কবর থেকে শোনা যাচ্ছে কন্ঠস্বর। তাও আবার ৩০০০ বছর আগে মৃত্যু হয়েছে যাঁর। সে এক মিশরীয় ধর্মযাজক। মমি করে সংরক্ষিত রাখা হয়েছিল তাঁর দেহ। আর সেই দেহ থেকেই ২০২০ সালে বেরিবে এল কন্ঠস্বর। না, কোনও ভয় দেখানো আষাঢ়ে গল্প নয়, আধুনিক বিজ্ঞানের যুগে সত্যি করা হয়েছে সেই অসম্ভবকে।
ফারাও দ্বিতীয় রামসেসের আমলে ধর্মযাজক ছিলেন এই ব্যক্তি, নাম নেসিয়ামাম। তাঁর মৃতদেহ এত সুন্দরভাবে সংরক্ষিত ছিল যে তাঁর কন্ঠের খুঁটিনাটি স্ক্যান করেই দেখতে পান বিজ্ঞানীরা। থ্রি ডি প্রিন্ট করে বের করে আনেন, গলার ভিতরটা আসলে কেমন।
লিডস মিউজিয়ামে রাখা ছিল ওই যাজকের দেহ। ইউনিভার্সিটি অফ লন্ডনের গবেষকরা এই বিষয়ে গবেষণা করছেন। ভোকাল ট্র্যাক্টের খুঁটিনাটি উঠে এসেছে বিজ্ঞানীদের হাতে। তাঁর স্বরযন্ত্র বা ল্যারিংক্স কেমন ছিল, সেটার একটা প্লাস্টিক কপি তৈরি করা হয়েছে।
আধুনিক মানুষের তুলনায় তাঁর স্বরযন্ত্রটি অপেক্ষাকৃত ছোট। ফলে, তাঁর কন্ঠস্বর হাই পিচের ছিল বলে মনে করছেন গবেষকরা। প্রাচীন মিশরের লোকেদের উচ্চতাও আধুনিক মানুষের তুলনায় কম হত।
এই স্বরযন্ত্র ও ভোকাল ট্র্যাক্ট পরীক্ষা করেই তৈরি করা সম্ভব হয়েছে ওই মৃত ব্যক্তির কন্ঠস্বর। আপাতত শুধু একটা স্বর বের করা গিয়েছে। কিন্তু আগামী দু’বছরের মধ্যে একটা সম্পূর্ণ বাক্য তৈরি করাও সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।
বিজ্ঞানীদের আশা, এই গবেষণায় এক নতুন দিগন্ত খুলে গিয়েছে। আগামিদিনে কোনও ব্যক্তির কন্ঠস্বর তুলে আনা সম্ভব হবে। সফট টিস্যু প্রিজার্ভ করা গেলে, এই পদ্ধতি আরও সহজ হবে বলে মনে করা হচ্ছে। ইউনিভার্সিটি অফ ইয়র্কের অধ্যাপক জোয়ান ফ্লেচার বলেন, ‘অবশেষে এই গবেষণা সফল হয়েছে। এ যেন মৃত মানুষকে জীবন্ত করে তোলা হচ্ছে।’