ডিএমপি নিউজঃ অসুস্থ জীবন থেকে সুস্থ জীবনে ফিরিয়ে আনতে ঢাকা মেট্রাপলিটন পুলিশ ২৫ জন মাদক ব্যবসায়ী ও মাদকসেবীদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছে।
ডিএমপি’র ওয়ারী বিভাগ আজ ১৯ মে’১৭ শুক্রবার বিকাল ৩ টায় রাজধানীর গেন্ডারিয়া থানার ধূপখোলা মাঠে মাদক ও সন্ত্রাস বিরোধী কমিউটিনিং পুলিশিং সমাবেশের আয়োজন করে।
এ সময় শ্যামপুর শিল্প মালিক সমিতির সহযোগিতায় সমাবেশে ২৫ জন মাদক ব্যবসায়ী ও মাদকসেবীকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকুরী দিয়ে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হয়।
উক্ত সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন, বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা- ৬ আসনের সাংসদ কাজী ফিরোজ রশিদ, ঢাকা-৪ আসনের সাংসদ আবু হোসেন বাবলা, ঢাকা-৫ আসনের সাংসদ আলহাজ হাবিবুর রহমান মোল্লা, সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাংসদ এ্যাডভোকেট সানজিদা খানম।
এছাড়াও প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইন্সপেক্টর জেনারেল বাংলাদেশ পুলিশ এ কে এম শহীদুল হক বিপিএম, পিপিএম। অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ব করেন ডিএমপি কমিশনার মোঃ আছাদুজ্জামান মিয়া বিপিএম (বার), পিপিএম।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন- সারা পৃথিবী যখন জঙ্গিবাদে আতঙ্কিত সেই সময় ঢাকাকে আতঙ্কমুক্ত রেখেছে সুযোগ্য ডিএমপি কমিশনার। পুলিশকে প্রশংসিত করলে আমি গর্ববোধ করি। আমাদের পুলিশ ভালো কাজ করছে। জনগণের শক্তিতে আমরা উন্নয়নের পথে হাঁটছি। জনগণকে সঙ্গে না নিয়ে চললে আমরা সফল হতে পারবো না। মাদকের ডিমান্ড হ্রাস করার জন্য আমরা সামাজিক আন্দোলন প্রতিষ্ঠা করে চলছি। স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে মাদক বিরোধী কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন- দেশে ১৫৭ টি মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র থেকে চিকিৎসা দিয়ে মাদকসেবীদের সুস্থ জীবনে ফিরিয়ে আনার কাজ চলছে। ইয়াবা এখন সংক্রামক রোগের মত চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়েছে। সীমান্তে ও দেশের অভ্যন্তরে বিজিবি, পুলিশ, কোষ্টগার্ড, র্যাব মাদকের বিরুদ্ধে কাজ করে যাচ্ছে।
প্রধান আলোচকের বক্তব্যে আইজিপি বলেন- আমরা যদি সুশীল সমাজ ও সাধারণ মানুষের নিকট থেকে সহযোগিতা না পায় তাহলে আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব নয়। আমরা জনগণের সেবক এমন মানসিকতা নিয়ে জনগণকে সেবা দিতে হবে। আমরা জনগণের পুলিশ হতে চাই। আমাদের লক্ষ্য পুলিশ ও জনগণের মধ্যে দূরত্ব দূর করে একটি সুন্দর ও নিরাপদ সমাজ গঠন করা। দল-মত নির্বিশেষে সবাইকে জঙ্গিবিরোধী প্লাটফর্মে আসার আহ্বান জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন- ‘বাংলাদেশে রাজনীতি থাকবে, দল-মত সবই থাকবে। কিন্তু সাধারণ মানুষের জীবনের নিরাপত্তার জন্য মাদক ও জঙ্গিবাদবিরোধী কিছু বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছতে হবে। জঙ্গিবাদ ও মাদকাসক্তকে ভয়ানক অপরাধ হিসেবে মোকাবেলা করছে পুলিশ। অতীতের চেয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেক ভালো রয়েছে বলে জানান আইজিপি। দেশকে কোনো ভাবে ইরাক কিংবা সিরিয়া হতে দেয়া হবে না। দেশে সবচেয়ে বড় জঙ্গি হামলা গুলশান হলি আর্টিজান ও শোলাকিয়া হামলা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঘুরে দাঁড়িয়েছে। সফলভাবে মোকাবেলা করছে’।
সভাপতির বক্তব্যে ডিএমপি কমিশনার বলেন- জনগণকে নিরাপদ রাখার জন্য আমরা বাংলাদেশ পুলিশ ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ সাধ্যমত পরিশ্রম করে যাচ্ছি। আপনারা দেখেছেন জঙ্গি দমনে আমাদের সাফল্য। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার খরচ করে জঙ্গি দমনে। সেখানে আমরা জনগণকে সাথে নিয়ে জঙ্গিবাদ দমন করছি। অনেক সময় ঘটনা ঘটার আগে আমরা জঙ্গিদের আস্তানা সনাক্ত করে তাদের নির্মূল করেছি। অনেককেই আইনের আওতায় আনা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন- জনগণের সক্রিয় সমর্থন ছাড়া কোনভাবে সফল হওয়া যাবে না। জঙ্গিবাদ ও মাদকের বিরুদ্ধে সারা জাতি আজ ঐক্যবদ্ধ। আমরা এসব অপরাধের বিরুদ্ধে জনগণকে সাথে নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। অপরাধী যেই হোক কেউ আইনের উর্ধ্বে নয়। অপরাধী যেই হোক তাকে ছাড় দেয়া হবে না। বনানীর ঘটনায় আপনারা দেখেছেন অপরাধীকে ছাড় দেয়া হয়নি। জনগণকে পুলিশের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করার আহবান জানান ডিএমপি কমিশনার।