এই ড্রয়ে লাভ-ক্ষতি কোনটাই হয়নি বার্সা বা রিয়ালের। আগেই শিরোপা জিতে যাওয়া বার্সা লা লিগায় নিজেদের অপরাজিত থাকার রেকর্ডটা আরেক ম্যাচ বাড়িয়ে নিয়েছিল মাত্র।
রোববার রাতে ন্যু ক্যাম্পে ম্যাচের আগে ‘গার্ড অব অনার’ নিয়ে বিতর্ক হয়েছে বিস্তর। নিজেদের কথামত ম্যাচে বার্সাকে সেটি দেয়নি জিনেদিন জিদানের দল। তবে খেলা গড়াতেই সেসব অতীত, পুরো ম্যাচ জুড়েই পরে থাকল বারুদে উত্তাপ।
গত ডিসেম্বরে স্যান্টিয়াগো বার্নাব্যুতে লা লিগার প্রথম পর্বের এল ক্লাসিকোয় বার্সেলোনা জয় তুলে নিয়েছিল ৩-০ গোলে৷ ন্যু ক্যাম্পে ঘটনা বহুল ফিরতি এল ক্লাসিকো শেষ হয় ২-২ গোলের সমতায়৷ গোল পেয়েছেন দু’দলের সেরা চার তারকা৷ বার্সার হয়ে গোল করেন সুয়ারেজ ও মেসি৷ রিয়ালের হয়ে পাল্টা দেন রোনাল্ডো ও গ্যারেথ বেল৷ মেসি-রোনাল্ডোর উত্তেজক দ্বৈরথে কাউকে এগিয়ে রাখা না গেলেও চলতি লা লিগায় বার্সার অপরাজিত থাকার রেকর্ড অক্ষুন্ন থাকে৷
লা লিগার ৩৪ ম্যাচে অপরাজিত থেকে রিয়ালের বিরুদ্ধে এল ক্লাসিকোর লড়াইয়ে নেমেছিল ইতিমধ্যেই লিগ খেতাব ঘরে তোলা বার্সেলোনা৷ সেদিক থেকে লা লিগার বাকি ম্যাচগুলিতেও না হারাই ছিল বার্সার প্রধান লক্ষ্য৷ তাছাড়া ইনিয়েস্তার কেরিয়ারের শেষ এল ক্লাসিকো হওয়ায় বার্সা ফুটবলাররা মরিয়া ছিল রোনাল্ডোদের বিরুদ্ধে জয় তুলে নিতে৷
অন্যদিকে লিভারপুলের বিরুদ্ধে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালের আগে এতবড় মাপের ম্যাচ প্র্যাকটিস পাওয়া আর সম্ভব নয় রিয়ালের পক্ষে৷ চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সাকে লিগে প্রথমবার হারের স্বাদ দিতে পারলে লা লিগা ও কোপা ডেল রে হাতছাড়া হওয়ার ক্ষতে মলম লাগাতে পারতেন জিদানরা৷
দু’দলই নিজেদের লক্ষ্য পূরণের সুবর্ণ সুযোগ পেয়েছিল৷ যদিও শেষমেশ স্বান্তনার ড্র নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয় মেসি-রোনাল্ডোদের৷
ঘরের মাঠে ম্যাচের শুরুটা দারুণভাবে করে বার্সেলোনা৷ ৪ মিনিটের মাথাতেই গোলের সুযোগ তৈরি করেছিল তারা৷ যদিও মেসির বাড়ানো বল ফিনিশিং টাচে রিয়ালের জালে জড়াতে ব্যর্থ হন সুয়ারেজ৷ প্রাথমিক সুযোগ কাজে লাগাতে না পারলেও ম্যাচের ১০ মিনিটের মাথায় বার্সেলোনাকে এগিয়ে দেন সুয়ারেজই৷ রবার্তোর পাস থেকে গোল করেন বার্সার উরুগুয়েন স্ট্রাইকার৷
যদিও খুব বেশিক্ষণ ব্যবধান ধরে রাখতে পারেনি বার্সেলোনা৷ ১৪ মিনিটে বেঞ্জেমার পাস থেকে গোল করে রিয়ালকে সমতায় ফেরান রোনাল্ডো৷ ম্যাচের প্রথমার্ধে আর কোনও গোল না হলেও মশলার অভাব ছিল না৷ প্রথমার্ধে হলুদ কার্ড দেখেন রিয়ালের নাচো, ভারানে, রামোস ত্রয়ী৷ রেফারি কার্ড দেখিয়ে সতর্ক করেন বার্সার দুই মহাতারকা মেসি ও সুয়ারেজকে৷ প্রথমার্ধের সংযোজিত সময়ে লাল কার্ড দেখেন বার্সা তারকা রবার্তো৷
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই রিয়ালের দুশ্চিন্তা বাড়িয়ে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন রোনাল্ডো৷ ৫২ মিনিটে সুয়ারেজের পাস থেকে গোল করে দশ জনের বার্সাকে পুনরায় এগিয়ে দেন মেসি৷ ৫৮ মিনিটে সমর্থদের অভিবাদন স্বীকার করে মাঠ ছাড়েন ইনিয়েস্তা৷ ৭২ মিনিটে মার্কোর ক্রস থেকে গোল করে রিয়ালকে সমতায় ফেরান বেল৷ শেষ বেলায় ম্যাচের উত্তেজনায় ভেসে গিয়ে হলুদ কার্ড দেখেন রিয়ালের বেল, মার্সেলো ও বার্সার ব়্যাকিটিচ৷ যদিও শেষমেশ ম্যাচের স্কোরলাইনে আর কোনও বদল হয়নি৷