম।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ডিএমপির ডিবি কম্পাউন্ডে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সাথে ব্রিফিংকালে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বিপিএম (বার), পিপিএম (বার)।
তিনি বলেন, গত ২১ মার্চ ২০২৪ সকালে অন্যান্য দিনের মতো স্ত্রী ও সন্তানদের বাসায় রেখে রিকশা চালাতে বের হন হাজারীবাগের ঝাউচর এলাকার নুরুল ইসলাম। বিকাল সোয়া চারটার দিকে তার ছয় বছরের মেয়ে তাবাসসুমের সাথে ছেলে তাওসীন বাসার সামনে খেলতে যায়। তারা যখন খেলছিলো তখন তাদের পাশে বসেছিলো তাদের নানী লুৎফুন নাহার। কিছুক্ষণ পর একজন বোরখা পড়া অজ্ঞাতনামা মহিলা লুৎফুন নাহারকে জিজ্ঞাসা করে এরা অপনার কি হয়, পরিচয় জেনে মহিলা সেখান থেকে চলে যায়। নাতী ও নাতনীদের খেলা অবস্থায় রেখে লুৎফুন নাহার পাশেই নিজের বাসায় যান। এই সুযোগে বোরকা পড়া মহিলাটি আবার আসেন এবং তাদের দুইজনের হাতে দুইটা চিপস দেন। এরপর মহিলাটি সুযোগ বুঝে শিশু তাওসীনকে কোলে করে নিয়ে সটকে পড়েন। শিশুটির বোন তাবাসসুম তার মাকে এসে জানায় যে, একজন মহিলা তার ছোট ভাইকে নিয়ে যাচ্ছে। একথা শুনে তাদের মা দ্রুত বাসার সামনে যায় এবং অজ্ঞাতানামা মহিলাসহ ছেলেকে খোঁজাখুঁজি করেও কোন সন্ধান পান না। ছেলেটির সন্ধানের জন্য এলাকায় মাইকিংও করা হয়। এরপর শিশুটির বাবা নুরুল ইসলাম পরের দিন হাজারীবাগ থানায় একটি মামলা রুজু করেন।
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) আরো জানান, থানা পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা রমনা বিভাগের ধানমন্ডি জোনাল টিম মামলাটি তদন্ত শুরু করে। মামলা তদন্তে তথ্য মেলে অভিযুক্তদের। এরপর গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় কুমিল্লার লালমাই ও বরুড়া থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর তাদের কাছ থেকে অপহৃত শিশু তাওসীনকে উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতারকৃত সুলতানা আক্তার ও তার স্বামী গ্রেফতারকৃত মোঃ সাইফুল ইসলাম শিশু তাওসীনকে অপরহণ করে ৫০ হাজার টাকায় অপর গ্রেফতারকৃত অভিযুক্ত শাহজাহানের কাছে বিক্রি করে দেয়। গ্রেফতারের সময় অপহরণকারী চক্রটির কাছ থেকে শিশু বিক্রির নগদ ২৩ হাজার ৫০০ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।
তিনি জানান, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় এ ধরনের কালো বোরখা পড়া মহিলারা শিশু চুরির উদ্দেশ্যে ঘুরে বেড়ায়। এরা অভিভাবক ছাড়া কোন ছোট শিশুকে পাওয়া মাত্রই তাদেরকে চিপস, আইসক্রীম ও চকলেট দিয়ে কৌশলে অপহরণ করে নিয়ে যায়।
গ্রেফতারকৃতদেরকে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।