হাত ছাড়াই জন্ম হয়েছিল এই শিশুটির। কিন্তু শুনলে অবাক হবেন যে এই বাচ্চা মেয়েটিই হাতের লেখা প্রতিযোগিতায় জাতীয় পুরস্কার জয় করেছে। বাচ্চাটির নাম স্যারা। বয়স ১০ বছর। বসবাস করে যুক্তরাষ্ট্রের ম্যারিল্যান্ডে।
জানের-বোলস্টার জাতীয় হস্ত-লিখন প্রতিযোগিতায় বিচারকদের রায়ে সে-ই প্রথম হয়েছে। শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধী শিশুদের উৎসাহিত করতে প্রতি বছর এই পুরস্কার দেওয়া হয়।
স্যারা প্রমাণ করেছে যে আর দশজন সাধারণ মানুষের মতোই যে কোনো কাজ সে করে ফেলতে পারে। এবং শুধু সেটাই নয়, সে দেখিয়ে দিয়েছে যে কখনও কখনও তাদের চেয়েও সে ভালোভাবেই সেটা করতে পারে।
হাত না থাকার কারণে হাতের লেখার নিজস্ব একটি পদ্ধতি বের করে নিয়েছে স্যারা। দুই বাহু যেখানে শেষ হয়েছে তার মাথায়, দুটো বাহুর মাঝখানে পেন্সিল ধরে সে লেখালেখি করে।
সে এখন তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী। সে বলেছে, তার শিক্ষক যখন তাকে প্রথম বাঁকা করে হাতের লেখা লিখতে শেখালো তখন তার মনে হয়েছিল এই কাজটা সে খুব সহজাতভাবেই করে ফেলতে পারছে।
পুরস্কার হিসেবে তাকে দেওয়া হয়েছে ৫০০ ডলার। তার জন্ম হয়েছিল চীনে। কিন্তু মাত্র ছ’বছর বয়সে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এক দম্পতি তাকে দত্তক নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে আসেন। সে যখন নতুন একটি দেশে আসে তখন সে শুধু ম্যান্ডারিন ভাষায় বলতে ও লিখতে পারতো।
কিন্তু তার পরপরই সে খুব দ্রুত তার বড় বোন ভেরোনিকার কাছ থেকে ইংরেজি ভাষা শিখে ফেলে। তার বোন বলেন, “সে যেভাবে একেকটা অক্ষর তৈরি করে আমার সেটা খুব পছন্দের। এটা এক ধরনের শিল্প।”
তাকে আমেরিকায় নিয়ে আসার পর পরিবারটি তার জন্য কৃত্রিম হাতের খোঁজ করেছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা সিদ্ধান্ত নেয় যে হাত ছাড়া তো সে ভালোই করছে।
স্যারার মা ক্যাথরিন বলেছেন, “আমরা তার সিদ্ধান্তকে খুব গুরুত্ব দেই। সে যেটা করতে চায় তাকে সেটা করতে দেওয়া হয়। সে নিজে নিজেই তার মতো করে সব কাজ করে ফেলতে পারে।”
“তাকে দেখলে কখনো মনে হবে না যে সে একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী। যে কোন কিছুই সে করে ফেলতে পারে। তার মধ্যে ‘আমি করতে পারি’ এরকম একটা মনোভাব কাজ করে।”
স্যারাহ দাবা খেলতে, সাঁতার কাটতে ও ভাস্কর্য বানাতে পছন্দ করে। খবর বিবিসি।