শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, ২৩ টি জেলায় একটি করে সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ও প্রতিটি উপজেলায় একটি করে টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ স্থাপন করা হবে।
আজ আইডিইবি মিলনায়তনে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর আয়োজিত চীন সরকারের স্কলারশীপ প্রাপ্ত কারিগরি ক্ষেত্রের ৩৪৯ জন শিক্ষার্থীর যাত্রাপূর্ব ওরিয়েন্টেশন কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষাসচিব মো: আলমগীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে অতিরিক্ত সচিব ও কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অশোক কুমার বিশ্বাস, বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান মো: মোস্তাফিজুর রহমান, আইডিইবি’র সভাপতি এ কে এম এ হামিদ প্রমুখ বক্তৃতা করেন।
নুরুল ইসলাম নাহিদ নতুন প্রজন্মকে বিশ্বমানের দক্ষতায় গড়ে তোলাই হচ্ছে বর্তমান সরকারে শিক্ষানীতির মূল লক্ষ্য।
বলেন, চীন, জাপান, জার্মান অস্ট্রেলিয়া, কোরিয়া, সিংগাপুরসহ প্রতিটি উন্নত দেশের দিকে তাকালে দেখা যাচ্ছে তাদের প্রত্যেকের কারিগরি শিক্ষার্থীর এনরোলমেন্ট হার হচ্ছে ৬০ শতাংশের অধিক।
তিনি বলেন, আমাদের দেশের কারিগরি শিক্ষা অত্যন্ত পিছিয়ে ছিল। ২০০৯’এর পূর্বে কারিগরি শিক্ষার এনরোলমেন্ট ছিল এক শতাংশের নিচে। সরকারের নানামুখী উদ্যোগ ও কার্যক্রমের ফলে বর্তমানে তা ১৪ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। তিনি বলেন, সরকার আগামী ২০২০ সালের মধ্যে এ হার ২০ শতাংশ এবং ২০৩০ সালের মধ্যে ৩০ শতাংশে এ উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা ঘোষণা করেছে। এজন্য নতুন কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
আধুনিক জ্ঞান ও প্রযুক্তিদক্ষ নতুন প্রজন্ম হবে সমৃদ্ধ বাংলাদেশের মূল কারিগর। তাই সব শিক্ষার্থীকেই কোননা কোন পেশাগত দক্ষতা শিখানোর লক্ষ্যে কারিগরি শিক্ষাকে ঢেলে সাজানো হচ্ছে। কারিগরি শিক্ষার কারিকুলাম-সিলেবাস, নতুন নতুন প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে। সাধারণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও মাদ্রাসায় কারিগরি শাখা সংযোজন করা হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ থেকে এই প্রথম বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীকে স্কলারশীপ প্রদান করে বিদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নের জন্য পাঠানো হচ্ছে।
তিনি চীন সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এ ধারা আরো সম্প্রসারিত করা হবে। এই শিক্ষার্থীরা এক একজন দক্ষ জনবল হিসেবে জাতীয় উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এই উদ্যোগ কারিগরি শিক্ষা খাতে সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বলে জনাব নাহিদ মন্তব্য করেন ।
মন্ত্রী বলেন, কারিগরি শিক্ষার মান বৃদ্ধির লক্ষ্যে ইতোমধ্যে সিঙ্গাপুর থেকে ৪২০ জন এবং পরে আরো ১১৫০ জন শিক্ষককে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে । চীনের গুয়াংজুতে ৫৮১ জন শিক্ষকের পর্যায়ক্রমিক প্রশিক্ষণ চলছে । এ ধারা অব্যাহত থাকবে ।
উল্লেখ্য, কারিগরি তথা শিক্ষা খাতে এই প্রথম বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীর বিদেশী সরকারের স্কলারশীপ প্রাপ্তি। চীন সরকারের ৩০ জন বাছাইকারক নিজস্ব পদ্ধতিতে বাছাই করে মোট ৩৪৯ জন শিক্ষার্থীকে স্কলারশীপ প্রদান করেছে। এরমধ্যে ৩১৮ ছাত্র এবং ৩১ জন ছাত্রী। এরা চীনের ১০টি সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৩ বছর মেয়াদী ডিপে¬ামা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়বে। পরবর্তীতে সেখানে তারা উচ্চতর ডিগ্রিতে অধ্যয়ন তথা কর্মসংস্থানের সুযোগ পাবেন। এরা দেশের সরকারি-বেসরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ও টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজে অধ্যয়ন করছিল।
